মাত্র ২৯ বছরেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ছাড়লেন পুরান
Published: 10th, June 2025 GMT
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বিশ্বের সেরা ব্যাটারদের একজন হিসেবে বিবেচিত নিকোলাস পুরান। ওয়েস্ট ইন্ডিজের জার্সিতে টি-টোয়েন্টিতে সবচেয়ে বেশি রানের মালিকও তিনি। মারকুটে ব্যাটার হিসেবে খ্যাতিমান এই ব্যাটার বোলারদের জন্য আতঙ্কের নাম। তবে ২৯ বছর বয়সেই পুরান জানিয়ে দিলেন, দেশের হয়ে আর লড়বেন না তিনি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়েছেন পুরান। তবে ক্রিকেট ছাড়ছেন না, বরং মনোযোগ দিচ্ছেন ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগগুলোতে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে ১০৬টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন পুরান। সম্প্রতি ইংল্যান্ড সিরিজে বিশ্রামের কারণ দেখিয়ে না খেললেও এখন বোঝা যাচ্ছে, সেটা ছিল অবসরের প্রস্তুতি। সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে নিজের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছেন ক্রিকেট ওয়েস্ট ইন্ডিজকে।
নিজের ইনস্টাগ্রাম পোস্টে পুরান লিখেছেন, ‘অনেক চিন্তা ভাবনা এবং আত্মবিশ্লেষণের পর আমি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
পুরান তার পোস্টে উল্লেখ করেন, ‘মেরুন জার্সি পরা, জাতীয় সংগীতের সময় দাঁড়ানো, এবং প্রতিবার মাঠে নেমে নিজের সবকিছু উজাড় করে দেওয়া, এই অনুভূতিগুলো আমার কাছে ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। দলের অধিনায়ক হওয়া ছিল আমার জন্য একটি সম্মান, যা আমি সবসময় হৃদয়ে ধারণ করে রাখব। যদিও আমার আন্তর্জাতিক অধ্যায় এখানেই শেষ হচ্ছে, তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটের প্রতি আমার ভালোবাসা কখনোই কমবে না। আমি দল এবং পুরো অঞ্চলটির জন্য আগামীর পথচলায় সাফল্য ও শক্তি কামনা করি।’
পুরানের এই ঘোষণার পর এক বিবৃতিতে বোর্ড জানায়, ‘তার অর্জন ও অবদানের জন্য আমরা কৃতজ্ঞ। ক্যারিবিয়ান ও বিশ্বজুড়ে সমর্থকদের মনে তিনি স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।’
টেস্ট ক্রিকেটে কখনোই না খেলা পুরান সর্বশেষ ওয়ানডে খেলেছেন ২০২৩ সালের জুলাইয়ে আর টি-টোয়েন্টি খেলেছেন ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে, বাংলাদেশের বিপক্ষে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
ক্লাসেনের অবসরের কারণ তাহলে এই
বয়স ৩৩, আছেন দারুণ ফর্মে, চাইলে আরও অনেক দিন দক্ষিণ আফ্রিকা জাতীয় দলের হয়ে খেলতে পারতেন। কিন্তু ২ জুন আচমকা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় বলে দিয়েছেন হাইনরিখ ক্লাসেন।
অবসরের কারণ জানাতে গিয়ে বেশির ভাগ ক্রিকেটার পরিবারকে আরও বেশি সময় দেওয়ার কথা বলেন। ক্লাসেনও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সিদ্ধান্ত জানাতে গিয়ে ‘পরিবারের ভালোর জন্য’ কথাটি উল্লেখ করেছেন।
এরপরও ক্লাসেনের আচমকা অবসর নিয়ে সমর্থকদের মনে খচখচানি ছিল। অনেকের ধারণা ছিল, ক্রিকেট দক্ষিণ আফ্রিকা (সিএসএ) কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে বাদ দেওয়াতেই অভিমান করে দেশের হয়ে আর না খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
কিন্তু আসল কারণ উঠে এসেছে দক্ষিণ আফ্রিকার সাপ্তাহিক পত্রিকা রাপোর্টে। সংবাদমাধ্যমটিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ক্লাসেন জানিয়েছেন, বেশ কিছু ধরে জাতীয় দলের হয়ে খেলা আর উপভোগ করছিলেন না। তাই অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, ‘চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আগে আমি রব ওয়াল্টারের (দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক এবং নিউজিল্যান্ডের বর্তমান কোচ) সঙ্গে লম্বা সময় ধরে আলোচনা করেছি। আমি তাঁকে বলেছি যেভাবে চলছে, তাতে আমার ভালো লাগছে না। আমি খুব একটা উপভোগ করছি না...আমরা ভালোভাবেই আলোচনা করেছি এবং পরিকল্পনা ছিল ২০২৭ (ওয়ানডে) বিশ্বকাপ পর্যন্ত খেলব।’
ক্লাসেনের এই সিদ্ধান্তে কোচ ওয়াল্টার রাজি ছিলেন এবং তাঁকে আইপিএল, এসএ২০, দ্য হান্ড্রেড, ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (সিপিএল), মেজর লিগ ক্রিকেটের (এমএলসি) মতো ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগগুলোয় খেলতে দিতে চেয়েছিলেন।
এ বছর দ্য হান্ড্রেড হওয়ার কথা আগস্টে আর সিপিএল আগস্টের মাঝামাঝি সময় থেকে সেপ্টেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত। ১০০ বলের টুর্নামেন্টে খেলার জন্য ম্যানচেস্টার অরিজিনালসের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন ক্লাসেন। ৩৩ বছর বয়সী এই উইকেটকিপার–ব্যাটসম্যানের সিপিএলেও দল পাওয়ার বড় সম্ভাবনা আছে।
সেই সময়েই দক্ষিণ আফ্রিকার দলের অস্ট্রেলিয়া সফর আছে। তাই দ্য হান্ড্রেড বা সিপিএলে খেললে ক্লাসেনকে রেখেই অস্ট্রেলিয়ায় যেতে হতো প্রোটিয়াদের। এ নিয়ে বোর্ড কর্মকর্তারা তাঁর ওপর নাখোশ ছিলেন।
শেষমেশ সাদা বলের প্রধান কোচ রব ওয়াল্টারই এপ্রিলের শুরুতে দক্ষিণ আফ্রিকা দলের দায়িত্ব ছেড়েছেন। সম্প্রতি তাঁকে সব সংস্করণের প্রধান কোচ হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট (এনজেডসি)। ওয়াল্টারের চলে যাওয়াই নাকি ক্লাসেনের অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্তকে সহজ করে দিয়েছে।
ওয়াল্টারের পদত্যাগের পর দক্ষিণ আফ্রিকার লাল বলের কোচ শুকরি কনরাডকে সব সংস্করণের দায়িত্ব দিয়েছে সিএসএ। অনেকে ভাবতে পারেন, ক্লাসেন যেহেতু টেস্ট দলের অংশ নন, তাই কনরাডের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ভালো নয়। তাই তাঁকে সাদা বলেরও দায়িত্ব দেওয়ায় ক্লাসেন টি–টোয়েন্টি ও ওয়ানডে থেকেও সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকতে পারেন।
তবে ক্লাসেন নিজেই এই ভুল ভেঙে দিয়েছেন, ‘শুকরি কনরাড প্রোটিয়াদের সব সংস্করণের কোচ হওয়ার আগেই আমি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছিলাম। আমাদের মধ্যকার সম্পর্ক খুবই ভালো।’
দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান এনোচ এনকেওয়ের দাবি, সমাধান খুঁজতে তাঁরা ক্লাসেনের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন। কিন্তু সমঝোতা হয়নি, ‘আমরা আলোচনার টেবিলে বসেছিলাম। উভয় পক্ষই সন্তুষ্ট হয়, আমরা এমন একটি জায়গায় পৌঁছানোর চেষ্টা করেছিলাম। এ ধরনের চেষ্টা আসলে দুই দিক থেকেই করতে হয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত তা হয়নি।’
আগামী শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ এমএলসির তৃতীয় আসর শুরু হচ্ছে। টুর্নামেন্টে সিয়াটল ওরকাসের হয়ে খেলবেন ক্লাসেন।