কনভারসেশনাল নার্সিসিস্ট কারা, জানেন?
Published: 11th, June 2025 GMT
সব মানুষের কথা বলার ধরন এক নয়। কেউ একটু ভেবেচিন্তে কথা বলেন, যাতে অপর পক্ষ মনে কষ্ট না পায়। কেউ আবার নিজের মনের কথা নিজের মতো করে প্রকাশ করতেই পছন্দ করেন। তাতে কার কী মনে হলো, সে বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দেন না। এ ধরনের মানুষের মধ্যেই কেউ কেউ ‘কনভারসেশনাল নার্সিসিস্ট’ বা আত্মপ্রেমী আলাপচারী।
অন্যের সামনে নিজের ভালো দিক প্রকাশ করতে চাইতেই পারেন। তাতে দোষের কিছু নেই। তবে তা যদি অহমিকার পর্যায়ে চলে যায়, তাহলেই মুশকিল। একজন কনভারসেশনাল নার্সিসিস্ট অন্যের অনুভূতি খেয়াল না করে নিজের কিংবা নিজের কাছের মানুষের অর্জন বা সাফল্যের গল্প বারবার সামনে নিয়ে আসেন। তাঁদের কথায় আত্মঅহমিকা প্রকাশিত হয়। কনভারসেশনাল নার্সিসিস্টের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে বিস্তারিত জানালেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা মনোবিজ্ঞানী ও পিএইচডি গবেষক হাজেরা খাতুন।
নিজেকে জাহিরএকজন কনভারসেশনাল নার্সিসিস্ট অন্যের সামনে নিজেকে জাহির করতে পছন্দ করেন। যেকোনো প্রসঙ্গে আলাপের ক্ষেত্রে তাঁর নিজেকে সেরা হিসেবে উপস্থাপন করার প্রবণতা থাকে। ব্যাপারটা প্রায় সব সময়ই নিজের ঢোল নিজে পেটানোর মতো হয়ে দাঁড়ায়, যা শোভনীয় পর্যায়ে থাকে না। আর এমন আলাপচারিতা তিনি নিয়মিত চালিয়ে যান।
আরও পড়ুনযে ৫ কাজে বন্ধুত্বে লাগে প্যাঁচ০৬ আগস্ট ২০১৬অন্যকে গুরুত্ব না দেওয়ানিজের কথা বলতে গিয়ে অন্যদের মনোভাব বা অনুভূতি মূল্যহীন হয়ে পড়ে তাঁর কাছে। অন্যের কথা শোনার ব্যাপারে বিশেষ গুরুত্ব দেন না তিনি। অথচ তাঁদের একই ধারার কথা শুনতে শুনতে অন্যরা প্রায়ই বিরক্ত বোধ করেন। আবার কনভারসেশনাল নার্সিসিস্ট অনেক সময় এমনভাবে নিজের কথা বলতে থাকেন, যাতে অন্য কেউ কষ্টও পেতে পারেন, বিশেষ করে যখন ওই বিষয়ে কারও দুর্বলতা থাকে কিংবা না পাওয়ার কষ্ট থাকে। ধরা যাক, এক দম্পতির সন্তান নিজের পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ে পছন্দের বিষয়ে পড়ার সুযোগ পাননি; তাঁদের পরিচিত গণ্ডির ভেতর একজন কনভারসেশনাল নার্সিসিস্ট আছেন। এই ব্যক্তির চেনাজানা কেউ হয়তো ভালো কোথাও পড়ার সুযোগ পেয়েছেন। ওই দম্পতির সামনে তিনি ইচ্ছা করে এই প্রসঙ্গ টেনে আনেন। এতে যে তাঁরা কষ্ট পেতে পারেন, তা তিনি উপলব্ধিও করেন না।
কথার গতি ঘুরিয়ে ফিরিয়ে নিজের দিকেই নিয়ে আসেন কনভারসেশনাল নার্সিসিস্ট.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র স মন অন য র পছন দ
এছাড়াও পড়ুন:
যে রানিকে ‘জীবন্ত দেবী’ হিসেবে গণ্য করা হতো
প্রাচীন মিশরের ১৮তম রাজবংশের একজন শক্তিশালী রানী এবং ফারাও আখেনাতেনের প্রধান রাজমহিষী ছিলেন রানি নেফারতিতি ছিলেন। এই নারী তার সৌন্দর্যের কারণে অধিক পরিচিত। এ ছাড়া ইতিহাসে তার অবস্থান শক্তিশালী হওয়ার আরেকটি কারণ হচ্ছে, তিনি মিশরে একেশ্বরবাদী ধর্মীয় বিপ্লবে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছিলেন।
নেফারতিতি নামের অর্থ ‘‘একজন সুন্দরী নারী এসেছেন’’। নেফারতিতির জন্ম আনুমানিক খ্রিষ্টপূর্ব ১৩৭০ অব্দে।
আরো পড়ুন:
সঞ্চয় করার কিছু কার্যকর উপায়
আজ পুরুষদের রান্না করার দিন
জানা যায়, নেফারতিতির বাবা ছিলেন ফারাও আখেনাতেনের উপদেষ্টা এবং তিনিই কিশোর রাজকুমার আখেনাতেনের দেখাশোনা করতেন। বাবার সুবাদে শৈশবেই রাজকুমারের সঙ্গে পরিচয় হয় নেফারতিতির এবং অল্প বয়সেই তিনি আখেনাতেনের সঙ্গে প্রণয়ের সম্পর্কে গড়ে তোলেন। ১৫ বছর বয়সে রাজকুমারের সঙ্গে বিয়ে হয় তার। ক্রমে ফারাও আখেনাতেনের জীবনে অত্যন্ত গভীর প্রভাব বিস্তার করেন এই রানি।
আখেনাতেন মিশরের ঐতিহ্যবাহী বহু-ঈশ্বরবাদী ধর্ম পরিবর্তন করে ‘আতেন’ বা সূর্য দেবতার একেশ্বরবাদী পূজার প্রচলন করেছিলেন। এই ধর্মীয় পরিবর্তনে নেফারতিতি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিলেন এবং তাকে জীবন্ত দেবী হিসেবে গণ্য করা হতো।
আখেনাতেনের রাজত্বকালে নেফারতিতি একজন ফারাওয়ের মতোই ক্ষমতা এবং মর্যাদা ভোগ করতেন। অনেক ভাস্কর্য ও চিত্রে তাকে ফারাওদের মতো ক্ষমতা প্রদর্শন করতে দেখা যায়। বার্লিনের একটি জাদুঘরে সংরক্ষিত নেফারতিতির একটি মার্জিত এবং রঙিন আবক্ষ মূর্তি প্রাচীন মিশরীয় শিল্পের অন্যতম পরিচিত নিদর্শন।
আখেনাতেনের রাজত্বের প্রায় ১২ বছর পর হঠাৎ করেই নেফারতিতি ইতিহাস থেকে অদৃশ্য হয়ে যান। তার মৃত্যু সম্পর্কে খুব কম তথ্য জানা যায় এবং তার সমাধি আজও আবিষ্কৃত হয়নি, যা প্রত্নতাত্ত্বিকদের কাছে একটি অনেক বড় রহস্য।
সূত্র: ব্রিটানিকা কিডস অবলম্বনে
ঢাকা/লিপি