মহাকাশবর্জ্য নিয়ে বিজ্ঞানীরা বেশ দুশ্চিন্তা করছেন। কোনোভাবেই যেন এসব বর্জ্য কমানোর সুযোগ হচ্ছে না। বিশ্বজুড়ে ২০২৪ সালে কক্ষপথে প্রায় ২ হাজার ৯০০ বস্তু স্থাপন করা হয়েছে বলে এক তথ্যে জানা গেছে। একই সঙ্গে প্রায় ৩ হাজার ৬০০ বস্তু কক্ষপথে বর্জ্য হিসেবে জায়গা করে নেয়। এগুলোর ভেতর অনেক বিলুপ্ত কৃত্রিম উপগ্রহ ও খণ্ডিত ধাতব অংশ কক্ষপথে অবস্থান করেছে। ২০২৪ সালে পৃথিবী থেকে অন্যান্য সময়ের তুলনায় অনেক বেশিসংখ্যক মহাকাশযান উৎক্ষেপণ অব্যাহত ছিল। প্রায় ২৬১টি প্রচেষ্টার মধ্যে ২৫৪টি উৎক্ষেপণ সাফল্যের মুখ দেখে। এতে ২ হাজার ৫৭৮টি কার্যকর কৃত্রিম উপগ্রহসহ মোট ২ হাজার ৯৬৩টি বস্তু কক্ষপথে স্থাপন করা হয়েছে। যদিও ২০২৩ সালে কক্ষপথে স্থাপন করা মোট বস্তু ছিল ৩ হাজার ১৩৫টি।
কৃত্রিম উপগ্রহ পাঠানোর পাশাপাশি চন্দ্র অভিযানের প্রতি নতুন করে আগ্রহের কারণে উৎক্ষেপণ বেড়েছে। ২০২৪ সালে কক্ষপথে বেশ কিছু দুর্ঘটনা পুরো পরিস্থিতি বদলে দিয়েছে। একটি চীনা লং মার্চ রকেট স্টেজ ভেঙে যাওয়ার কারণে মহাকাশে ধ্বংসাবশেষের তালিকায় প্রায় ৬৫০টি নতুন বস্তু যুক্ত হয়েছে। বছরের শেষ নাগাদ সব মিলিয়ে ৭০২টি খণ্ডিত বস্তু যুক্ত হয়। তথ্য বলছে, এ বছর ২ হাজার ৯৫টি তালিকাবদ্ধ বস্তু পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে আবার প্রবেশ করেছে। এগুলোর মধ্যে ৩৩৫টি স্টারলিংক উপগ্রহ ইচ্ছাকৃতভাবে কক্ষপথ থেকে বিচ্যুত হয়েছে বলে জানা গেছে। সৌর চক্র ২৫ শীর্ষে পৌঁছানোর কারণে চরম মাত্রার ভূচৌম্বকীয় ঝড় এসব উপগ্রহকে কক্ষপথ থেকে টেনে আনে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
রাবিপ্রবির ১০ শিক্ষার্থীর সনদ-ছাত্রত্ব বাতিল
২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে কোটাবিরোধী আন্দোলনকালে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার, র্যাগিংসহ নানা অভিযোগ এনে নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল এমন ১০ শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ী বহিষ্কার, ছাত্রত্ব ও সনদপত্র বাতিল করেছে রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
বহিষ্কৃতরা হলেন, বিশ্বজিৎ শীল, সাইদুজ্জামান পাপ্পু, জাহাঙ্গীর আলম অপু, মহিউদ্দিন মুন্না, হাসু দেওয়ান, আকিব মাহমুদ, আবির, অন্তু কান্তি দে, জাকির হোসেন ও রিয়াদ।
বিশ্ববিদ্যালয়টির ভিসি ড. আতিয়ার রহমান জানিয়েছেন, ১০ শিক্ষার্থীর মধ্যে যাদের শিক্ষাজীবন শেষ হয়েছে, তাদের সনদপত্র বাতিল করা হয়েছে। যারা এখনো অধ্যয়নরত তাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।
আরো পড়ুন:
ছাত্রলীগের বিচারসহ ৯ দাবি জবি ছাত্রদলের
রাবিতে প্রভাষক হলেন জাসদ ছাত্রলীগ নেতা, ক্ষোভ
ভিসি আরো জানান, ২০২৪ সালের কোটাবিরোধী আন্দোলন চলাকালে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারসহ নানান অভিযোগে সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবির ভিত্তিতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়া হয়, যা সর্বশেষ রিজেন্ট বোর্ডের সভায় অনুমোদিত হয়েছে। গত পরশু তাদের ঠিকানায় চিঠি পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।
বহিষ্কৃত ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী আকিব মাহমুদ বলেন, ‘‘জুলাই-আগস্ট মাসে এমন কোনো ঘটনা ক্যাম্পাসে ঘটেনি, যে কারণে আমাদের বহিষ্কার করা হতে পারে। ক্যাম্পাসে কোটা প্রত্যাহার দাবিতে একদিন বৈষম্যবিরোধী ব্যানারে প্রোগ্রাম হয়েছে, সেদিনও কিছু হয়নি। আমরা সম্পূর্ণভাবে ভিসি ও ছাত্রদল-শিবিরের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। একদিন নিশ্চয়ই এই অবিচারের বিচারও হবে।’’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘‘কিছু শিক্ষার্থীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে রিজেন্ট বোর্ড সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আমাদের কিছু বলার নেই। শুধু জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের ঘটনাই নয়, অন্যান্য রাজনৈতিক ঘটনাও আছে অভিযোগে। তারই প্রেক্ষিতে তদন্ত শেষে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।’’
২০১৫ সালে শ্রেণি কার্যক্রম শুরু করা রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সরকার পতনের দিন পর্যন্ত কমিটি দেয়নি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। তবে বেশ কিছু শিক্ষার্থীকে ছাত্রলীগের ব্যানারে নানান কর্মসূচি পালন করতে দেখা যেত। বহিষ্কৃত ও সনদ বাতিল হওয়া শিক্ষার্থীদের বেশ কয়েকজন ৫ আগস্টের আগে শিক্ষাজীবন শেষ করেন। গ্রেপ্তার হয়ে বেশ কিছু দিন কারাবরণ শেষে উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে দেশ ছেড়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের রাজনীতি করা বহিষ্কৃত ১০ জনের একজন বিশ্বজিৎ শীল।
ঢাকা/শংকর/বকুল