বেঁধে দেয়া দামে চামড়া বিক্রি হচ্ছে : উপদেষ্টা
Published: 9th, June 2025 GMT
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন বলেছেন, ‘‘সরকারের বেঁধে দেয়া দামেই কোরবানির পশুর চামড়া বিক্রি হচ্ছে। নির্ধারিত দাম কার্যকরে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একটি বিশেষ দল কাজ করছে।’’
রবিবার (৮ জুন) সন্ধ্যায় রাজধানীর লালবাগের পোস্তায় কোরবানির পশুর চামড়া সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের উপদেষ্টা এ কথা বলেন।
উপদেষ্টা চামড়ার দাম নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘‘আমরা যে চামড়ার দাম নির্ধারণ করেছিলাম, সেটি ছিল লবণসহ দাম। ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা যেটা বিক্রি হচ্ছে সেটি লবণ ছাড়া। বিগত বহু বছর ধরে যে দামে বিক্রি হতো, এই দাম তার থেকে বেশি।’’
আরো পড়ুন:
চামড়া বিক্রি করতে না পেরে নদীতে ফেলে ক্ষোভ, ব্যবসায়ী আটক
চামড়ার দাম কাগজে বাড়লেও বাজারে বাড়েনি
মৌসুমি ব্যবসায়ীরা চামড়ার দাম পাচ্ছে না— এমন প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘‘এটা কিছু কিছু ক্ষেত্রে সত্য, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এটা অসত্য। অসত্য এজন্য যে কিছু মৌসুমী ব্যবসায়ী যাদের চামড়া সংরক্ষণের ব্যাপারে অভিজ্ঞতা নেই, তারা চামড়া নিয়ে আধা পঁচা করে ফেলছে। আধা পঁচা চামড়া ৭০০-৮০০ টাকায় বিক্রি হলে তো এটা অনেক বেশি। আর যেটা ভালো চামড়া সেটি ১২০০ থেকে ১৩০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশে আমরা যে কাজ শুরু করি, তা হলো স্থানীয়ভাবে মজুত এবং লবণ দেয়াকে উৎসাহিত করার মাধ্যমে চামড়া সংরক্ষণ উপযোগী ও মজুত উপযোগী করা। যার ফলে বাজার ব্যবস্থাপনায় একটা স্থিতি এবং বাজারের চাহিদা ও সরবারহের মধ্যে সামঞ্জস্য তৈরি হয়।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘মাঠ পর্যায়ে জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসন চামড়া ব্যবস্থাপনায় কাজ করছে। জাতীয় পর্যায়ে আমরা একটি কন্ট্রোল রুম করেছি। সেখানে ২৪ ঘণ্টা চামড়া ব্যবস্থাপনা মনিটরিং হচ্ছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে আমরা দেখেছি, চামড়ার উপযুক্ত মূল্য পাওয়া যাচ্ছে যেটা লবণ দেয়া চামড়া। সরকার নির্ধারিত মূল্যেই সেটা বিক্রি হচ্ছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে সোশ্যাল মিডিয়া ও মেইনস্ট্রিমের কিছু মিডিয়াও ভুল তথ্য প্রচার করছে।’’
উপদেষ্টা বলেন, ‘‘চামড়া পঁচে গিয়েছে— এমন একটি তথ্য দেখলাম চিটাগাংয়ের রাঙ্গুনিয়ার। একজন মৌসুমী ব্যবসায়ী ৬২০টির মতো চামড়া নিয়ে এসেছেন। তিনি চামড়াটি সংরক্ষণ উপযোগী করেননি। চামড়া আধা পঁচে গেছে। এটা নিয়ে একটি অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। অসাধু ব্যবসায়ীরা একত্রিত হয়ে চামড়ার বাজারে ধস নামানোর পরিকল্পনা করছে।’’
উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ‘‘সরকার উদারভাবে লবণ বিতরণ করেছে শুধু চামড়া উপযোগী করার জন্য। সব দায় সরকারের উপর দিয়ে দিলে চলবে না। আপনি যদি আপনার নিজের দায়িত্ব পালন না করেন, আকাঙ্ক্ষা করাটাও শোভনীয় নয়। সরকার সক্ষমতা তৈরির জন্য উদ্যোগ নিয়েছে। এ কাজে সহযোগিতা করতে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। লবণ লাগিয়ে সঠিকভাবে সংরক্ষণ করে উপযুক্ত দাম চান, আমি আশা করি উপযুক্ত দামই পাবেন। তার চেয়েও বেশি দাম পাবেন।’’
উপদেষ্টা জানান, সরকার চাহিদা তৈরির জন্য কাঁচা চামড়া এবং ওয়েট ব্লু চামড়া রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে। প্রণোদনার ২২০ কোটি টাকা ছাড় করিয়েছে। দেশের প্রত্যেক জেলায়, উপজেলায়, গ্রামে মসজিদে মসজিদে লবণ পৌঁছে দিয়েছে। এখন এর সঙ্গে সকলের সংযুক্ত হতে হবে। এককভাবে সরকারকে দায়ী করে কিছু ভুল তথ্য ও অপতথ্য ছড়িয়ে চামড়ার বাজার ক্ষতিগ্রস্ত করার চেষ্টা করা ন্যক্কারজনক কাজ হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
এ সময় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবুর রহমান, অতিরিক্ত সচিব (রপ্তানি) মো.
ঢাকা/হাসনাত/বকুল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপদ ষ ট সরক র উপয গ
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাকায় জামায়াতসহ ৭ দলের বিক্ষোভ আজ, কোথায়, কখন, কোন দল
ফেব্রুয়ারিতে জুলাই সনদের ভিত্তিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানসহ কয়েক দফা দাবিতে রাজধানী ঢাকায় আজ বৃহস্পতিবার একযোগে বিক্ষোভ মিছিল করবে জামায়াতে ইসলামীসহ সাতটি দল।
বিক্ষোভের আগে বায়তুল মোকাররম, জাতীয় প্রেসক্লাবসহ আশপাশের এলাকায় দলগুলো সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করবে। বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এসব কর্মসূচি চলবে।
প্রায় অভিন্ন দাবিতে সাতটি দল তিন দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। আজ প্রথম দিনে রাজধানী ঢাকায়, আগামীকাল শুক্রবার বিভাগীয় শহরে এবং ২৬ সেপ্টেম্বর সব জেলা ও উপজেলায় বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি রয়েছে দলগুলোর।
জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, খেলাফত মজলিস, নেজামে ইসলাম পার্টি, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন ও জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) এই কর্মসূচি পালন করবে। সাতটি দলের কেউ ৫ দফা, কেউ ৬ দফা, কেউ ৭ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করলেও সবার মূল দাবি প্রায় অভিন্ন। দাবিগুলো হচ্ছে
জুলাই সনদের পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন এবং তার ভিত্তিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান, জাতীয় সংসদের উভয় কক্ষে (কেউ কেউ উচ্চকক্ষে) সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতি চালু করা
অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করতে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (সবার সমান সুযোগ) নিশ্চিত করা
বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের সব জুলুম, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা এবং জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা।
সাড়ে চারটায় জামায়াতআজ বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে চারটায় বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ ফটকের সামনে সমাবেশের পর বিক্ষোভ মিছিল করবে জামায়াত। সমাবেশে দলের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের ও সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ারসহ কেন্দ্রীয় ও ঢাকা মহানগর কমিটির নেতারা বক্তব্য দেবেন। জামায়াতের ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখার উদ্যোগে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে।
জামায়াতের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি শফিকুল ইসলাম মাসুদ প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ ফটক থেকে মিছিল বের হয়ে পুরানা পল্টন মোড়, জাতীয় প্রেসক্লাব ও মৎস্য ভবনের পাশ দিয়ে শাহবাগ পর্যন্ত যেতে পারে।
বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ ফটক থেকে মিছিল বের হয়ে পুরানা পল্টন মোড়, জাতীয় প্রেসক্লাব ও মৎস্য ভবনের পাশ দিয়ে শাহবাগ পর্যন্ত যেতে পারে।জোহরের পর ইসলামী আন্দোলনজোহর নামাজের পর বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তরে প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ মিছিল করবে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। মিছিলে নেতৃত্ব দেবেন দলের জ্যেষ্ঠ নায়েবে আমির সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম। ইসলামী আন্দোলনের ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখা যৌথভাবে এ কর্মসূচির আয়োজন করেছে।
জোহর নামাজের পর বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তরে প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ মিছিল করবে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।আসরের পর বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসআসর নামাজের পর বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর ফটকের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করবে মাওলানা মামুনুল হকের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস। গতকাল এক বিবৃতিতে দলের মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ কর্মসূচিতে সবাইকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
এ ছাড়া খেলাফত মজলিস বেলা তিনটায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে বিক্ষোভ সমাবেশ করবে। এতে দলের মহাসচিব আহমদ আবদুল কাদের প্রধান অতিথির বক্তব্য দেবেন।
একই সময়ে, একই জায়গায় মিছিল করবে বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনও। বিকেল চারটায় একই জায়গায় বিক্ষোভ করবে বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি।
আসর নামাজের পর বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর ফটকের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করবে মাওলানা মামুনুল হকের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস।জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) বিকেল সাড়ে চারটায় বিজয়নগর পানির ট্যাংকের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করবে।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, রাজধানীর মধ্য এলাকায় একযোগে সাতটি দলের বিক্ষোভের কর্মসূচি ঘিরে নেতা-কর্মীদের সমাগমে সড়কে যানজটের সৃষ্টি হতে পারে। এ জন্য নগরবাসী দুর্ভোগের সম্মুখীন হতে পারেন। যদিও আজ ও আগামীকাল সকালে বিসিএস পরীক্ষা সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠানের জন্য এই সাত দল কর্মসূচি বিকেলে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) বিকেল সাড়ে চারটায় বিজয়নগর পানির ট্যাংকের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করবে।