ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে এবার লিচুর ভালো ফলন হয়েছে। লিচুর বেচাকেনার ধরনেও এসেছে ভিন্নতা। ক্রেতারা বাজারের পরিবর্তে পরিবার–পরিজন নিয়ে লিচু কিনতে বাগানে যাচ্ছেন। এতে ভালো দাম পেয়ে খুশি চাষি ও ব্যবসায়ীরা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, বিজয়নগরে ৪৪০ হেক্টর, আখাউড়ায় ৮০ হেক্টর ও কসবায় ৩৫ হেক্টর জমিতে লিচুর ফলন হয়েছে। জেলায় প্রায় ১ হাজার ৭০০ লিচুবাগান আছে। ২০০২ সাল থেকে বিজয়নগরে বাণিজ্যিকভাবে লিচুর আবাদ শুরু হয়। কম পরিশ্রমে বেশি লাভ হওয়ায় বিজয়নগরের কিছু ধানি জমিতেও লিচুবাগান করেছেন চাষিরা। উপজেলার বিভিন্ন বাগানে বোম্বে, চায়না–টু ও চায়না–থ্রি, পাটনাই জাতের লিচু চাষ করা হয়। তবে তিন বছর ধরে বেদানা জাতের লিচুর চাষ হচ্ছে।

বিজয়নগর উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এ বছর উপজেলায় ৪৪০ হেক্টর জমির মধ্যে ৮১ দশমিক ৭১ হেক্টর জমিতে দেশীয় পাটনাই, ৩২৩ দশমিক ৭ হেক্টরে বোম্বে লিচু, ১৮ দশমিক ৮৬ হেক্টরে চায়না–থ্রি,৭ দশমিক ৩৩ হেক্টরে চায়না–টু ও ৮ দশমিক ৩৮ হেক্টরে বেদানা লিচু চাষ হয়েছে। প্রতি হেক্টরে লিচুগাছ আছে ৯০টি। প্রতি গাছে গড়ে আড়াই হাজার লিচুর ফলন হয়। উপজেলায় প্রায় দেড় হাজার লিচুর বাগান আছে। এসব বাগানে এ বছর ১ হাজার ৭০০ টন লিচুর ফলন হয়েছে।

এত বছর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অন্যান্য উপজেলা, সিলেট, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, কিশোরগঞ্জ, নরসিংদী ও কুমিল্লার ব্যবসায়ীরা বিজয়নগরের আউলিয়া বাজারসহ বিভিন্ন বাজার ও বাগান থেকে লিচু কিনে নিয়ে যেতেন। কিন্তু এ বছর লিচু বেচাকেনায় পরিবর্তন দেখা গেছে। মানুষ প্রতিদিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত মাইক্রোবাস, প্রাইভেট কার, সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলে করে লিচুর বাগানে যাচ্ছেন। বাগান থেকেই তাঁরা সরাসরি লিচু কিনছেন।

সম্প্রতি উপজেলার বিষ্ণুপুর, পাহাড়পুর, সিঙ্গারবিলসহ বিভিন্ন এলাকার বাগানে দর্শনার্থীদের ভিড়। বিষ্ণুপর গ্রামের মাসুদুল হাসানের বাগানের ভেতরে ১০০ বোম্বে লিচুর খুচরা দাম ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা। আর বাগানের বাইরে স্থানীয়দের ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকায় ১০০ লিচু বিক্রি করতে দেখা গেছে।

মাসুদুল হাসান বলেন, দীর্ঘ ২০ বছর সৌদি আরবে প্রবাসজীবন শেষে ২০১০ সালে দেশে ফিরে দুই বিঘা জমিতে লিচু চাষ শুরু করেন। সাফল্য পান। এবার ১০ থেকে ১২ লাখ টাকার লিচু বিক্রির আশা করছেন তিনি।

বাগানে এসে ঘুরে দেখে লিচু কেনার ধারণাটি বিজয়নগরে বেশ জনপ্রিয় হয়েছে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব জয়নগর দশম ক উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

ভারতে যাওয়ার সময় আন্দোলনে হত্যা মামলার আসামি ইমিগ্রেশনে গ্রেপ্তার

চুয়াডাঙ্গার দর্শনা-জয়নগর চেকপোস্ট দিয়ে ভারতে যাওয়ার সময় হত্যা মামলার এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে ইমিগ্রেশন পুলিশ। কুমিল্লার কোতোয়ালি থানায় করা এক মামলায় আজ সোমবার সকাল ৯টার দিকে তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পরে তাঁকে দর্শনা থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।

ওই ব্যক্তির নাম শেখ তাইসুখ ইসলাম (২৮)। তিনি কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার মনোহরপুর এলাকার বাসিন্দা। গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় মামুন আহমেদ (১৮) নামের এক হোটেল কর্মচারী নিহত হওয়ার ঘটনায় করা মামলায় তিনি এজাহারভুক্ত আসামি।

দর্শনা-জয়নগর ইমিগ্রেশন পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) তারেক মাহমুদ বলেন, আজ সকালে তাইসুখ ইসলাম নামের বাংলাদেশি পাসপোর্টধারী ওই যাত্রী ভারতে যাওয়ার জন্য চেকপোস্টে যান। তাঁর পাসপোর্টসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যাচাইকালে দেখা যায়, তাঁর বিরুদ্ধে কুমিল্লার কোতোয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা আছে। এরপর তাঁকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আপাতত দর্শনা থানায় সোপর্দ করা হয়।
দর্শনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহম্মদ শহীদ তিতুমীর বলেন, বিষয়টি কুমিল্লার কোতোয়ালি থানাকে অবহিত করা হয়েছে। তাঁকে সেখানে নিতে কুমিল্লা থেকে পুলিশের একটি দল দর্শনার উদ্দেশে রওনা দিয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ৫ আগস্ট কুমিল্লার ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলার সময় মামুন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। ঘটনাটির ১০ মাস পর ২৭ মে তাঁর ভাই রানু মিয়া বাদী হয়ে কুমিল্লা কোতোয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় কুমিল্লা সদর আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আ ক ম বাহাউদ্দীন বাহার এবং তাঁর মেয়ে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র তাহসিন বাহারসহ ১৪৭ জনের নাম উল্লেখ করে এবং আরও ১০০ থেকে ১৫০ জনকে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়। শেখ তাইসুখ ইসলাম এই মামলার ৯৭ নম্বর আসামি। মামলায় তাঁর রাজনৈতিক পরিচয় না থাকলেও অস্ত্রধারী হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

এসব তথ্য নিশ্চিত করে কুমিল্লা কোতোয়ালি থানার ওসি মহিনুল ইসলাম জানান, সম্প্রতি সরকারি গেজেটে শহীদ তালিকায় মামুন আহমেদের নাম আসায় পরিবারের পক্ষে তাঁর ভাই রানু মিয়া মামলাটি করেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভারতে যাওয়ার সময় আন্দোলনে হত্যা মামলার আসামি ইমিগ্রেশনে গ্রেপ্তার