গাজীপুরের শ্রীপুরে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগকারী সাত শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে আজ সোমবার দুপুরে এই তথ্য জানা গেছে।

১৫ মে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (পলিসি অ্যন্ড অপারেশনস) মাহফুজা খাতুন স্বাক্ষরিত এক চিঠির মাধ্যমে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়। তবে বিষয়টি জানাজানি হয় আজ সোমবার। নির্দেশনায় সাত শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থার নির্দেশনা দেওয়া হলেও এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

শাস্তির মুখে পড়তে যাওয়া শিক্ষকেরা হলেন মূলাইদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো.

লুৎফর রহমান (ফরহাদ), মাওনা ১ নম্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জহিরুল হক, টেপির বাড়ি দেওচালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. আনিসুর রহমান, ধনুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আবু কাইয়ুম, বেলতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আবুল কালাম ফকির, সিঙ্গারদীঘি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. আনোয়ার হোসেন ও পূর্ব নিজ মাওনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. জসিম উদ্দিন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০২২ সালের জুনে তৎকালীন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নূর মোহাম্মদ ও সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা সিকদার মো. হারুন অর রশিদ ও কয়েকজন প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয়ে আর্থিক অনিয়মসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ দেন সহকারী শিক্ষক লুৎফর রহমান ফরহাদ। অপর দিকে লুৎফর রহমানের বিরুদ্ধে ১৩৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সম্মিলিতভাবে অভিযোগ দিয়েছিলেন। তাতে বদলির বিধি অমান্যের অভিযোগ আনা হয়। এ ছাড়া সরকারি নির্দেশনা না থাকলেও নিজ খরচে শ্রেণিকক্ষে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ছবি ও গাছের চারা বিতরণের জন্য লুৎফর সব প্রধান শিক্ষককে চাপ দেন। সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করলে জামায়াত-শিবির আখ্যা দেওয়ার হুমকি দেন।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে পাঠানো চিঠি থেকে জানা যায়, শ্রীপুর উপজেলার সাবেক প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নূর মোহাম্মদ ও একই উপজেলার সাবেক সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সিকদার মো. হারুন অর রশিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন ওই উপজেলার বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাতজন সহকারী শিক্ষক। অভিযোগগুলোর কোনোটির সত্যতা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়নি। পরে তদন্ত কর্মকর্তার মতামত এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমোদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সিদ্ধান্ত নেয় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।

এ প্রসঙ্গে গাজীপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মাসুদ ভুঁইয়া মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা নির্দেশনা পেয়েছি। ওই সাত শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কর মকর ত র র রহম ন ব যবস থ র সহক র ল ৎফর সরক র উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

মুজিবনগর সরকারের মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতি বাতিলের খবর ‘মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর’

মুজিবনগর সরকারের রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান, অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদসহ শীর্ষ নেতাদের মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতি বাতিলের যে খবর কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে, তা ‘সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, মিথ্যা এবং বিভ্রান্তিকর’ বলে জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।

বুধবার (৪ জুন) মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম এ বিষয়ে বলেছেন, “মুজিবনগর সরকারে যারা ছিলেন, তারাও মুক্তিযোদ্ধা। যারা সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ করেছেন, যারা তা পরিচালনা করেছেন, সবাই মুক্তিযোদ্ধা। তবে, সরকারের অধীন কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে চিহ্নিত হন।”

তিনি জানান, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) অধ্যাদেশ অনুযায়ী, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কর্মীসহ বিদেশে কর্মরত কূটনীতিকরাও ‘সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা’ হিসেবে স্বীকৃতি পান।

আরো পড়ুন:

চাঁদপুরে মুক্তিযোদ্ধাকে মৃত দেখিয়ে ভাতা নিচ্ছেন তার স্ত্রী

কুমিল্লার সেই মুক্তিযোদ্ধা কানুর বাড়িতে গভীর রাতে হামলা

ফারুক-ই-আজম বলেছেন, “সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা মানে তাদের সম্মান বা মর্যাদা ক্ষুণ্ন করা হয়নি। মুক্তিযোদ্ধা ও সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা—দুয়েরই মর্যাদা, সম্মান এবং সুযোগ-সুবিধা সমান থাকবে।”

তিনি উল্লেখ করেন, ১৯৭২ সালের মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞা অনুযায়ীই বর্তমানে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হয়েছে। পরে ২০১৮ ও ২০২২ সালে এই সংজ্ঞায় কিছু পরিবর্তন আনা হয়, যা আইনি কাঠামোর মধ্যে থেকেই করা হয়েছে।

এ নিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত না হওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।

ঢাকা/হাসান/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ