রাজশাহীতে ঢাকাগামী টিকিটে বাড়তি ভাড়া আদায়, ৩ কাউন্টারকে জরিমানা
Published: 13th, June 2025 GMT
রাজশাহীতে ঈদফেরত যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগে তিন বাস কাউন্টারকে জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় উপস্থিত যাত্রীদের কাছ থেকে আদায় করা অতিরিক্ত অর্থ ফেরত দেওয়া হয়।
শুক্রবার দুপুরে সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় রাজশাহী বিআরটিএর পক্ষ থেকে এই অভিযান চালানো হয়। বিআরটিএর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আলপনা ইয়াসমিন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন।
অভিযানে দেশ ট্রাভেলস, গ্রামীণ ট্রাভেলস ও ন্যাশনাল ট্রাভেলসের প্রত্যেক কাউন্টারকে পাঁচ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়।
জানা গেছে, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়টি কয়েকজন যাত্রী গোপনে সেনাবাহিনীকে অভিযোগ করেন। পরে কাউন্টার থেকে আদায় করা অতিরিক্ত টাকা তাদের ফেরত দেওয়া হয়েছে।
বিআরটিএর ম্যাজিস্ট্রেট আলপনা ইয়াসমিন বলেন, কথা ছিল ঈদ উপলক্ষে পরিবহন মালিক সমিতি নতুন করে ভাড়া নির্ধারণ করবে। ভাড়া ঈদের আগে ও পরে একইরকম হওয়ার কথা। কিন্তু এই তিনটি গাড়ির কাউন্টারের এসি গাড়ির ভাড়া অতিরিক্ত আদায় করা হয়েছে। ঈদের আগে তাদের এসি গাড়ির ভাড়া ছিল ১ হাজার ১০০ টাকা। কিন্তু ঈদের পরে তা বাড়িয়ে ১ হাজার ৭০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকা নেওয়া হচ্ছিল। এ অপরাধের জন্য আইনে সর্বোচ্চ জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে ১০ হাজার টাকা। কাউন্টারগুলোকে ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।
এর আগে গত বুধবার হিমাচল ট্রাভেলস ও হানিফ ট্রাভেলস নন এসি ভাড়া বেশি আদায় করেছিল। হানিফ ট্রাভেলসের চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ঢাকার ভাড়া ছিল ৮৩০ টাকা। কিন্তু তারা রাজশাহী থেকেই ওই পরিমাণ ভাড়া আদায় করছিল। হিমাচল ট্রাভেলসের কোনো কাউন্টার ছিল না। তারা অন্য বাসের সঙ্গে মিলে যাত্রী পরিবহন করছিল। এই দুটি বাসকে ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়।
শুক্রবার অতিরিক্ত ভাড়া আদায় সম্পর্কে জানতে চাইলে দেশ ট্রাভেলসের ব্যবস্থাপক মাসুদ রানা বলেন, সারা বছর ডিসকাউন্ট দিয়ে ১ হাজার ১০০ টাকায় যাত্রী পরিবহন করেন। ঈদ উপলক্ষে তারা সেই ডিসকাউন্ট উঠিয়ে দিয়েছেন। সেই কারণেই ভাড়া ১ হাজার ৭০০ টাকা হয়েছে।
এ ব্যাপারে ম্যাজিস্ট্রেট আলপনা ইয়াসমিন বলেন, তারা মিটিংয়ের সময় এই কথাটা বলেননি। তাই তাদের জরিমানা করা হয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ঈদয ত র ট র ভ লস র ক উন ট র
এছাড়াও পড়ুন:
দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে হিন্দু নেতাদের সাক্ষাৎ
আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিভিন্ন পূজা উদ্যাপন পরিষদের নেতারা সাক্ষাৎ করেছেন। তাঁরা এ সময় প্রধান উপদেষ্টাকে পূজামণ্ডপ পরিদর্শনের আমন্ত্রণ জানান।
আজ সোমবার বিকেলে হিন্দু নেতারা রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় যান। এ সময় তাঁদের কাছে দুর্গাপূজার প্রস্তুতি ও সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে চান প্রধান উপদেষ্টা। তিনি তাঁদের বলেন, ‘আপনাদের সঙ্গে সব সময় দেখা করার ইচ্ছা থাকলেও সুযোগ হয় না। পূজা উপলক্ষে বছরে একবার সামনাসামনি দেখা হয়, কথা বলার সুযোগ হয়।’
হিন্দুধর্মীয় নেতারা জানান, গত বছরের তুলনায় এ বছর এক হাজারের বেশি পূজামণ্ডপ বেড়েছে। সারা দেশে পূজামণ্ডপ তৈরির কাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছে।
নেতারা বলেন, ধর্ম উপদেষ্টা নিয়মিতভাবে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন, মন্দির পরিদর্শন করেন। দুর্গাপূজা উৎসবমুখর করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হচ্ছে। গতবারের মতো এবারও নির্বিঘ্নে পূজা উদ্যাপন হবে বলে তাঁরা আশা করছি।
এ সময় স্থায়ী দুর্গামন্দিরের জন্য রেল মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জায়গা বরাদ্দ দেওয়ায় প্রধান উপদেষ্টাকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানান মহানগর পূজা কমিটির সভাপতি জয়ন্ত কুমার দেব। তিনি বলেন, ‘এটি একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। এ জন্য আপনাকে বিশেষ ধন্যবাদ। আপনি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে নিয়মিত আমাদের খোঁজখবর রেখেছেন। গত বছরের মতো এ বছরও পূজায় আমরা দুই দিন ছুটি পেয়েছি। এ জন্যও আপনাকে বিশেষ ধন্যবাদ। গত বছর ৮ আগস্ট দেশে ফেরার পরপরই আপনি ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শন করে বলেছিলেন, আমরা সবাই এক পরিবার। আপনার বক্তব্য আমাদের মনে গভীরভাবে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।’
বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর বলেন, ‘গত বছর দুর্গাপূজায় ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শনে গিয়ে আপনি বলেছিলেন, নিরাপত্তা বাহিনী দিয়ে কড়া পাহারা বসিয়ে পূজা হবে এমন দেশ আমরা চাই না। আমরা প্রথমবারের মতো কোনো সরকারপ্রধানের কাছে এমন বক্তব্য শুনেছি। আমরাও আপনার বক্তব্যের সঙ্গে একমত, আমরাও চাই এ আয়োজনে সবাই সহযোগিতা করুক, দেশের সবার মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক থাকুক।’
বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের মহাসচিব এস এন তরুণ দে বলেন, ‘আপনি দায়িত্বে থাকাকালীন দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নজির স্থাপন করেছেন। আমরা লক্ষ করেছি, এক বছর ধরে, বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচুর মিথ্যা কথা, ফেক নিউজ ছড়ানো হচ্ছে। আপনার নেতৃত্বে ধর্ম–বর্ণ–জাতিনির্বিশেষে বাংলাদেশের সব মানুষের কল্যাণ হবে, আমরা সেটাই কামনা করি।’
বৈঠকে ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, ‘ধর্ম মন্ত্রণালয় সব ধর্মের প্রতিনিধিত্ব করে। কল্যাণ ট্রাস্টের মাধ্যমে আমরা কল্যাণকর কর্মসূচিগুলো নিশ্চিত করি।’ এ সময় তিনি বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে সহযোগিতার কথা তুলে ধরেন।
প্রধান উপদেষ্টা সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও পূজার অগ্রিম শুভেচ্ছা জানান এবং দুর্গাপূজা ঘিরে যাতে কোনো ধরনের ষড়যন্ত্রের সুযোগ তৈরি না হয়, সে জন্য সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান।
বৈঠকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার, হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান তপন চন্দ্র মজুমদার ও সচিব দেবেন্দ্র নাথ উঁরাও, রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী পূর্ণানন্দ (একক), বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু সমাজসংস্কার সমিতির সভাপতি অধ্যাপক হীরেন্দ্রনাথ বিশ্বাস, শ্রীশ্রী গীতা হরি সংঘ দেব মন্দিরের সভাপতি বিমান বিহারী তালুকদার, বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন ফ্রন্টের আহ্বায়ক অপর্ণা রায় দাস, শ্রীশ্রী সিদ্ধেশ্বরী কালীমন্দিরের সাধারণ সম্পাদক নারায়ণ চন্দ্র দত্ত ও সিদ্ধেশ্বরী সর্বজনীন পূজা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রণীতা সরকার উপস্থিত ছিলেন।