এটিএম বুথে কিশোরীকে ধর্ষণে অভিযুক্ত সেই নিরাপত্তাকর্মী গ্রেপ্তার
Published: 16th, June 2025 GMT
গাজীপুরের শ্রীপুরে চাকরি দেওয়ার কথা বলে ডেকে নিয়ে বেসরকারি ব্যাংকের এটিএম বুথের ভেতরে কিশোরীকে (১৪) ধর্ষণের মামলার একমাত্র আসামি মো. লিটন মিয়াকে (৪০) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সোমবার রাত সাড়ে ১০টায় তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানিয়েছেন শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহম্মদ আব্দুল বারিক।
এর আগে গত রোববার দুপুরে শ্রীপুরের মুলাইদ গ্রামের একটি কারখানার সামনে বেসরকারি ব্যাংকের এটিএম বুথের ভেতরে এক কিশোরী ধর্ষণের শিকার হন বলে অভিযোগ ওঠে। অভিযুক্ত মো.
পুলিশ জানায়, এ ঘটনায় কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে গত রোববার রাতে শ্রীপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এতে লিটনকে একমাত্র আসামি করা হয়। ঘটনার পর থেকে লিটন পলাতক ছিলেন। তিনি একাধিকবার স্থান পরিবর্তন করে আত্মগোপনে ছিলেন। সোমবার তাকে ধরতে পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অভিযান চালায়। অভিযানে ময়মনসিংহের ভালুকা থেকে লিটনের পিছু নেয় আভিযানিক দলটি। একপর্যায়ে তাকে গাজীপুরের শ্রীপুরের ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের আনসার রোড এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ঘটনার বিষয়ে কিশোরীর বাবা প্রথম আলোকে মুঠোফোনে বলেছেন, তিনি টাকা তোলার জন্য ওই এটিএম বুথে নিয়মিত আসা-যাওয়া করতেন। একপর্যায়ে নিরাপত্তাকর্মী মো. লিটনের সঙ্গে পরিচয় হয়। তাঁর মেয়ে একটি স্পিনিং কারখানায় স্বল্প বেতনের চাকরি করে। বিষয়টি জানতে পেরে লিটন অন্য কারখানায় ভালো বেতনের চাকরির ব্যবস্থা করে দেওয়ার আশ্বাস দেন। আশ্বাস পেয়ে রোববার তিনি তাঁর মেয়েকে নিয়ে ওই বুথে যান।
ওই কিশোরীর বাবা আরও বলেন, বুথে যাওয়ার পর লিটন মিয়া তাঁর মেয়েকে বুথের ভেতরে থাকা ছোট্ট একটি কক্ষে নিয়ে বসান। অন্য একটি কারখানার এক কর্মকর্তা কিছুক্ষণের মধ্যে সেখানে আসবেন বলে অপেক্ষা করিয়ে রাখেন। একপর্যায়ে লিটন মিয়া ওই কিশোরীকে আরও কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে বলেন এবং তাঁর বাবাকে বাড়িতে চলে যেতে বলেন। কিশোরীর বাবা সেখান থেকে চলে যান। কিছুক্ষণ পর খবর নিতে এসে দেখেন তাঁর মেয়ে কাঁদতে কাঁদতে বুথের ভেতর থেকে বের হচ্ছে। পরে মেয়েকে বাড়িতে নিয়ে গেলে ধর্ষণের বিষয়টি তার মাকে জানায়।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহম্মদ আব্দুল বারিক প্রথম আলোকে বলেন, মামলার পর থেকে পুলিশ সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে আসামি ধরার চেষ্টা করে। অবশেষে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অল্প সময়ের মধ্যে তাঁকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়েছে।
আরও পড়ুনএটিএম বুথে কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ, নিরাপত্তাকর্মী পলাতক১৫ জুন ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর ব থ র ভ তর ল টন ম
এছাড়াও পড়ুন:
ময়মনসিংহে জয়নুল আবেদিন উদ্যানে উচ্ছেদ হচ্ছে মিনি চিড়িয়াখানা ও শিশুপার্ক
ময়মনসিংহ নগরের জয়নুল আবেদিন উদ্যানের ভেতরে মিনি চিড়িয়াখানা ও শিশুপার্ক উচ্ছেদ করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা প্রশাসন ও সিটি করপোরেশনের তিনজন ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে একটি দল সেখানে অভিযান চালায়।
এ ব্যাপারে সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) সুমনা আল মজীদ বলেন, চুক্তির শর্ত ভঙ্গ, অর্থ পরিশোধ না করায় মিনি চিড়িয়াখানা ও পাশের জমিতে করা শিশুপার্কের চুক্তি বাতিল করে উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। উচ্ছেদ হওয়া স্থানে শিশুদের জন্য ‘কিডস জোন’ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শিশুদের জন্য লাইব্রেরি, খেলনা ও কিছু রাইড থাকবে এবং বাগান করে দেওয়া হবে। শিশুরা সেখানে খেলাধুলা করবে।
সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, জয়নুল আবেদিন উদ্যানে মিনি চিড়িয়াখানা ও চিড়িয়াখানাসংলগ্ন শিশুপার্কের ভূমি ইজারার চুক্তিপত্র বাতিল করে গত ২৬ জুন ইজারাগ্রহীতা মো. সেলিম মিয়াকে চিঠি দেয় সিটি করপোরেশন। চিঠি পাওয়ার তিন দিনের মধ্যে সেখানকার অবকাঠামো ও পশুপাখি নিজ হেফাজতে সরিয়ে নেওয়ার অনুরোধ করা হয়। ইজারাগ্রহীতা সেলিম মিয়া হলেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিটি করপোরেশনের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মাহবুবুর রহমানের শ্যালক। চলতি বছরের ৮ মার্চ গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন মাহবুবুর রহমান।
তবে সেলিম মিয়ার নামে পার্ক ইজারা নেওয়া হলেও এটি নিয়ন্ত্রণ করতেন আওয়ামী লীগ নেতা ও কাউন্সিলর মাহবুবুর রহমান। ২০১৪ সালের ৩০ জুন তৎকালীন পৌরসভা মিনি চিড়িয়াখানাটি ১০ বছরের জন্য ইজারা দেয়। ২০২৪ সালের ৩০ জুন ইজারার চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়। ৬ লাখ টাকায় চিড়িয়াখানাটি ইজারা দিলেও মেয়াদ শেষ হলেও মাত্র ৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা জমা দেওয়া হয়। মিনি চিড়িয়াখানার পাশের জমিটি ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর ১০ হাজার টাকা জমা দিয়ে মাসিক ১ হাজার টাকা ভাড়ায় চুক্তি সম্পাদন করা হয়। এটিও ইজারা দেওয়া হয় সেলিম এন্টারপ্রাইজকে। দুই শতক জমি ১০ বছরের জন্য ইজারা দেওয়া হলেও চুক্তিপত্রে শিশুপার্কের কথা সম্পূর্ণ গোপন রাখা হয় বলে সিটি করপোরেশনের চুক্তি বাতিলের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
আজ দুপুর ১২টার দিকে সিটি করপোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সিরাজুল ইসলামসহ তিনজন ম্যাজিস্ট্রেট সেখানে অভিযান চালান। সেনাবাহিনী, পুলিশ, র্যাব, ফায়ার সার্ভিস, আনসার, বন বিভাগের সদস্যরা এতে অংশ নেন। এক্সকাভেটর দিয়ে অবৈধ স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া জয়নুল উদ্যান এলাকায় ভ্রাম্যমাণ দোকানপাটও উচ্ছেদ করা হয়েছে। বেলা তিনটায় এই প্রতিবেদন লেখার সময় মিনি চিড়িয়াখানা ও শিশুপার্কে অভিযান চলছিল।
মিনি চিড়িয়াখানায় প্রাণীগুলোকে হেফাজতে নিয়েছেন বন বিভাগের কর্মীরা