ফ্ল্যাট কেনায় কালোটাকা সাদা করার সুযোগ অব্যাহত
Published: 2nd, June 2025 GMT
অ্যাপার্টমেন্ট বা ফ্ল্যাট কেনায় কালোটাকা সাদা করার সুযোগ অব্যাহত রাখলেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। পাশাপাশি ভবনের নির্মাণের এই সুযোগ দেওয়া হয়েছে। তবে আগের চেয়ে করের পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। এলাকাভেদে আয়তন অনুসারে নির্দিষ্ট পরিমাণ কর দিলেই টাকার উৎস সম্পর্কে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে বলে ধরে নেবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
আজ সোমবার অর্থ উপদেষ্টা ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করেন। সেখানে কালোটাকা সাদা করার সুযোগ অব্যাহত রাখার প্রস্তাব করেন।ঢাকার গুলশান, বনানী, বারিধারা, মতিঝিল, দিলকুশা এলাকার ২ হাজার বর্গফুটের অধিক প্লিন্থ আয়তন বিশিষ্ট ভবন বা অ্যাপার্টমেন্টের ক্ষেত্রে প্রতি বর্গফুটে ২ হাজার টাকা; ঢাকার গুলশান, বনানী, বারিধারা, মতিঝিল, দিলকুশা এলাকার অনধিক ২ হাজার বর্গফুটের অধিক প্লিন্থ আয়তন বিশিষ্ট ভবন বা অ্যাপার্টমেন্টের ক্ষেত্রে প্রতি বর্গফুটে ১৮০০ টাকা; ঢাকার ধানমন্ডি, ডিওএইচএস, মহাখালী, লালমাটিয়া, উত্তরা, বসুন্ধরা, ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট, সিদ্ধেশ্বরী, কারওয়ান বাজার, বনশ্রী, বিজয়নগর, ওয়ারী, সেগুনবাগিচা ও নিকুঞ্জ এবং চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ, খুলশী, আগ্রাবাদ ও নাসিরাবাদ এলাকায় ২ হাজার বর্গফুটের অধিক প্লিন্থ আয়তন বিশিষ্ট ভবন বা অ্যাপার্টমেন্টের ক্ষেত্রে প্রতি বর্গফুটে ১৮০০ টাকা; ঢাকার ধানমন্ডি, ডিওএইচএস, মহাখালী, লালমাটিয়া, উত্তরা, বসুন্ধরা, ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট, সিদ্ধেশ্বরী, কারওয়ান বাজার, বনশ্রী, বিজয়নগর, ওয়ারী, সেগুনবাগিচা ও নিকুঞ্জ এবং চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ, খুলশী, আগ্রাবাদ ও নাসিরাবাদ এলাকায় ২ হাজার বর্গফুটের অনধিক প্লিন্থ আয়তন বিশিষ্ট ভবন বা অ্যাপার্টমেন্টের ক্ষেত্রে প্রতি বর্গফুটে ১৫০০ টাকা; ওপরের উল্লেখিত এলাকা ব্যতীত সিটি করপোরেশন এলাকায় ১৫০০ বর্গফুটের অধিক প্লিন্থ আয়তন বিশিষ্ট ভবন বা অ্যাপার্টমেন্টের ক্ষেত্রে প্রতি বর্গফুটে ৭০০ টাকা; ওপরের উল্লেখিত এলাকা ব্যতীত সিটি করপোরেশন এলাকায় ১৫০০ বর্গফুটের অনধিক প্লিন্থ আয়তন বিশিষ্ট ভবন বা অ্যাপার্টমেন্টের ক্ষেত্রে প্রতি বর্গফুটে ৬০০ টাকা; জেলা সদরের পৌর এলাকায় ১৫০০ বর্গফুটের অধিক প্লিন্থ আয়তন বিশিষ্ট ভবন বা অ্যাপার্টমেন্টের ক্ষেত্রে প্রতি বর্গফুটে ৩০০ টাকা; জেলা সদরের পৌর এলাকায় ১৫০০ বর্গফুটের অনধিক প্লিন্থ আয়তন বিশিষ্ট ভবন বা অ্যাপার্টমেন্টের ক্ষেত্রে প্রতি বর্গফুটে ২৫০ টাকা; দেশের অন্য এলাকায় ১৫০০ বর্গফুটের অধিক প্লিন্থ আয়তন বিশিষ্ট ভবন বা অ্যাপার্টমেন্টের ক্ষেত্রে প্রতি বর্গফুটে ১৫০ টাকা; দেশের অন্য এলাকায় ১৫০০ বর্গফুটের অনধিক প্লিন্থ আয়তন বিশিষ্ট ভবন বা অ্যাপার্টমেন্টের ক্ষেত্রে প্রতি বর্গফুটে ১০০ টাকা।
এ ছাড়া একই সুবিধা পেতে ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে এলাকাভেদে প্রতি বর্গফুটে ৫০ থেকে ৯০০ টাকা কর নির্ধারণ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
অপ্রদর্শিত আয় বৈধ করার ক্ষেত্রে দুটি শর্তও দেওয়া হয়েছে। যদি আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনের অধীনে কোনো অপরাধমূলক কার্যক্রম হতে উদ্ভূত হয় এবং কোনো বৈধ উৎস হতে উদ্ভূত না হয়, তাহলে এই আইনের এই ধারার আওতায় কালোটাকা সাদা করা যাবে না।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে কালোটাকা সাদা করার ঢালাও সুযোগ বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা এসে গত বছরের ২ সেপ্টেম্বর বাতিল করে। কিন্তু এবারের বাজেটে অর্থ উপদেষ্টা নতুন করে কর হার বাড়িয়ে কালোটাকা সাদা করার সুযোগ দিলেন।
শেখ হাসিনার সরকারের দেওয়া চলতি বাজেট এক বছরের জন্য নগদ টাকার পাশাপাশি জমি, ফ্ল্যাট-প্লটসহ স্থাবর সম্পদ কেনার মাধ্যমে কালোটাকা সাদা করার সুযোগ দিয়েছিল। সর্বোচ্চ করহারের চেয়ে কম কর দিয়ে কালোটাকা সাদা করার এই সুবিধার বিরুদ্ধে শুরু থেকেই তীব্র সমালোচনা ছিল। এই সুযোগকে অনৈতিক ও সৎ করদাতাদের প্রতি অন্যায় হিসেবে বর্ণনা করেন বেশির ভাগ অর্থনীতিবিদ ও বিশ্লেষক।
অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার কালোটাকা সাদা করার এই বিধান বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু আয়কর আইনের তফসিলে রাখা কালোটাকা সাদা করার সুবিধা বহাল রাখা হলো।
প্রায় সব সরকারের আমলেই কালোটাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। বছরের পর বছর এই সুযোগ দেওয়া হলেও অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থসম্পদ বৈধ করায় কখনোই তেমন সাড়া মেলেনি।
এনবিআরের সূত্রগুলো বলছে, এ পর্যন্ত সব মিলিয়ে অপ্রদর্শিত প্রায় ৪৭ হাজার কোটি টাকা ঘোষণায় এসেছে অর্থাৎ সাদা হয়েছে। তবে বিএনপি সরকারের আমলে ১৯৯১-৯৬ মেয়াদে কালোটাকা সাদা করার সুযোগ ছিল না।
সর্বশেষ ২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশ থেকে পাচার করা টাকা ফেরত আনার সুযোগ দেওয়া হলেও কেউ এই সুযোগ নেননি। এর এক বছর পরেই আবারও কালোটাকা সাদা করার ঢালাও সুযোগ দেওয়া হয়েছিল।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: অ য প র টম ন ট র ক ষ ত র কর র স য গ এই স য গ সরক র র বছর র
এছাড়াও পড়ুন:
নিউইয়র্ক টাইমসের বিরুদ্ধে ১৫০০ কোটি ডলারের মানহানির মামলা করছেন ট্রাম্প
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী দৈনিক নিউইয়র্ক টাইমসের বিরুদ্ধে মামলা করছেন। বিষয়টি তিনি নিজেই নিশ্চিত করেছেন। বলেছেন, নিউইয়র্ক টাইমস পত্রিকার বিরুদ্ধে মানহানির অভিযোগে ১ হাজার ৫০০ কোটি ডলার ক্ষতিপূরণ চেয়ে তিনি মানহানির একটি মামলা করতে যাচ্ছেন।
গতকাল সোমবার রাতের দিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পোস্টে মার্কিন প্রেসিডেন্ট পত্রিকাটির বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে লিখেছেন, ‘কয়েক দশক ধরে আপনাদের প্রিয় প্রেসিডেন্ট (আমি!), আমার পরিবার, ব্যবসা, আমেরিকা ফার্স্ট মুভমেন্ট, মেক আমেরিকা গ্রেট অ্যাগেইন (এমএজিএ) এবং সামগ্রিকভাবে আমাদের জাতি সম্পর্কে মিথ্যাচার করে আসছে পত্রিকাটি।’
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটপ্রার্থী কমলা হ্যারিসকে নিউইয়র্ক টাইমসের সমর্থন দেওয়ার বিষয়টি বিশেষভাবে উল্লেখ করেন। তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখেন, পত্রিকাটি কট্টর বামপন্থী ডেমোক্রেটিক দলের একটি ‘ভার্চুয়াল মুখপত্র’-এ পরিণত হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, মামলাটি ফ্লোরিডায় করা হচ্ছে। তবে এ বিষয়ে আর কোনো বিস্তারিত তথ্য দেননি তিনি।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আদালতের নথি থেকে ট্রাম্পের এই মামলা করার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প এর আগে এবিসি নিউজ এবং উপস্থাপক জর্জ স্টেফানোপোলোসের বিরুদ্ধে করা মামলার উদাহরণ টানেন। এ ছাড়া কমলা হ্যারিসের সঙ্গে ‘৬০ মিনিটস’ (সিক্সটি মিনিটস) অনুষ্ঠানের সাক্ষাৎকারের জন্য প্যারামাউন্টের বিরুদ্ধে করা মামলার কথাও উল্লেখ করেন।
ওই দুটি মামলা যথাক্রমে দেড় কোটি ডলার ও ১ কোটি ৬০ লাখ ডলারে নিষ্পত্তি হয়েছিল।
এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে নিউইয়র্ক টাইমসের কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানানো হলেও তাৎক্ষণিকভাবে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। কারণ, অনুরোধটি তাদের স্বাভাবিক কর্মঘণ্টার বাইরে করা হয়েছিল।