বান্দরবানের আলীকদমে ঝিরির পানিতে ভেসে যাওয়া এক পর্যটকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছেন আরও দুজন। নিহত পর্যটকের নাম জুবাইরুল ইসলাম (২৭)। আজ বৃহস্পতিবার ভোরে আলীকদমের সদর বাজার এলাকার মাতামুহুরী নদী থেকে জুবাইরুলের লাশ উদ্ধার করা হয়। নিখোঁজ অন্য দুজন হলেন মো. হাসান ও স্মৃতি আক্তার। নিহত ব্যক্তি ও নিখোঁজ দুজন আলীকদমের দুর্গম কিস্টং পাহাড়ে বেড়াতে গিয়েছিলেন।

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, আজ ভোরে আলীকদম উপজেলা সদর বাজার এলাকায় মাতামুহুরী নদীতে ভাসমান অবস্থায় স্থানীয় বাসিন্দারা এক ব্যক্তির লাশ দেখতে পান। তাঁরা থানায় সংবাদ দিলে পুলিশ এসে লাশটি উদ্ধার করে। লাশের সঙ্গে পাওয়া জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী ওই ব্যক্তির নাম জুবাইরুল ইসলাম। বাড়ি নড়াইল জেলার লোহাগাড়া উপজেলার ধলইতলা পাচুরিয়া গ্রামে, জন্ম ১৭ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৮ সালে। পরে পুলিশ জানতে পারে, একটি পর্যটক দলের এক নারীসহ তিনজন নিখোঁজ ছিলেন। তাঁদেরই একজন নিহত জুবাইরুল ইসলাম।

আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলা সদরে ফিরে আসা পর্যটক দলের সদস্য নরসিংদীর রাহাত হোসেন প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, ট্যুর এক্সপার্ট নামের একটি সংস্থার ব্যবস্থাপনায় তাঁরা ৩৩ জনের একটি পর্যটক দল ৮ জুন আলীকদমে এসেছিলেন। তাঁদের মধ্যে ৫ দিনের জন্য বেড়াতে আসেন ১১ জন, বাকি ২২ জন ৩ দিনের জন্য এসেছিলেন। ৮ জুন বিকেলে ৩৩ জনের সবাই আলীকদমের ক্রিস্টং পাহাড়ের উদ্দেশে রওনা দিয়ে রাত ১১টায় খেমচংপাড়ায় পৌঁছান। সেখান থেকে ক্রিস্টং পাহাড় ও আশপাশে ঘুরে ৩ দিনের ভ্রমণসূচি শেষে ২২ জনের দলটি গতকাল বুধবার ফিরে আসছিল। আসার পথে বিকেল চারটার দিকে শামুক ঝরনা নামের একটি ঝিরি পার হওয়ার সময় হঠাৎ প্রবল বৃষ্টি শুরু হয়। দলের ১৯ জন ঝিরি পার হয়ে গেলেও ট্যুর এক্সপার্ট গ্রুপের দুই সহপরিচালক স্মৃতি আক্তার ও মো.

হাসান এবং পর্যটক জুবাইরুল ইসলাম ভেসে যান।

পর্যটক রাহাত হোসেন আরও জানান, বৃষ্টিতে হঠাৎ ঝিরিতে পাহাড়ি ঢল নামে। ঝরনার পানি কমে গেলে তাঁরা খোঁজ নিতে গিয়ে দেখেন, স্মৃতি আক্তার, হাসান ও জুবাইরুল ইসলামের খোঁজ নেই। তাঁদের কী হয়েছে, তাঁরা জানেন না। তিনজনকে না পেয়ে তাঁরা ১৯ জন সারা রাত ঝরনা এলাকায় ছিলেন। সকালেও খোঁজাখুঁজি করে কোনো হদিস পাননি। আলীকদম সদরে ফিরে জুবাইরুল ইসলামের লাশ পাওয়া গেছে জানতে পেরে ধারণা করছেন, তিনজনই পাহাড়ি ঢলে ভেসে গেছেন। এক্সপার্ট গ্রুপের প্রধান বর্ষার নেতৃত্বে ১১ জনের পর্যটক দলটি এখনো পাহাড়ে রয়েছে বলে রাহাত হোসেন জানিয়েছেন। নিখোঁজ স্মৃতি আক্তারের বাড়ি ময়মনসিংহ এবং হাসানের বাড়ি নারায়ণগঞ্জে বলে জানা গেছে।

আলীকদম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবদুল্লাহ আল মুমিন জানিয়েছেন, এখনো নিখোঁজ থাকার দুজনকে উদ্ধারে কাজ করা হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে তিনজনের কী হয়েছে, ফিরে আসা ১৯ জন পর্যটক জানাতে পারছেন না। কারণ, প্রবল বৃষ্টিতে তাঁরা পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিলেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

ম্যাস র‍্যাপিড ট্রানজিটের ভূমি অধিগ্রহণে জালিয়াতি, মামলার অনুমোদন

প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে ভূমি অধিগ্রহণের ৪ কোটি ৭১ লাখ ৭৬ হাজার ৪১৮ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মো. রিয়াজ উদ্দীন নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলার অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন।

বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) দুদকের ডেপুটি ডিরেক্টর আকতারুল ইসলাম (জনসংযোগ) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ঢাকা ম্যাস র‍্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের (লাইন-১) অধীন রূপগঞ্জ উপজেলার পিতলগঞ্জ মৌজায় ডিপো এক্সেস করিডোর নির্মাণের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়। জালিয়াতির মাধ্যমে মো. রিয়াজ উদ্দীন নামে এক ব্যক্তি প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে তার ভূমি অধিগ্রহণের নামে সরকারি কোষাগার থেকে ৪ কোটি ৭১ লাখ ৭৬ হাজার ৪১৮ টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেছেন বলে প্রাথমিক তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে।

আরো পড়ুন:

ফেনীতে ছাত্র হত্যা: শেখ হাসিনাসহ ২২১ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট

নূরের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা, ১২ বছর পর তোলা হলো আবু বকরের দেহাবশেষ

দুদক জানায়, অভিযুক্ত ব্যক্তি রিয়াজ সংশ্লিষ্ট জমির মূল দলিল হারিয়ে গেছে মর্মে নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ থানায় পাঁচটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। পরবর্তীতে তিনি সাব-রেজিস্ট্রি অফিস থেকে ওই দলিলগুলোর সার্টিফায়েড কপি উত্তোলন করে ভূমি অধিগ্রহণ অফিসে জমা দেন এবং ক্ষতিপূরণের টাকা উত্তোলন করেন।

শুধু তাই নয়, ওই রিয়াজের বিরুদ্ধে বড় ধরনের প্রতারণার প্রমাণও পেয়েছে দুদক। সে তার জমি ইতোপূর্বে একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের (সোনালী ব্যাংক) কাছে বন্ধক রাখে এবং বন্ধকী দলিল এখনো কার্যকর রয়েছে।

প্রতারণা ও জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করায় মো. রিয়াজ উদ্দীনের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৪০৬/৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১ ধারায় মামলার অনুমোদন করা হয় বলে দুদক জানায়।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ