পটুয়াখালী গলাচিপা ও দশমিনায় বিএনপি এবং গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করায় ১৪৪ ধারার আদেশ অব্যাহত রয়েছে। 

আগামীকাল রবিবার (১৫ জুন) সকাল আটটা পর্যন্ত গলাচিপা পৌর শহর ও আশপাশের এলাকা এবং দশমিনার সদর ইউনিয়ন ও বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নে এ আদেশ বলবৎ থাকবে। 

শুক্রবার এ দুই উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তারা এ আদেশ জারি করেন এবং মাইকিংয়ের মাধ্যমে তা জনসাধারণকে জানিয়ে দেওয়া হয়। এ আদেশ চলাকালীন সকল ধরনের সভা, সমাবেশ, বিক্ষোভ মিছিল, গণজমায়েত, বিস্ফোরক দ্রব্য ও সকল প্রকার দেশীয় অস্ত্র বহন বন্ধ থাকবে। এছাড়া একসঙ্গে পাঁচ বা ততোধিক ব্যক্তির অবস্থান কিংবা চলাচল সম্পূর্ন নিষেধ করা হয়েছে। 

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার রাত দশটায় গলাচিপার পাতাবুনিয়া গ্রামে গণঅধিকার পরিষদ সভাপতি নুরুল হক নুরকে অবরুদ্ধ করে রাখার অভিযোগ এবং রাত আটটার দিকে চরবিশ্বাস বাজারে বিএনপি ও গণ অধিকার পরিষদ নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ এবং বিএনপি কার্যালয় ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।

পটুয়াখালী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাজেদুল ইসলাম সজল (প্রশাসন ও অর্থ) বলেন, “যে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে দুই উপজেলায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া মাঠে সেনাবাহিনী এবং র‍্যাব সদস্য রয়েছে। দুই পক্ষকে আমরা শান্তিপূর্ন অবস্থানে থাকার জন্য অনুরোধ করেছি। তবে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

ঢাকা/ইমরান/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

গলাচিপায় ভিপি নুরকে অবরুদ্ধ করার অভিযোগ 

পটুয়াখালীর গলাচিপায় বিএনপির নেতাকর্মীরা গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরকে (ভিপি নুর) অবরুদ্ধ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। 

বৃহস্পতিবার (১২ জুন) রাত ১০টার দিকে গলাচিপা উপজেলার পাতাবুনিয়া বটতলা বাজারে তাকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। রাত ১টার দিকে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ওই বাজারে গিয়ে মুখোমুখি অবস্থানে থাকা গণঅধিকার পরিষদ ও বিএনপির নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। 

অন্যদিকে, চর বিশ্বাস বাজারে সরকারি চান্দিনা ভিটির ডিসিআর (ডুপ্লিকেট কার্বন রিসিপ্ট বা ভূমি কর ব্যতিত অন্যান্য সরকারি পাওনা আদায়ের রশিদ) পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও সম্পাদকের অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে বিএনপি ও গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এতে ভিপি নুরের ভাই আমীনুল ইসলামসহ দুই পক্ষের ১০ জন আহত হন। পরে চর বিশ্বাস বাজারে ইউনিয়ন বিএনপির অফিস ভাঙচুর করেন গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা। 

নুরুল হক নুরের ছোট ভাই আমীনুল ইসলাম অভিযোগ করেছেন, বাজারে দুই শতাধিক দোকান আছে। ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি বাকের বিশ্বাস ও সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান প্রতিটি দোকান থেকে ৩০ হাজার টাকা করে দাবি করেন ডিসিআর পাইয়ে দেওয়ার নামে, যা সরকারের নির্ধারিত ফি’র চেয়ে অনেক বেশি। অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীরা নুরুল হক নুরের সহযোগিতা চান। গত ১০ জুন নুর এলাকায় গেলে বিষয়টি নিয়ে দোকানিরা অভিযোগ করেন। তিনি তাদের অতিরিক্ত টাকা না দিতে বলেন এবং প্রশাসনের মাধ্যমে ডিসিআর পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেন। এরপর থেকেই স্থানীয় বিএনপির নেতাদের সঙ্গে গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের সম্পর্ক উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।

অভিযোগ অস্বীকার করে চর বিশ্বাস ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. মজিবুর রহমান বলেছেন, “আমরা কর্মীসভা করছিলাম। সে সময় ভিপি নুরের ভাই আমীনুল ও তার লোকজন এসে আলোচনা বন্ধ করতে বলেন। আমরা আলোচনা বন্ধ করলেও অকারণে তারা আমাদের ওপর চড়াও হন এবং চেয়ার ছুড়ে মারেন। এতে আমাদের ৮–১০ জন নেতাকর্মী আহত হন। আমরা কারো কাছ থেকে টাকা নিইনি। ভিপি নুরের শ্যালক এনিম আওয়ামী লীগ নেতাদের সাথে মিলে টাকা তুলেছেন। এখন এর দায় আমাদের ওপর চাপানো হচ্ছে।”

নুরুল হক নুর বলেছেন, “আমি নেতাকর্মীদের নিয়ে পাতাবুনিয়া বাজারের বাদল মেম্বারের স্মরণসভায় গিয়েছিলাম। রাত পৌনে ১০টার দিকে সেই স্মরণসভা শেষে গলাচিপা বাজারে ফেরার পথে শুনতে পাই, বিএনপির নেতাকর্মীরা গাছের গুড়ি এবং দেশীয় অস্ত্র হাতে নিয়ে সড়ক অবরোধ করে রেখেছেন। পরে আমাদের কয়েকজন কর্মী সেখানে বিষয়টি দেখার জন্য গেলে বিএনপি নেতা হাসান মামুনের অনুসারীরা একটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেন এবং কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেন। এছাড়া, দশমিনার কয়েকটি অফিস তারা ভাঙচুর করেন। হাসান মামুনের সঙ্গে আমার কোনো বিরোধ নেই। আমরা যখনই গণসংযোগ করি, তখনই বিএনপির নেতাকর্মীরা আমাদের নেতাকর্মীদের হুমকি দেন। আমাদের সঙ্গে ৫০০ থেকে ৭০০ নেতাকর্মী ছিলেন। আমরা এ ঘটনা মোকাবিলা করতে পারতাম। কিন্তু, এলাকায় অনাকাঙ্ক্ষিত উত্তপ্ত পরিস্থিতি সৃষ্ট হোক, সেটা আমরা চাইনি।”

সার্বিক বিষয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন বিএনপি নেতা হাসান মামুন। সেখানে তিনি লিখেছেন, আওয়ামী লীগ নেতারা গণঅধিকারের ঘাড়ে পা দিয়ে বিএনপি অফিস ভাঙচুর করেছেন। হামলাকারী ও হামলার নির্দেশদাতাদের গ্রেপ্তার করতে হবে। 

পরে কয়েকটি পোস্টে তিনি ভিপি নুরকে উদ্ধারের জন্য সেনাবাহিনী ও পুলিশকে ধন্যবাদ জানান। এছাড়া, তিনি বিএনপি নেতাদের ধৈর্য ধরার আহ্বান জানান।

গলাচিপা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আসাদুজ্জামান বলেছেন, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।

ঢাকা/ইমরান/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পটুয়াখালীতে বিএনপি-জিওপির পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি, ১৪৪ ধারা জারি
  • আশীর্বাদের পরিবর্তে অভিশাপের চিঠি দিয়েছে বিএনপি: ভিপি নুর
  • গলাচিপায় ১৪৪ ধারা জারি
  • গলাচিপায় ভিপি নুরকে অবরুদ্ধ করার অভিযোগ