নোয়াখালীর হাতিয়ার মেঘনা নদীতে ট্রলারডুবিতে মারা যাওয়া পুলিশ কনস্টেবল সাইফুল ইসলামের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। সোমবার (২ জুন) মধ্যরাতে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চরশাহী ইউনিয়নের গোপাল বাড়িতে জানাজা শেষে তাকে দাদা নুরুজ্জামানের কবরের পাশে দাফন করা হয়।

মঙ্গলবার (৩ জুন) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নোয়াখালীর পুলিশ সুপার (এসপি) মো.

আব্দুল্লাহ আল ফারুক।

পুলিশ জানায়, মারা যাওয়া সাইফুল নোয়াখালী পুলিশ লাইন্সে কর্মরত ছিলেন। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় পুলিশ লাইন্স মসজিদ প্রাঙ্গণে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে ফ্রিজিং ভ্যানে তার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় গ্রামের বাড়িতে। জানাজা শেষে তাকে দাফন করা হয় দাদা নুরুজ্জামানের কবরের পাশে।

আরো পড়ুন:

শ্রীপুরে শ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষের ঘটনায় আটক ২৩

টেকনাফের পাহাড়ি সড়ক থেকে ৫ জনকে অপহরণ

মারা যাওয়া সাইফুল চরশাহী গ্রামের সিরাজুল ইসলাম ও রহিমা বেগম দম্পতির সন্তান। তিন বছর ধরে নোয়াখালীর বিভিন্ন থানায় দায়িত্ব পালন করছিলেন তিনি।

সাইফুলের বাবা সিরাজুল ইসলাম বলেন, “পৃথিবীর সবচেয়ে ভারী বস্তু সন্তানের লাশ। সেই লাশ আমাকে কাঁধে নিতে হয়েছে। সাইফুলকে হারিয়ে আমদের সব শেষ। এখন কবর তার চিরস্থায়ী ঠিকানা।”

নিহত সহকর্মীর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সাইফুলের কফিনে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন এসপি আব্দুল্লাহ আল ফারুক। তিনি বলেন, “সাইফুল ছিলেন কর্তব্যপরায়ণ, সৎ ও সাহসী। তার আত্মত্যাগ আমাদের পুলিশ বাহিনীর জন্য গর্বের ও চিরস্মরণীয় অধ্যায় হয়ে থাকবে। আমরা তার পরিবারের পাশে আছি এবং থাকব।”

গত ৩১ মে (শুক্রবার) দুপুর ৩টার দিকে ভাসানচর থেকে হাতিয়ার করিমবাজার ঘাটে যাওয়ার পথে যাত্রীবাহী একটি ট্রলার ডুবচরে আটকে গিয়ে উল্টে যায়। ট্রলারে থাকা ৩৯ জনের মধ্যে ৩৫ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। ঘটনাস্থলে মারা যান গিয়াস উদ্দিন ও রোহিঙ্গা নারী হাসিনা খাতুন। দুই দিন নিখোঁজ থাকার পর সোমবার বিকেলে ভেসে ওঠে কনস্টেবল সাইফুলের মরদেহ নোয়াখালীর চানন্দী ইউনিয়নের দরবেশ বাজার সংলগ্ন এলাকায়। ওই ঘটনায় এখনো নিখোঁজ এক শিশু।

ঢাকা/জাহাঙ্গীর/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

খুলনার ফুটপাত পথচারীদের নয়, হকারদের দখলে

খুলনা নগরের প্রধান সড়ক ও ফুটপাত এখন পথচারীদের নয়, হকারদের দখলে। ডাকবাংলা থেকে বড়বাজার পর্যন্ত নগরের প্রধান ব্যবসাকেন্দ্রজুড়ে ফুটপাতের ওপর চলছে অস্থায়ী দোকানপাট, পণ্যের পসরা আর ক্রেতাদের ভিড়। ফলে পথচারীদের হাঁটার জায়গা নেই, স্থায়ী দোকানের ব্যবসায়ীরা হারাচ্ছেন ক্রেতা, হচ্ছেন ক্ষতিগ্রস্ত।

ডাকবাংলা এলাকা খুলনা নগরের বাণিজ্যিক প্রাণকেন্দ্র। এখানে ডাকবাংলা সুপারমার্কেট, রেলওয়ে মার্কেট, খুলনা বিপণিবিতান, দরবেশ চেম্বার, শহীদ সোহরাওয়ার্দী বিপণিবিতান, কাজী নজরুল ইসলাম মার্কেট, মশিউর রহমান মার্কেটসহ বড় শপিং কমপ্লেক্স আছে। মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষের অন্যতম বাজার এটি। কিন্তু এখন এর পুরো এলাকার ফুটপাত দখল হয়ে গেছে ভাসমান ব্যবসায়ীদের হাতে।

হকারদের ভিড়ে দোকান দেখা যায় না

সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা গেছে, ডাকবাংলা মোড় থেকে ক্লে রোড পর্যন্ত ফুটপাতে মালামাল সাজিয়ে বসেছেন হকাররা। স্থায়ী দোকানদাররাও নিজেদের দোকানের সামনের জায়গা দখল করে ব্যবসা করছেন। ভ্যানে করে জামাকাপড়, ফল, গৃহস্থালির পণ্য বিক্রি হচ্ছে ফুটপাতের পর এখন রাস্তার অর্ধেকজুড়ে। পুরোনো যশোর রোড, সদর থানা মোড়, কেডি ঘোষ রোড থেকে হেলাতলা পর্যন্ত একই চিত্র। খালিশপুর চিত্রালি বাজার ও দৌলতপুর বাজারেও ফুটপাতের ওপর খাট বসিয়ে চালা তুলে ব্যবসা চলছে। ফলে পথচারীদের চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে প্রতিদিন।

খালিশপুর চিত্রালি বাজারের দোকান ব্যবস্থাপক মো. আসাদ বলেন, ‘হকারদের কারণে বাইরে থেকে আমাদের দোকান দেখা যায় না। তাদের ব্যবসা জমজমাট, কিন্তু আমাদের বিক্রি কমে গেছে। সিসিটিভি ক্যামেরাগুলোও ঢেকে গেছে অস্থায়ী দোকানে।’

খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) সূত্রে জানা গেছে, নগরের আয়তন ৪৬ বর্গকিলোমিটার, পাকা সড়ক ৬৪১ কিলোমিটার। ফুটপাতের সঠিক হিসাব না থাকলেও অন্তত ২৫ কিলোমিটার ফুটপাত হকারদের দখলে। চলতি বছরে ১২ দিনের মতো উচ্ছেদ অভিযান চালানো হলেও কয়েক দিনের মধ্যেই ফের দখল হয়ে যায়।

কেসিসির সম্পত্তিবিষয়ক কর্মকর্তা গাজী সালাউদ্দীন বলেন, ‘আমরা নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছি। কিন্তু নাগরিক সমাজ, ব্যবসায়ী নেতা ও প্রশাসন সবাই একসঙ্গে উদ্যোগ না নিলে এটি বন্ধ হবে না। অনেকে নিজের দোকানের সামনের ফুটপাতও ভাড়া দেন হকারদের। সহযোগিতা না পেলে একা আমাদের কিছু করার নেই।’

পথচারীদের চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সম্প্রতি তোলা

সম্পর্কিত নিবন্ধ