বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের নতুন সভাপতি হয়েছেন আমিনুল ইসলাম। ১৬তম সভাপতি হিসেবে বিসিবির দায়িত্ব নিচ্ছেন জাতীয় দলের সাবেক এই অধিনায়ক। গতকাল রাতে ফারুক আহমেদের মনোনয়ন বাতিল করার পর আজ বিকেলে আমিনুলকে পরিচালক করে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। এরপর সন্ধ্যায় এক বোর্ড সভায় তাঁকে সভাপতি নির্বাচিত করেছেন পরিচালকরা।
নতুন সভাপতির দায়িত্ব নেওয়া আমিনুল জাতীয় দলের হয়ে এক যুগের বেশি সময় ক্রিকেট খেলেছেন। জাতীয় দলের জার্সি গায়ে ১৩ টেস্ট ও ৩৯ ওয়ানডেতে মাঠে নেমেছেন তিনি। বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিয়ানও আমিনুল। ২০০২ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় বলে দেওয়ার পর দেশে কোচিং শুরু করেছিলেন। পরে অস্ট্রেলিয়ায় পরিবার নিয়ে থিতু হন।
গত এক যুগের বেশি সময় আইসিসি ও এসিসির বিভিন্ন দায়িত্বে ছিলেন আমিনুল। বিসিবিতে আসার আগ পর্যন্ত আইসিসির এশিয়া অঞ্চলের ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এ ছাড়া আইসিসির হাইপারফরম্যান্স কার্যক্রম এবং ট্রেনিং এডুকেশনেরও প্রধান তিনি। আইসিসির ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার হিসেবে আগামী মাসে তাঁর চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে।
গত আগস্টে এনএসসি থেকে মনোনীত হয়ে বিসিবি পরিচালক হন ফারুক আহমেদ ও নাজমূল আবেদীন। তাঁদের মধ্যে ফারুককে সভাপতি মনোনীত করেন পরিচালকরা। ৯ মাসের মাথায় তাঁর মনোনয়ন বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ক্রীড়া পরিষদ।
বুধবার রাতে ফারুকের সঙ্গে বৈঠক করেন ক্রীড়া উপদেষ্ট আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। তখন বিসিবি সভাপতি পদ থেকে সরে দাঁড়াতে বলা হয় তাঁকে। তবে তিনি জানিয়ে দেন, পদত্যাগ করবেন না। এরপর সন্ধ্যায় বিসিবির ৮ পরিচালক এনএসসিতে চিঠি দিয়ে ফারুকের বিরুদ্ধে অনাস্থা জানান। রাতেই ফারুককে দেওয়া পরিচালক মনোনয়ন বাতিলের কথা জানায় এনএসসি, তাতে সভাপতির পদও হারান তিনি।
আগামী অক্টোবর পর্যন্ত বিসিবি সভাপতির দায়িত্বে থাকবেন নতুন সভাপতি আমিনুল।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বন্দীদের ফুল দিয়ে বরণ, চালু হলো ফেনীর দ্বিতীয় কারাগার
সংস্কার শেষে ফেনীর দ্বিতীয় কারাগার চালু হয়েছে। আজ শনিবার সকালে বন্দীদের ফুল দিয়ে বরণ করার মধ্য দিয়ে এ কারার যাত্রা শুরু হয়। এতে চট্টগ্রাম বিভাগের আটটি কারাগারের সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের ও ফেনী জজ আদালতে বিচারাধীন মামলার আসামিদের রাখা হবে।
কারা সূত্র জানায়, দেশের পুরোনো চারটি কারাগারের মধ্যে ফেনী-২ কারাগার একটি। শত বছরের পুরোনো এ কারাগার ভবন ছিল জরাজীর্ণ। এ কারণে ২০১৯ সালে ১২ জানুয়ারি এ কারাগার থেকে বন্দীদের ফেনীর শহরতলির রানীরহাট এলাকার নতুন কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। এরপর থেকে কারাগারটি অনেকটা ‘পরিত্যক্ত’ অবস্থায় ছিল।
নতুন করে চালু হওয়া কারাগারটির অবস্থান ফেনী শহরের মাস্টারপাড়ায়। এটি ১৯১৫ সালে সাবজেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এরপর ১৯৯৮ সালে জেলা এটিকে কারাগারে উন্নীত হয়। এ কারাগারের বর্তমান ধারণক্ষমতা ১৭২ জন। এর মধ্যে ১৭০ জন পুরুষ ও ২ জন নারী। কারাগার চালু করার জন্য গতকাল কুমিল্লা জেলা কারাগার থেকে ২৪ জন ও চট্টগ্রাম থেকে চারজন বন্দীকে আনা হয়েছিল। তাঁরা সবাই সশ্রম সাজাপ্রাপ্ত। এ কারাগারে তাঁরা রান্নার দায়িত্বে থাকবেন।
কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, ধাপে ধাপে সাজাপ্রাপ্ত ও বিচারাধীন বন্দীদের ফেনীর দ্বিতীয় কারাগারে আনা হবে। আপাতত এতে কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ২৬ জন, কুমিল্লা থেকে ৭৪ জন, নোয়াখালী থেকে ১৫ জন, লক্ষ্মীপুর থেকে ৪ জন এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ৩৩ জন বন্দী এখানে স্থানান্তর করা হবে। এতে সেল, রান্নাঘর, কিশোর ওয়ার্ড, মসজিদসহ প্রয়োজনীয় সুবিধা রয়েছে। এ কারাগার নিয়ে বর্তমানে দেশে কারার সংখ্যা ৭১।
জানতে চাইলে ফেনী-২–এর জেল সুপার মো. দিদারুল আলম বলেন, ‘রাষ্ট্র চায়, কারাগার শুধু শাস্তির জায়গা নয়, সংশোধনের কেন্দ্র হোক। এরই অংশ হিসেবে সংস্কার শেষে ফেনী কারাগার-২ চালু হয়েছে।’
কারাগারের ভারপ্রাপ্ত জেলার ফেরদৌস মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ কারাগারে স্থানান্তরিত বন্দীদের সব সুযোগ-সুবিধা ইতিমধ্যে নিশ্চিত করা হয়েছে। চিকিৎসক ও প্রশিক্ষিত নার্সও যোগদান করেছেন। বেশির ভাগ পদে কর্মচারীরাও কাজ শুরু করেছেন।’