জিয়াউর রহমান ঘটনার আগের দিন তাঁর প্রতিষ্ঠিত দল বিএনপির স্থানীয় নেতাদের বিরোধ মেটাতে চট্টগ্রাম গিয়েছিলেন মাত্র ৪৮ ঘণ্টার নোটিশে। চট্টগ্রামে দুটি উপদলে বিভক্ত বিএনপি নেতাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে ২৯ মে রাতে স্থানীয় সার্কিট হাউসে ঘুমিয়ে ছিলেন জিয়াউর রহমান। ভোররাতে সেখানেই তাঁকে হত্যা করা হয়।

৩০ মে ভোরে গোলাগুলির আওয়াজে ঘুম ভেঙে যায় চট্টগ্রামের তৎকালীন জেলা প্রশাসক (ডিসি) জিয়াউদ্দিন এম চৌধুরীর। ডিসির বাংলো থেকে সার্কিট হাউসের দূরত্ব মাইলখানেক হবে। সকালেই তিনি বাংলো সার্কিট হাউসে গিয়ে জিয়াউর রহমানের মৃতদেহের বীভৎস দৃশ্য দেখেছিলেন। সেই থেকে জেলা প্রশাসক হিসেবে ঘটনাপ্রবাহ কাছে থেকে দেখেছেন তিনি।

‘দুই জেনারেলের হত্যাকাণ্ড, ১৯৮১-র ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থান’ এই শিরোনামে একটি বই লিখেছেন জিয়াউদ্দিন এম চৌধুরী। তিনি লিখেছেন, গোলাগুলি থেমে যাওয়ার পর ভোরেই একজন সহকারী প্রটোকল অফিসার মোশতাক তাঁকে ফোন করে কিছু তথ্য দেন।

ওই সহকারী প্রটোকল অফিসারের বরাত দিয়ে বইয়ে জিয়াউদ্দিন এম চৌধুরী লিখেছেন, ‘ভোর চারটার দিকে সেনাবাহিনীর কয়েকটি গাড়ি গুলি করতে করতে সার্কিট হাউসে প্রবেশ করে। সে (সহকারী প্রটোকল অফিসার) জানে না পুলিশ বা প্রেসিডেন্টের গার্ড তাদের বাধা দিতে পেরেছিল কি না। তবে তারা গুলি করতে করতে সার্কিট হাউসে ঢুকে যায়। মোশতাক লাউঞ্জে বসে ছিল। সেনারা প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে সে পাশের ডাইনিং রুমের টেবিলের নিচে লুকিয়ে পড়ে। এরপর সে শুনতে পায় ভারী বুটের আওয়াজ। কয়েকজন সিঁড়ি বেয়ে ওপরে উঠে প্রেসিডেন্টের রুমের দিকে যায়। এরপর সে আরও গুলির আওয়াজ শুনতে পায়। কয়েক মিনিট পর ওপরের লোকগুলো নিচে চলে আসে আর তার কিছুক্ষণ পর শোনে গাড়ির আওয়াজ। সে বুঝল, যারা এসেছিল, তারা চলে গেছে। সে এত ভয় পেয়েছিল যে গাড়িগুলো চলে যাওয়ার পর সে পালিয়ে এসে গ্যারেজ থেকে আমাকে ফোন করেছে।  আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম, প্রেসিডেন্ট কী অবস্থায় আছেন, সে জানে কি না, উত্তরে সে জানাল, এ ব্যাপারে এখনো কিছুই জানে না সে।’

এরপর অল্প সময়ের মধ্যে চট্টগ্রামের তৎকালীন বিভাগীয় কমিশনার সাইফুদ্দিন ফোন করে জিয়াউদ্দিন এম চৌধুরীকে জানান যে, ‘প্রেসিডেন্ট জিয়া আততায়ীদের হাতে খুন হয়েছেন।’

ঘটনা সম্পর্কে এ সব তথ্য পাওয়ার পর পরই বিভাগীয় কমিশনারকে সঙ্গে নিয়ে সার্কিট হাউসে যান জিয়াউদ্দিন এম চৌধুরী। সেখানে পৌঁছে দেখেন সার্কিট হাউস প্রায় পরিত্যক্ত একটা ভবন। চারপাশে কোনো প্রহরা ছিল না, ছিল না কোনো পুলিশ, ছিল না সেনাবাহিনীর কোনো সদস্য।  সার্কিট হাউসের লনে দেখতে পান দাঁড়িয়ে আছেন তৎকালীন পুলিশ কমিশনার, ডিআইজি পুলিশ ও পুলিশের গোপন শাখার সহকারী কমিশনার।

জেলা প্রশাসক হিসেবে জিয়াউদ্দিন এম চৌধুরী সে সময় পুলিশের গোপন শাখার সহকারী কমিশনার আবদুস সাত্তারকে নিয়ে সার্কিট হাউসের ওপরতলায় যান পরিস্থিতি দেখতে। সেই পরিস্থিতিরও বর্ণনা দিয়েছেন তিনি তাঁর বইয়ে।

জিয়াউদ্দিন এম চৌধুরী। তিনি জিয়াউর রহমান হত্যাকাণ্ডের সময় চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ছিলেন.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র আওয় জ সহক র

এছাড়াও পড়ুন:

ঘাড়ের ব্যথা সারানোর ব্যায়াম

সকালে ঘুম থেকে উঠেই অনুভব করছেন, ঘাড়টা এক পাশে নাড়াতে কষ্ট হচ্ছে। কোনো পেশিতে একটা টান লেগে আছে, যার জন্য নাড়াতে গিয়ে শক্ত লাগছে। ঘাড় এপাশ-ওপাশ করতেও কষ্ট হচ্ছে। এমন হঠাৎ ঘাড়ব্যথা বা ঘাড়ে টান লেগে যাওয়ার মতো সমস্যায় অনেকেই ভোগেন।

হঠাৎ এমন সমস্যা দেখা দিলে ঘরোয়া চিকিৎসাপদ্ধতি হিসেবে প্রথমে গরম সেঁক দেওয়া যেতে পারে। সারা দিনে দুই বেলা বা তিন বেলা ১০ থেকে ১৫ মিনিট করে গরম সেঁক পদ্ধতি কাজে লাগাতে পারেন। চিকিৎসকের পরামর্শে কিছু ওষুধও সেবন করা যেতে পারে যেমন, পেশি শিথিলায়নের বা ব্যথানাশক, এটা সাময়িক সমাধান।

তবে যাঁরা প্রায়ই এমন সমস্যায় ভোগেন, তাঁরা নিয়মিত কয়েকটা ব্যায়াম করতে পারেন, যেগুলো এমন ব্যথা এড়াতে দারুণ কার্যকর। একজন ফিজিওথেরাপিস্টের পরামর্শ অনুযায়ী এমন কিছু ব্যায়ামের মাধ্যমে ভালো থাকা যায়। তবে খেয়াল রাখবেন, প্রচণ্ড ব্যথা থাকা অবস্থায় চিকিৎসকের পরামর্শ না নিয়ে ব্যায়াম করা যাবে না। ব্যথা একটু কমলে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে নিয়মিত কিছু ব্যায়াম করতে পারেন।

সহজ তিন ব্যায়াম

 

১  এই ব্যায়াম বসা বা দাঁড়ানো উভয় অবস্থায় করা যাবে। প্রথমে ঘাড় ও পিঠ সোজা রাখুন। এরপর থুতনি নামিয়ে আনুন বুকের কাছাকাছি। এ অবস্থায় ১৫ থেকে ৩০ সেকেন্ড থাকুন। এরপর ঘাড়ের পেশি শিথিল করে ধীরে ধীরে মাথা ওপরে তুলে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনুন। এবার থুতনি ওপরের দিকে তুলুন যতটা সম্ভব। এ অবস্থায় ১০ সেকেন্ড থাকুন। এরপর আবার শুরুর অবস্থায় ফিরিয়ে আনুন। এভাবে রোজ এক বেলা নির্দিষ্ট সময়ে ১০ বার ব্যায়ামটি করুন।

২  এই ব্যায়াম করতে হবে দাঁড়ানো অবস্থায়, পা দুটো সামান্য ফাঁক রেখে। হাত দুটি দুই পাশে ঝোলানো অবস্থায় রাখতে পারেন। প্রথমে ডান দিকে মাথা কাত করুন, কান দিয়ে কাঁধ ছুঁতে চেষ্টা করুন। ঘাড়ের পেশিতে টান অনুভব করা পর্যন্ত এই চেষ্টা চালিয়ে যান। তবে ঘাড় ওঠাবেন না। এ অবস্থায় ৫ থেকে ১০ সেকেন্ড থাকুন। এবার শুরুর অবস্থায় ফিরে আসুন। একইভাবে ব্যায়ামটি করুন বাঁ দিকেও। পুরো ব্যায়ামটি ৮ থেকে ১০ বার পর্যন্ত করতে পারেন, রোজ এক বেলা বা দুই বেলা। ব্যায়ামটি আরও কার্যকর করে তুলতে যখন যে পাশে ঘাড় কাত করবেন, সেই পাশের হাতটি তুলে আনতে পারেন মাথার ওপরে। আঙুল দিয়ে হালকা চাপ দিন মাথায়।

এই ব্যায়াম করতে পারেন বসা বা দাঁড়ানো অবস্থায়। প্রথমে ঘাড় ও পিঠ সোজা রাখুন। এবার ডান দিকে (নামাজে সালাম ফেরানোর মতো করে) ঘাড় ঘোরান, যতক্ষণ ঘাড়ের পেশিতে টান অনুভব করেন। এ অবস্থায় ১০ থেকে ২০ সেকেন্ড থাকুন। এরপর শুরুর অবস্থায় ফিরে যান। একইভাবে ব্যায়ামটি করুন বাঁ দিকে ঘাড় ঘুরিয়েও। পুরো ব্যায়ামটি ৮ থেকে ১০ বার বার পর্যন্ত করতে পারেন, রোজ এক বা দুবার।

মো. সাইদুর রহমান চেয়ারম্যান ও চিফ কনসালট্যান্ট, রিঅ্যাকটিভ ফিজিওথেরাপি সেন্টার, ঢাকা

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জবির দর্শন বিভাগে পদোন্নতি সভা আজ, নিষ্পত্তি হয়নি ৩ শিক্ষকের গবেষণা জালিয়াতির অভিযোগ
  • খুলনায় ছোট ভাইকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ বড় ভাইয়ের বিরুদ্ধে
  • জি এম কাদের ঢাকায় ফিরলে কর্মসূচি দেবে রংপুর জাপা, বৈষম্যবিরোধীদের বিক্ষোভ স্থগিত
  • আজও চিকিৎসাসেবা বন্ধ চক্ষুবিজ্ঞান হাসপাতালে, ভোগান্তিতে রোগীরা
  • ১৮ বছর পর শৈশবের ক্লাবে ফিরে বৃত্ত পূরণ দি মারিয়ার
  • সাঙ্কু পাঞ্জাকে শুটিংয়ে এনে মান্না বলেছিলেন, ‘ও একদিন মেইন ভিলেন হবে’
  • খাল থেকে ২২ দিন বয়সী নবজাতকের লাশ উদ্ধার, মাসহ আটক ৪
  • সাহসী দৃশ্যে অভিষেক, দাউদ ইব্রাহিমের সঙ্গে প্রেম, এরপর আড়ালে চলে যান এই অভিনেত্রী
  • ঘাড়ের ব্যথা সারানোর ব্যায়াম