বিশ্লেষণ: ইসরায়েলিরা এখন বুঝতে পারছে ফিলিস্তিনি ও লেবানিজরা কী ভোগ করছে
Published: 16th, June 2025 GMT
ফিলিস্তিনের গাজাকে মৃত্যু উপত্যকা বানিয়ে, প্রতিবেশী লেবাননকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করে এবার ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামায় ইসরায়েলের জনগণ সত্যিকার অর্থে বিভীষিকার মধ্যে বেঁচে থাকার অভিজ্ঞতা পাচ্ছে। ইরানের পাল্টা হামলায় গুঁড়িয়ে যাওয়া ভবন ও স্থাপনার বাসিন্দারা কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে, ভেঙে পড়া স্থাপনার নিচে চাপা পড়ে মারা যাওয়া স্বজনের লাশ যে কতটা যন্ত্রণার, তা ইসরায়েলিরা এবার উপলবিদ্ধ করছে।
ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে হামলা, পাল্টা হামলার বাস্তবতা নিয়ে আলজাজিরা কথা বলেছে সামরিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক এলিজা জে.
প্যারিস থেকে এলিজা মাগনিয়ার আলজাজিরাকে বলেন, “আমার মনে হচ্ছে পরিস্থিতি আরো খারাপের দিকে যাবে, কারণ এটি সেই যুদ্ধের শুরুর মাত্র কয়েক দিন, যেটা ইসরায়েল ইরানের বিরুদ্ধে ঘোষণা করেছে।”
আরো পড়ুন:
লেবাননে ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় হিজবুল্লাহ কমান্ডার নিহত
মার্কিন প্রতিনিধিদলের সঙ্গে লেবানন প্রেসিডেন্টের বৈঠক
এলিজা ম্যাগনিয়ার একজন অভিজ্ঞ যুদ্ধবিষয়ক সংবাদদাতা ও রাজনৈতিক ঝুঁকি বিশ্লেষক, যার অভিজ্ঞতা ৩৫ বছরেরও বেশি। তিনি মধ্যপ্রাচ্য, উত্তর আফ্রিকা, ইউরোপ এবং পশ্চিম এশিয়ার বিভিন্ন সংঘাত কাভার করেছেন। বর্তমানে তিনি আলরাই মিডিয়া গ্রুপ-এর সঙ্গে যুক্ত এবং ইরাকসংক্রান্ত বিষয়ে পরামর্শ দিয়ে থাকেন। সামরিক বিশ্লেষণ ও রাজনৈতিক ভাষ্য বিশ্লেষণের ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে তার দক্ষতা, যার মাধ্যমে তিনি সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের চলমান সংঘাত ও ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে গভীর পর্যালোচনা হাজির করেন।
আলজাজিরার প্রশ্নের জবাবে এলিজা ম্যাগনিয়ার বলেন, “ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী, সামরিক বাহিনীসহ শীর্ষ কর্মকর্তারা এরইমধ্যে জনগণকে সতর্ক করে দিয়েছেন যে, এই যুদ্ধ খুবই ভয়াবহ হবে এবং এর মূল্য দিতে হবে চরমভাবে। কিন্তু ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ নিয়ে নেতানিয়াহুর পেছনে দাঁড়িয়ে থাকা ইসরায়েলি সমাজ এত ভয়াবহ ধ্বংসের আশঙ্কা করেনি। কারণ ১৯৭৩ সালের পর থেকে ইসরায়েল আর কোনো রাষ্ট্রের সঙ্গে এমন বড় মাত্রার যুদ্ধে যায়নি এবং কখনো এত বড় হামলা সহ্য করেনি; তাও আবার তেল আবিবের কেন্দ্রস্থলে।”
তিনি আরো বলেন, “তাই এখন তারা উপলব্ধি করতে শুরু করেছে ফিলিস্তিনিরা কী ভোগ করেছে, লেবানিজরা কী সহ্য করেছে। তারা নিজের চোখে ধ্বংস দেখতে পাচ্ছে- তেল আবিবে, হাইফায় ভবন ধসে পড়ছে, চারদিকে আগুন জ্বলছে। সম্পত্তি বলে কিছু আর অবশিষ্ট নেই। মাত্র এক দিনেই আটজন নিহত, ২৫০ জন আহত; ইসরায়েলে বহু বছর ধরে এমন কিছু ঘটেনি। এসব পরিস্থিতির জন্য ইসরায়েলি সমাজ মোটেই প্রস্তুত ছিল না।”
ঢাকা/রাসেল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ল ব নন ইসর য় ল ইসর য় ল র পর স থ ত র জন ত ক
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাকায় জামায়াতসহ ৭ দলের বিক্ষোভ আজ, কোথায়, কখন, কোন দল
ফেব্রুয়ারিতে জুলাই সনদের ভিত্তিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানসহ কয়েক দফা দাবিতে রাজধানী ঢাকায় আজ বৃহস্পতিবার একযোগে বিক্ষোভ মিছিল করবে জামায়াতে ইসলামীসহ সাতটি দল।
বিক্ষোভের আগে বায়তুল মোকাররম, জাতীয় প্রেসক্লাবসহ আশপাশের এলাকায় দলগুলো সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করবে। বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এসব কর্মসূচি চলবে।
প্রায় অভিন্ন দাবিতে সাতটি দল তিন দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। আজ প্রথম দিনে রাজধানী ঢাকায়, আগামীকাল শুক্রবার বিভাগীয় শহরে এবং ২৬ সেপ্টেম্বর সব জেলা ও উপজেলায় বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি রয়েছে দলগুলোর।
জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, খেলাফত মজলিস, নেজামে ইসলাম পার্টি, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন ও জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) এই কর্মসূচি পালন করবে। সাতটি দলের কেউ ৫ দফা, কেউ ৬ দফা, কেউ ৭ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করলেও সবার মূল দাবি প্রায় অভিন্ন। দাবিগুলো হচ্ছে
জুলাই সনদের পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন এবং তার ভিত্তিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান, জাতীয় সংসদের উভয় কক্ষে (কেউ কেউ উচ্চকক্ষে) সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতি চালু করা
অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করতে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (সবার সমান সুযোগ) নিশ্চিত করা
বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের সব জুলুম, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা এবং জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা।
সাড়ে চারটায় জামায়াতআজ বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে চারটায় বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ ফটকের সামনে সমাবেশের পর বিক্ষোভ মিছিল করবে জামায়াত। সমাবেশে দলের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের ও সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ারসহ কেন্দ্রীয় ও ঢাকা মহানগর কমিটির নেতারা বক্তব্য দেবেন। জামায়াতের ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখার উদ্যোগে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে।
জামায়াতের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি শফিকুল ইসলাম মাসুদ প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ ফটক থেকে মিছিল বের হয়ে পুরানা পল্টন মোড়, জাতীয় প্রেসক্লাব ও মৎস্য ভবনের পাশ দিয়ে শাহবাগ পর্যন্ত যেতে পারে।
বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ ফটক থেকে মিছিল বের হয়ে পুরানা পল্টন মোড়, জাতীয় প্রেসক্লাব ও মৎস্য ভবনের পাশ দিয়ে শাহবাগ পর্যন্ত যেতে পারে।জোহরের পর ইসলামী আন্দোলনজোহর নামাজের পর বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তরে প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ মিছিল করবে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। মিছিলে নেতৃত্ব দেবেন দলের জ্যেষ্ঠ নায়েবে আমির সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম। ইসলামী আন্দোলনের ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখা যৌথভাবে এ কর্মসূচির আয়োজন করেছে।
জোহর নামাজের পর বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তরে প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ মিছিল করবে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।আসরের পর বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসআসর নামাজের পর বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর ফটকের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করবে মাওলানা মামুনুল হকের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস। গতকাল এক বিবৃতিতে দলের মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ কর্মসূচিতে সবাইকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
এ ছাড়া খেলাফত মজলিস বেলা তিনটায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে বিক্ষোভ সমাবেশ করবে। এতে দলের মহাসচিব আহমদ আবদুল কাদের প্রধান অতিথির বক্তব্য দেবেন।
একই সময়ে, একই জায়গায় মিছিল করবে বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনও। বিকেল চারটায় একই জায়গায় বিক্ষোভ করবে বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি।
আসর নামাজের পর বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর ফটকের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করবে মাওলানা মামুনুল হকের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস।জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) বিকেল সাড়ে চারটায় বিজয়নগর পানির ট্যাংকের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করবে।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, রাজধানীর মধ্য এলাকায় একযোগে সাতটি দলের বিক্ষোভের কর্মসূচি ঘিরে নেতা-কর্মীদের সমাগমে সড়কে যানজটের সৃষ্টি হতে পারে। এ জন্য নগরবাসী দুর্ভোগের সম্মুখীন হতে পারেন। যদিও আজ ও আগামীকাল সকালে বিসিএস পরীক্ষা সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠানের জন্য এই সাত দল কর্মসূচি বিকেলে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) বিকেল সাড়ে চারটায় বিজয়নগর পানির ট্যাংকের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করবে।