খাগড়াছড়ির আলুটিলা পর্যটনকেন্দ্র থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার পশ্চিমে রিসাং ঝরনা। মূল সড়ক থেকে আরও এক কিলোমিটার দক্ষিণে গেলেই কানে আসে ঝরনার কলতান। তার আগে অবশ্য অপেক্ষা করছে এক চমৎকার পথচলা।

পাহাড়ের ঢাল বেয়ে আঁকাবাঁকা রাস্তা। দুই পাশে জুমঘর, বুনো ঝোপ আর নাম না জানা পাহাড়ি ফুলের মেলা। চারপাশজুড়ে শুধু সবুজের সমারোহ। পাখির কলকাকলিতে তৈরি হয় অনন্য এক পরিবেশ।

গাড়ি থেকে নেমে ঝরনার কাছে যেতে হলে নামতে হবে পাহাড় বেয়ে। তারপর বিশাল সিঁড়ি—২৫০ ধাপ। সিঁড়ি দিয়ে নামতেই নামতেই কানে আসে ঝরনার কলতান। সিঁড়ি শেষ না হতেই চোখের সামনে ধরা দেয় ঝরনা। ১২০ ফুট উঁচু পাহাড় থেকে গড়িয়ে সাদা জলের ধারা। কাছে গেলেই জলের ছাঁটে ভিজে ওঠে শরীর, মন ভরে যায় স্নিগ্ধতায়।

গতকাল রোববার সকালে গিয়ে দেখা যায়, ঝরনার স্বচ্ছ জলে হইহুল্লোড় করছেন অনেক পর্যটক।

চট্টগ্রাম থেকে সপরিবার এসেছেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী বেলাল আহমদ। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘ঈদের ছুটিতে অনেক আগে থেকেই খাগড়াছড়ি ঘুরতে আসার পরিকল্পনা ছিল। পাহাড় আর ঝরনা দেখতে এসেছি। গরমে এখানে এসে খুব ভালো লাগছে। যদিও সিঁড়ি দিয়ে নামাটা বেশ কষ্টকর ছিল।’

খাগড়াছড়ির রিসাং ঝরনায় গোসল করছেন পর্যটকেরা। গতকাল দুপুরে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ঝরন র

এছাড়াও পড়ুন:

গলায় হাড় আটকালে কী করবেন?

যেকোনো বয়সেই ঘটতে পারে এমন দুর্ঘটনা। তবে শিশু এবং বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে ঝুঁকিটা বেশি। দুর্ঘটনা এড়াতে সতর্ক থাকতে হবে সবাইকেই। আকস্মিক দুর্ঘটনায় কী করতে হবে, সে সম্পর্কেও জেনে রাখা উচিত। এ বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের নাক-কান-গলা ও হেড-নেক সার্জারি বিভাগের সাবেক প্রধান অধ্যাপক ডা. এ এফ মহিউদ্দিন খান

সচেতন থাকুন আনন্দের সময়ও

প্রিয়জনদের সঙ্গে বসে খাওয়াদাওয়ার সময় আলাপচারিতা হয়েই থাকে; তবে খাবার মুখে নিয়ে কথা বলা কখনোই উচিত নয়। তাতে গলায় মাংসের হাড় কিংবা মাছের কাঁটার মতো কোনো জিনিস আটকে যেতে পারে। এমনকি শ্বাসনালিতেও চলে যেতে পারে যেকোনো খাবারের ক্ষুদ্র অংশ। ঘটে যেতে পারে মারাত্মক দুর্ঘটনা। তাই কথা বলতে হলে ওই মুহূর্তে মুখে কোনো খাবার রাখবেন না। খাবার খাওয়ার সময় তাড়াহুড়া করলেও এমন কিছু ঘটে যেতে পারে। তাই ধীরেসুস্থে মনোযোগ দিয়ে খাবেন। একবারে অনেকটা খাবার মুখে ঢোকাবেন না। বিশেষভাবে সতর্ক থাকুন হাড় চিবানোর সময়। আনন্দ, আড্ডা, হাসির জন্য তো বাকিটা সময় আছেই। শিশু এবং বয়োজ্যেষ্ঠদের খাবার দেওয়ার সময় ভালোভাবে দেখে দিন, তাতে কোনো ছোটখাট হাড় রয়েছে কি না। তেহারির মতো খাবার নিজের হাতের আঙুল দিয়ে পরখ করে দেখুন। ছোট হাড় থাকলে অবশ্যই তা সরিয়ে দিন।

তবু যদি হাড় আটকে যায়

গলনালিতে হাড় আটকে গেলে ব্যথা হবে কিংবা খোঁচা লাগার মতো একটা অনুভূতি হবে। ঢোক গেলার সময় এই কষ্ট বাড়বে। খেতে অসুবিধা হবে। একটু বড় আকারের হাড় আটকে গেলে বমিও হতে পারে। গলায় হাড় আটকে গেছে মনে হলে দ্রুততম সময়ে একজন নাক-কান-গলা বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হতে হবে। তা সম্ভব না হলে নিকটস্থ যেকোনো হাসপাতালে চলে যেতে হবে। অবশ্যই মনে রাখবেন, বাড়িতে নিজেরা নিজেরা গলার হাড় নামানোর কোনো চেষ্টা করা যাবে না। ভাতের দলা, পাকা কলা, পানি—কোনো কিছুই গলায় আটকে থাকা হাড় নামাতে পারে না। নিজেরা চেষ্টা করতে গেলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে পড়তে পারে। তাই হাসপাতালে নিয়ে হাড়টি বের করতেই হবে। গলনালিতে হাড় রয়ে যাওয়া যেমন কষ্টদায়ক, তেমনি গলনালির কোনো অংশ চিরে হাড়টি আটকে থাকলে সেখানে জীবাণু সংক্রমণের ঝুঁকিও সৃষ্টি হয়।

খাওয়ার সময় শ্বাস আটকে এলে

যেকোনো খাবারের ক্ষুদ্র অংশ শ্বাসনালিতে আটকে গেলে শ্বাস আটকে আসতে পারে। এটি একটি জরুরি পরিস্থিতি। খাওয়ার সময় কারও শ্বাস আটকে এলে তিনি ওই মুহূর্তে ঠিকভাবে কথাও বলতে পারেন না। এমন পরিস্থিতিতে তাঁর কাছে থাকা মানুষটিই তাঁর প্রাণ বাঁচাতে পারেন। এক্ষেত্রে সাহায্যকারীকে চলে যেতে হবে ওই ব্যক্তির পেছনে। সাহায্যকারীকে নিজের দুহাত একসঙ্গে করে ওই ব্যক্তির পেটের ওপরের অংশে জোরে চাপ দিতে হবে। পেটের ওপর এভাবে চাপ পড়ায় খাবারের ওই অংশ বেরিয়ে আসতে পারে মুখ দিয়ে। তাতে কাজ না হলে অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করতে হবে দ্রুত। তবে খাবারের অংশটি বেরিয়ে না আসা পর্যন্ত কিংবা হাসপাতালে চিকিৎসকের কাছে না পৌঁছা পর্যন্ত এভাবে চাপ দিয়ে যেতে হবে। একেবারে ছোট শিশুদের ক্ষেত্রে অবশ্য পেটের ওপর চাপ দিতে নেই। বরং তাদেরকে নিজের একটি হাতের ওপর উপুড় করে শুইয়ে পিঠে জোরে ধাক্কা দিতে হয়। তবে রোগীর বয়স যতই হোক, তিনি যদি জ্ঞান হারান, দ্রুততম সময়ে সিপিআর (কার্ডিওপালমোনারি রিসাসিটেশন) শুরু করতে হবে। তাই সিপিআর দেওয়ার নিয়ম জানা থাকা উচিত প্রতিটি মানুষেরই।

আরও পড়ুনতামিম ইকবালের জীবন রক্ষা করেছে সিপিআর, এটি কেন সবার জেনে রাখা জরুরি, কোথায় শিখবেন ২৬ মার্চ ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ