এবারও চামড়া নিয়ে হতাশা, লোকসানের শঙ্কায় ব্যবসায়ীরা
Published: 8th, June 2025 GMT
কোরবানির পশুর চামড়ার দাম নিয়ে এবারও হতাশা দেখা দিয়েছে। সরকার নির্ধারিত দামের চেয়েও কমে বিকোচ্ছে গরু ও ছাগলের চামড়া। দাম কম থাকায় লোকসানের আশঙ্কা করছেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা।
কোরবানির গরুর লবণযুক্ত চামড়ার প্রতি বর্গফুটের দাম গতবারের চেয়ে এবার ৫ টাকা বাড়িয়ে ৬০-৬৫ টাকা নির্ধারণ করেছিল সরকার। তবে তার প্রভাব পড়েনি বাস্তবে। কোথাও কোথাও আগের বারের মতো এবারও কম দামে গরুর চামড়া বিক্রি করতে হয়েছে বলে অভিযোগ ব্যবসায়ীদের। কেউ কেউ বলছেন, চামড়া বিক্রি হয়েছে গতবারের মতোই ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে বর্গফুটের হিসাবে চামড়ার দাম আরও কম পড়েছে।
গত ২৬ মে কোরবানি পশুর চামড়ার এই দর নির্ধারণ করে দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এতে ঢাকায় গরুর প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয় ৬০-৬৫ টাকা, যা গত বছর ছিল ৫৫-৬০ টাকা। ঢাকার বাইরের গরুর প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৫৫-৬০ টাকা, যা গত বছর ছিল ৫০-৫৫ টাকা।
এছাড়া ঢাকায় কাঁচা চামড়ার সর্বনিম্ন দাম ১ হাজার ৩৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। আর ঢাকার বাইরে সর্বনিম্ন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার ১৫০ টাকা। এ ছাড়া খাসির লবণযুক্ত চামড়া প্রতি বর্গফুট ২২-২৭ টাকা এবং বকরির চামড়া ২০-২২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
তবে এ ব্যাপারে ট্যানারি পরিচালক ও এজেন্টরা জানান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় লবণ দেওয়া প্রস্তুতকৃত চামড়ার দাম নির্ধারণ করেছে। অনেক ক্ষেত্রে ট্যানারি থেকে কাঁচা চামড়া কেনায় দাম কম পড়েছে।
তবে ৭০০ থেকে ৯০০ টাকায় সব চামড়া কেনা হয়েছে; এমন তথ্য ভুল দাবি করেছেন তারা। অনেক ভালো মানের চামড়া এক হাজার ২০০ থেকে এক হাজার ৫০০ টাকায়ও কেনা হয়েছে বলে জানান ট্যানারি সংশ্লিষ্টরা।
সরেজমিনে রাজধানীর চামড়ার বাজারগুলো ঘুরে জানা গেছে, সরকার নির্ধারিত দরে চামড়া বিক্রি হচ্ছে না। গত বছরের কাছাকাছি দরে গরুর চামড়া বিক্রি হয়েছে। কুরবানিদাতাদের থেকে তারা সর্বোচ্চ ৫০০ থেকে ৭৫০ টাকায় গরুর চামড়া কিনেছেন। ট্যানারি মালিকদের কাছে বিক্রি করেছেন ৬০০ থেকে ৯০০ টাকায়। আর ছাগলের চামড়া কেনায় ব্যবসায়ীদের কোনো আগ্রহ নেই বলেই দেখা গেছে।
এবারের ঈদে সব মিলিয়ে ৮০ থেকে ৮৫ লাখ চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ট্যানারি মালিকরা। যার সিংহভাগ সংগ্রহ হয়েছে ঈদের প্রথম দিনেই। ঈদের দিন কাঁচা চামড়া আসার এই হারও ছিল সন্তোষজনক। যদিও গতবারের চেয়ে প্রতি পিস চামড়া কিছুটা বেশি দরে কিনছেন বলে দাবি করেন ব্যবসায়ীরা। তাদের অভিযোগ, চামড়া বিক্রি করে ন্যায্যমূল্য মেলেনি। গতবারের চেয়েও দাম কম।
সাধারণত বড় আকারের গরুর চামড়া ৩১-৪০ বর্গফুট, মাঝারি আকারের গরুর চামড়া ২১-৩০ এবং ছোট আকারের গরুর চামড়া ১৬-২০ বর্গফুটের হয়। নির্ধারিত দাম অনুযায়ী, ঢাকায় মাঝারি আকারের গরুর ২৫ বর্গফুটের একটি লবণযুক্ত চামড়ার দাম হওয়ার কথা ১ হাজার ৫০০ থেকে ১ হাজার ৬২৫ টাকা।
পুরান ঢাকার লালবাগের পোস্তার আড়তগুলো কাঁচা চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণের অন্যতম বড় জায়গা। সেখানে শনিবার বিকেলে বড় ও মাঝারি আকারের গরুর কাঁচা চামড়া সর্বোচ্চ ৭০০-৯০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। মোহাম্মদপুর, সায়েন্স ল্যাব ও হাজারীবাগ এলাকায় একই দরে বিক্রি হতে দেখা যায়। গত বছরও প্রায় একই রকম দাম ছিল।
শনিবার বিকেল থেকে সরেজমিন পোস্তা এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, রাজধানীসহ আশপাশের এলাকা থেকে শনিবার দুপুরের পর পোস্তায় কাঁচা চামড়া আসতে শুরু করে। মৌসুমি ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি মাদ্রাসা ও এতিমখানার প্রতিনিধিরা ট্রাক, ভ্যান ও রিকশায় করে কাঁচা চামড়া নিয়ে আসেন। আড়তদারেরা সেই চামড়া দরদাম করে কেনেন। কেনার পর আড়তে সেই চামড়ায় লবণ দিয়ে সংরক্ষণের কাজটি করেন শ্রমিকরা।
পোস্তায় শহীদুল ইসলাম নামের একজন ব্যবসায়ী জানান, বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত শতাধিক চামড়া কিনেছেন। এবার ৬০০-৯০০ টাকায় চামড়া কিনছেন। উত্তরার চামড়া ব্যবসায়ী হেফাজ উল্লাহ বলেন, কুরবানিদাতাদের থেকে ৭৫০ টাকায় চামড়া সংগ্রহ করে রীতিমতো বিপদে পড়তে হয়েছে। এই এলাকায় ভালো মানের চামড়ার দাম উঠেছে সর্বোচ্চ ৮০০ থেকে ৮২০ টাকা। এর ওপরে কোনোভাবেই চামড়া বিক্রি করা যায়নি।
খিলক্ষেতের চামড়া ব্যবসায়ী মিজানুর বলেন, ‘আগে জানলে এত দাম দিয়ে চামড়া কিনতাম না। প্রতিবারই ট্যানারি মালিকরা চামড়ার দাম দিতে অনাগ্রহ দেখায়। এতে আমাদের মধ্যেও দাম দিয়ে চামড়া কেনার প্রবণতা দিন দিন কমে যাচ্ছে।’
সুমন অ্যান্ড সন্সের স্বত্বাধিকারী মো.
ঢাকার কলাবাগান এলাকা থেকে গরুর ১৩ পিস কাঁচা চামড়া গতকাল বিকেলে বিক্রির জন্য সায়েন্স ল্যাব এলাকায় নিয়ে আসেন মৌসুমি ব্যবসায়ী কাউছার আহমেদ। ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা দরে কেনা একেকটি চামড়া বিক্রির জন্য দাম চান ১ হাজার ২০০ টাকা করে। তবে আড়তদার বা ট্যানারির মালিকের প্রতিনিধিদের কেউই ৭৫০ টাকার ওপরে দাম দিতে চাননি। শেষ পর্যন্ত ৭৫০ টাকা দরেই সব চামড়া বিক্রি করেন কাউছার।
কাউছার আহমেদ বলেন, ‘যে আকারের চামড়া আমি বিক্রির জন্য নিয়ে এসেছি, সেগুলোর দাম হওয়া উচিত ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকা। কিন্তু একপ্রকার লোকসান করেই চামড়া বিক্রি করতে হলো। সারাদিনের ভ্যান ভাড়া আর একজন সহকারীর মজুরি দিয়ে কিছুই থাকবে না।’
সায়েন্স ল্যাব এলাকাতেই মৌসুমি বিক্রেতাদের কাছ থেকে চামড়া কিনে রাখছিলেন কালাম ব্রাদার্স ট্যানারির পরিচালক সাজেদুল খায়ের। এবার তারা দেড় লাখ পিস লবণযুক্ত চামড়া সংগ্রহ করবেন। এ ছাড়া কোরবানি ঈদের দুই দিনে নিজেরা ১০ হাজারের মতো কাঁচা চামড়া সংগ্রহ করবেন।
মোহাম্মদপুর এলাকা ঘুরে দেখা যায়, লবণ ছাড়া বড় ও মাঝারি গরুর কাঁচা চামড়া ৭০০ থেকে সর্বোচ্চ ৯০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আর যেসব গরুর চামড়া আকারে তুলনামূলক ছোট ও মান কিছুটা খারাপ, সেগুলো ৬০০-৬৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
এদিকে, গতবারের মতো এবারও ছাগলের চামড়ার চাহিদা নেই বললেই চলে। অনেকেই বিনামূল্যে ছাগলের চামড়া দিয়ে দিয়েছেন, অনেকক্ষেত্রে দাম উঠেছে ১৫ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত। সায়েন্স ল্যাব এলাকায় সড়কের পাশে কয়েকজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীকে ছাগলের চামড়া থেকে মাংস ছাড়াতে দেখা গেল। তাদের মধ্যে কয়েকজন জানালেন, ছাগলের চামড়ার কোনো দাম নেই। তারা বিনামূল্যেই চামড়াগুলো পেয়েছেন।
রাজধানীর হাজারীবাগ থেকে চামড়াশিল্পকে দূষণমুক্ত পরিকল্পিত শিল্পনগরে স্থানান্তরের জন্য ২০০৩ সালে একটি প্রকল্প নেয় সরকার। ২১ বছরেও এই চামড়াশিল্প নগরকে পরিবেশবান্ধব হিসেবে গড়ে তোলা যায়নি। সাভারের হেমায়েতপুরের ২০০ একর জমিতে গড়ে ওঠা এই চামড়াশিল্প নগরের সিইটিপি (কেন্দ্রীয় বর্জ্য পরিশোধনাগার) পুরোপুরি কার্যকর না হওয়ায় পাশের ধলেশ্বরী নদী দূষণের শিকার হচ্ছে।
চামড়া খাতের ব্যবসায়ীরা বলছেন, হেমায়েতপুরের চামড়াশিল্প নগরের দূষণ বন্ধ না হওয়ায় ইউরোপ-আমেরিকার বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ড ও ক্রেতাপ্রতিষ্ঠানগুলো সরাসরি বাংলাদেশি চামড়া কিনছে না। ফলে বাংলাদেশি চামড়ার বড় ক্রেতা বর্তমানে চীন। তারা মূল্য কম দেয়।
সর্বশেষ ২০১৩ সালে কোরবানির পশুর চামড়ার দাম বেশি ছিল। সেবার দাম ছিল প্রতি বর্গফুট ৮৫-৯০ টাকা। তারপর থেকে বিভিন্ন কারণে চামড়ার দাম ধারাবাহিকভাবে কমতে থাকে। ২০১৯ সালে কোরবানির পশুর চামড়ার দামে বড় ধরনের ধস নামে। ন্যূনতম দাম না পেয়ে দেশের অনেক অঞ্চলে চামড়া সড়কে ফেলে ও মাটিতে পুঁতে দেওয়ার ঘটনা ঘটে। তাতে প্রায় ২৪২ কোটি টাকার চামড়ার নষ্ট হয়।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব যবস য় গতব র র চ য় ব যবস য় র ৯০০ ট ক য় র র জন য ক রব ন র ৭৫০ ট ক গত বছর এল ক য় র র মত স গ রহ সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
চট্টগ্রামে চামড়া কিনে বিপাকে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা, দাম পাচ্ছেন না
ষাটোর্ধ্ব মোহাম্মদ বেলাল দুই দশক ধরে চামড়ার ব্যবসা করেন। তবে স্থায়ী ব্যবসায়ী তিনি নন, ঈদের দিনই চলে তাঁর বিক্রিবাট্টা। গত বছর চামড়া বেঁচে ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা লোকসান দিয়েছিলেন তিনি। তাই এ বছর বেশি চামড়া কেনেননি। বড়-ছোট মিলিয়ে শ খানেক চামড়া কিনেছেন। কেনা পড়েছে গড়ে ৪৫০ টাকা।
আজ শনিবার বিকেল চারটার দিকে চট্টগ্রাম নগরের আগ্রাবাদের চৌমুহনী এলাকায় গিয়ে মোহাম্মদ বেলালের সঙ্গে দেখা হয়। চামড়ার পাশে চেয়ার পেতে বসে ছিলেন তিনি। দরদাম কেমন, এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘আড়তদারেরা প্রতিটি ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায় কিনতে চাইছে। এখনো বিক্রি করছি না। তবে পাঁচটার আগেই বিক্রি করব।’
মোহাম্মদ বেলাল পেশায় ফল ব্যবসায়ী। থাকেন নগরের মিস্ত্রিপাড়ায়। গতবার লোকসানের পরও এবার কেন ব্যবসায় ফিরেছেন, তা জানতে চাওয়া হয়েছিল মোহাম্মদ বেলালের কাছে। তিনি বলেন, অনেক দিন ধরেই চামড়া ব্যবসার সঙ্গে জড়িত তিনি। ঈদের দিন সকাল থেকে চামড়া সংগ্রহ করা তাঁর অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। এ কারণে এটি ছাড়তে পারছেন না। তবে আশা করেছিলেন রাজনৈতিক পরিস্থিতির পরিবর্তন হওয়ায় এবার দাম পাবেন। কিন্তু আড়তদারেরা দাম কম বলছেন।
ঈদের দিন বেলা ১১টা থেকেই চৌমুহনী এলাকাটি জমজমাট হয়ে ওঠে। মোহাম্মদ বেলালের মতো শতাধিক মৌসুমি বিক্রেতা চামড়া নিয়ে জড়ো হন এ এলাকায়। সড়কের ওপর চামড়া রেখে তাঁরা আড়তদার ও তাঁদের প্রতিনিধির জন্য অপেক্ষায় থাকেন। এবারও ব্যতিক্রম হয়নি। নতুন ও পুরোনো মৌসুমি বিক্রেতারা চামড়া নিয়ে ভিড় করেছেন। এ রকম ১৫ জন বিক্রেতার সঙ্গে কথা হয় প্রথম আলোর। তাঁরা বলেছেন, আড়তদারেরা দাম দিচ্ছেন না।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ঢাকার বাইরে প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত গরু ও মহিষের কাঁচা চামড়ার দাম নির্ধারণ করেছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা, যা গত বছর ছিল ৫০ থেকে ৫৫ টাকা। অর্থাৎ সর্বনিম্ন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতিটি ১ হাজার ১৫০ টাকা।
আরেক মৌসুমি ব্যবসায়ী মনজু মিয়া এবার ২২টি বড় আকারের চামড়া কিনেছেন। তাঁর কেনা ৬০০ টাকা। তবে আড়তের প্রতিনিধিরা ৪০০ টাকা পর্যন্ত উঠেছেন। দামের বিষয়টি উল্লেখ করে মনজু মিয়া বলেন, টেলিভিশনে দেখেছি দাম এবার ১ হাজার ১০০ টাকার মতো। ভেবেছিলাম অন্তত ৮০০ টাকা পাব। লাভ হবে। কিন্তু পরিস্থিতি ভালো নয়। লোকসান গুনতে হবে। মোহাম্মদ ফাহিম নামের আরেক বিক্রেতা দাবি করেন, তাঁর ৪০০ টাকা কেনা পড়েছে। ৩০০ টাকা পর্যন্ত দাম উঠেছে।
রাইড শেয়ার করে সংসার চলে মোহাম্মদ সুজনের। আজ ঈদের দিন কিছু বাড়তি টাকা আয় করতে তিনি ৫০টি চামড়া কেনেন। কেনা পড়েছে গড়ে ৪৫০ টাকা। বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত এই চামড়া বিক্রি হয়নি।
আড়তদারেরা কী বলছেন
বৃহত্তর চট্টগ্রাম কাঁচা চামড়া আড়তদার ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সাবেক সভাপতি মো. মুসলিম উদ্দিন বলেন, সরকার লবণযুক্ত চামড়ার দাম নির্ধারণ করেছে ১ হাজার ১৫০ টাকা। একটি ২০ ফুটের চামড়ায় প্রায় ৫০০ টাকা খরচ পড়ে। এর মধ্যে প্রক্রিয়াজাতকরণ, পরিবহন খরচ, আড়তের খরচ—সবই অন্তর্ভুক্ত। তা ছাড়া ট্যানারিমালিকেরা প্রতি চামড়ায় ২০ শতাংশ বাদ দিয়ে দেন।
মুসলিম উদ্দিন বলেন, লবণ ছাড়া চামড়া বেশি দামে কেনার সুযোগ নেই। মৌসুমি ব্যবসায়ীদের এ বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। এ ছাড়া এবার চামড়ার দাম এখনো পর্যন্ত ভালো পাওয়া যাচ্ছে। ৬০০-৭০০ টাকাও দাম উঠেছে।
আড়তদারেরা বলছেন, মৌসুমি ব্যবসায়ীদের একটি বড় অংশ লবণযুক্ত চামড়ার দামের সঙ্গে কাঁচা চামড়ার দাম গুলিয়ে ফেলেন। এতে অনেক সময় তাঁরা বেশি দামে চামড়া কিনে ক্ষতিগ্রস্ত হন। এবারও সেটা হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
বৃহত্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলে এবার সমবায় সমিতির আওতায় ২৫ জন আড়তদার চামড়া সংগ্রহে অংশ নিচ্ছেন। এ ছাড়া আরও ৩০-৩৫ জন আড়তদার আছেন, যাঁরা নিজ উদ্যোগে চামড়া কিনে থাকেন। সমিতির তথ্য অনুযায়ী, আগে এই সংখ্যা ছিল ১১২। ২০১৯ সালের পর ট্যানারিমালিকদের কাছে বকেয়া পাওনা পরিশোধ না হওয়ায় অনেকে ব্যবসা ছেড়ে দেন। বর্তমানে সক্রিয় আড়তদারের সংখ্যা কমে এসেছে।
সমিতির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মাহবুবুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, মৌসুমি বিক্রেতাদের তাঁরা বারবার সতর্ক করেছেন। মূলত সরকার লবণযুক্ত চামড়ার দাম নির্ধারণ করেছে। বিক্রেতারা সেটি গুলিয়ে ফেলেছেন।
চট্টগ্রামে রিফ লেদার নামের একটিমাত্র ট্যানারি থাকলেও বেশির ভাগ চামড়া ঢাকার ট্যানারিগুলোতেই যায়। ঈদের পর ঢাকার ট্যানারিমালিকেরা এসে চামড়া কিনে নিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন আড়তদারেরা।
এবার চট্টগ্রামে সর্বোচ্চ চার লাখ গরু ও মহিষের চামড়া সংগ্রহ করার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। এ ছাড়া ছাগলসহ অন্যান্য পশুর কিছু চামড়াও হয়। তবে সেগুলোর দাম একেবারে নগণ্য। কিছু চামড়া উপজেলা পর্যায়ে লবণ দিয়ে রাখা হয়। বেশির ভাগ চামড়া চলে আসে নগরের আতুরার ডিপোর আড়তে। এ ছাড়া গাউছিয়া কমিটি বাংলাদেশও কিছু চামড়া সংগ্রহ করে।