প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ‘কোনো জবাবদিহি করেন না’ বলে মন্তব্য করেছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। তিনি বলেন, একটি মাত্র রাজনৈতিক দল নির্বাচন চায়, এ বক্তব্যের বিষয়ে উনি কোনো ব্যাখ্যা দেননি এবং মুহাম্মদ ইউনূস কোনো জবাবদিহি করেন না। এমনকি সামনাসামনি প্রশ্ন করলে অধিকাংশ ক্ষেত্রে তিনি প্রশ্নের জবাব না দিয়ে মিষ্টি একটা হাসি দিয়ে বিদায় করে দেন অথবা কোনো কথাই বলেন না।

মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে গণঅধিকার পরিষদ আয়োজিত ‘গণহত্যার বিচার, রাষ্ট্র সংস্কার ও নির্বাচনের রোডম্যাপ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন মাহমুদুর রহমান মান্না।

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি বলেন, ‘ডিসেম্বরের আগে একটি মাত্র দল নির্বাচন চায়। এমন একটা ভুল করা কি প্রফেসর ইউনূসের জন্য সংগত? এটা কি মানায় তার কাছে? মানে উনি ভুল করে বলেছেন এমন কি হতে পারে? উনি জানতেনই না যে ১টারও বেশি প্রায় ২৯টা দল ইতিমধ্যে ডিসেম্বরের মধ্যে ভোট চেয়েছে। এই ভুল তো তাঁর হওয়ার কথা নয়। উনি কোনো ব্যাখ্যা দেননি।’

ড.

মুহাম্মদ ইউনূস চার-পাঁচবার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন উল্লেখ করে মাহমুদুর রহমান বলেন, বৈঠকের শুরুতে তিনি বলে থাকেন রাজনীতিবিদদের সঙ্গে কথা বললে তিনি আশাবাদী হয়ে ওঠেন। কিন্তু সেখানে রাষ্ট্র সংস্কার, গণতন্ত্র কিংবা নির্বাচনের বিষয়ে কোনো কথা বলেননি।

জামায়াতে ইসলামীর মতো দল জুন নয়, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের কথা বলেছে বলে উল্লেখ করেন মাহমুদুর রহমান মান্না। তিনি বলেন, ‘তাহলে মেজর কোন রাজনৈতিক দল জুনে নির্বাচনের কথা বলছে না। তাহলে জুনের মতো একটা প্রতিকূল আবহাওয়ার মধ্যে তারা ভোটের কথা বলছে কেন?’

মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে যেখানে রাজনৈতিক উত্তেজনা চরমে, সেখানে এ ধরনের অস্পষ্টতা হতাশাজনক। বিদেশি পরামর্শদাতা বলেছেন, হিউম্যান করিডর নিয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে, আবার নিরাপত্তা কর্মকর্তারা বলছেন, এমন কোনো আলোচনা হয়নি। এতে বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে।’

অন্তর্বর্তী সরকারকে সতর্ক করে ডাকসুর সাবেক ভিপি বলেন, ‘রাজনীতি করতে হলে বুঝে করতে হয়। শক্তি থাকলেই হয় না। ভুল নীতির ওপর দেশ পরিচালনা সম্ভব নয়।’ যারা ক্ষমতায় আছেন, তারা যেন দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেন—সেই প্রত্যাশা জানান তিনি।

প্রতিবেশী রাষ্ট্রের দিক থেকে একটি বড় হুমকি রয়েছে মন্তব্য করে মান্না বলেন, ‘প্রতিবেশী একটি দেশ পতিত স্বৈরাচারকে আশ্রয় দিচ্ছে, মদদ দিচ্ছে এবং তাদের সামনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য সব রকম সহায়তা করছে। এতে যেকোনো সময় সীমান্তে ছোট ঘটনা থেকে বড় যুদ্ধের ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।’ এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘এই অবস্থায় ভারত যদি আবার বাংলাদেশকে করায়ত্ত করার চেষ্টা করে, আমরা জানি না তার পথ কী হতে পারে। অতীতে যেমন ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সময় পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশকে টার্গেট করা হয়েছিল, আজও একই রকম পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে।’

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হকের সভাপতিত্বে এবং দলের সহসভাপতি ফারুক হাসানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ, বিজেপির চেয়ারম্যান আন্দালিভ রহমান পার্থ, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ, এলডিপির মহাসচিব রেদওয়ান আহমেদ, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সম্পাদক ফওজুল হাকিম ও গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র জন ত ক ইউন স

এছাড়াও পড়ুন:

হাসপাতাল ছেড়ে বাসায় গেলেন নুর

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন।

সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে তিনি হাসপাতাল ছাড়েন।

আরো পড়ুন:

নুরের শর্ট টাইম মেমোরি লস হয়নি: ঢামেক পরিচালক

গণঅধিকারের সমাবেশে বিভিন্ন দলের নেতা: জাতীয় পার্টিকে দ্রুত নিষিদ্ধ কর‌তে হবে

ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বিষয়টি জানিয়ে বলেন, “নুরুল হক নুরকে হাসপাতালের ভিআইপি কেবিন-১ থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। পরে বিকেল পোনে ৫টার দিকে অ্যাম্বুলেন্সে করে তিনি নিজ বাসার উদ্দেশ্যে রওনা হন।”

এর আগে গত ২৯ আগস্ট রাতে বিজয়নগরে জাতীয় পার্টির (জাপা) নেতাকর্মীদের সঙ্গে গণঅধিকার পরিষদের কর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওই দিন রাত সোয়া ৯টার দিকে সংঘর্ষ হয়, এতে গণঅধিকার পরিষদের নেতা নুরুল হক নুর, সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খানসহ অন্তত ৫০ জন আহত হন।

নুরুল হক নুরকে প্রথমে রাজধানীর ইসলামিয়া হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে চিকিৎসকদের পরামর্শে রাত ১১টার দিকে ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই তিনি প্রায় ১৭ দিন চিকিৎসাধীন ছিলেন।

ঢাকা/এসবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • হাসপাতাল ছেড়ে বাসায় গেলেন নুর