গাজীপুরে অটোরিকশা ও লেগুনার সংঘর্ষে বৃদ্ধ নিহত
Published: 18th, June 2025 GMT
গাজীপুর মহানগরীর শিববাড়ি এলাকায় লেগুনা ও অটোরিকশা সংঘর্ষে এক বৃদ্ধ নিহত হয়েছেন।
বুধবার (১৮ জুন) সকাল ৯টার দিকে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের সামনে ঢাকা-জয়দেবপুর সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত আব্দুল মালেক মৃধা (৮০) শরীয়তপুরের গোসাইহাট থানার কোদালপুর এলাকার বাসিন্দা ছিলেন।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানিয়েছে, গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ীর আমবাগ এলাকায় পরিবার নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকতেন আব্দুল মালেক মৃধা। সকালে তিনি ছেলেকে নিয়ে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হন। চান্দনা চৌরাস্তা থেকে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় করে হাসপাতালে যাচ্ছিলেন তারা। ঢাকা-জয়দেবপুর সড়কের শিববাড়ি এলাকায় পৌঁছালে একটি লেগুনার সঙ্গে অটোরিকশার সংঘর্ষ হয়। এতে আব্দুল মালেক মৃধাসহ ৫-৬ জন আহত হন। স্থানীয়রা তাদেরকে উদ্ধার করে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেন। সেখানে চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে আব্দুল মালেক মৃধাকে মৃত ঘোষণা করেন। অন্যরা চিকিৎসাধীন আছেন।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) কায়সার হাসান ফারুক জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার পর লেগুনাসহ চালককে আটক করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
ঢাকা/রেজাউল/রফিক
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
কক্সবাজারের সাবেক ডিসি ও জেলা জজসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি পেছাল
জালিয়াতির একটি মামলায় কক্সবাজারের সাবেক জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. রুহুল আমিন, সাবেক জেলা ও দায়রা জজ মো. সাদিকুল ইসলাম তালুকদারসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি পিছিয়েছে। মাতারবাড়ীতে তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পে ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণের ২৩ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে করা মামলা থেকে ডিসির নাম বাদ দিতে এ জালিয়াতি হয় বলে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তদন্তে উঠে আসে।
আজ মঙ্গলবার চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মিজানুর রহমান এই মামলায় অভিযোগ গঠনের শুনানির দিন ধার্য করেছিলেন। তবে আসামিপক্ষ সময়ের আবেদন করলে আদালত তা মঞ্জুর করে পরবর্তী শুনানির দিন আগামী ১ জুলাই ধার্য করেন।
দুদকের আইনজীবী কাজী ছানোয়ার আহমদ প্রথম আলোকে বলেন, বিচারকাজের জন্য কক্সবাজার থেকে মামলাটি চট্টগ্রামে আসে। ফলে আসামিপক্ষ আদালতে জামিন বর্ধিত করার আবেদন করলে আদালত তা মঞ্জুর করেন এবং আগামী ধার্য দিন পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন জামিন বহাল রাখেন।
কাজী ছানোয়ার আহমেদ আরও বলেন, কক্সবাজারের সাবেক ডিসি রুহুল আমিন ২০১৭ সালে দুর্নীতির মামলায় কারাগারে যান। পরে তিনি জামিনে আসেন। এর আগে তাঁকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়। সাবেক জেলা ও দায়রা জজ সাদিকুল ইসলাম বর্তমানে অবসরে রয়েছেন।
অন্য তিন আসামি হলেন কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের আইনজীবী মোস্তাক আহমদ চৌধুরী, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নাজির স্বপন কান্তি পাল এবং আদালতের স্টেনোগ্রাফার জাফর আহমদ।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ১৯ নভেম্বর কক্সবাজারের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতে মাতারবাড়ীর বাসিন্দা এ কে এম কায়সারুল ইসলাম চৌধুরী এই দুর্নীতির ঘটনায় তৎকালীন জেলা প্রশাসক মো. রুহুল আমিনকে প্রধান আসামি করে ২৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দেয় দুদককে।
তবে মামলার পরপরই তৎকালীন জেলা ও দায়রা জজ সাদিকুল ইসলাম তালুকদার দুদকের প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো কাগজপত্র থেকে ১ নম্বর আসামি রুহুল আমিনের নাম বাদ দিয়ে তা পাঠান। বিষয়টি জানাজানির পর বাদী কায়সারুল একই আদালতে রুহুল আমিন, সাদিকুল ইসলামসহ সাতজনের বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগে আরেকটি মামলা করেন।
সেই মামলার তদন্ত শেষে দুদকের চট্টগ্রাম কার্যালয়ের উপপরিচালক রিয়াজউদ্দিন গত বছরের ১ জুলাই পাঁচজনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৪ সালের ১৯ নভেম্বর বাদীপক্ষের আইনজীবী মোস্তাক আহমদ চৌধুরী মামলার সব নথিপত্র আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা ফরিদ আহমদের কাছে দাখিল করেন। পরদিন (২০ নভেম্বর) সকালে আদালতের কর্মচারী সৈয়দ আকবর নথিপত্র কক্সবাজার ডাকঘরে জমা দেওয়ার জন্য রওনা দিলে তাঁকে আবার আদালতে ফিরিয়ে এনে খামটি স্টেনোগ্রাফার জাফর আহমদের মাধ্যমে জেলা ও দায়রা জজের কাছে পাঠানো হয়। পরে নানা কৌশলে আবেদন থেকে জেলা প্রশাসকের নাম বাদ দেওয়া হয়।
তদন্তে আরও উঠে আসে, ফৌজদারি দরখাস্ত রেজিস্টারে ২৮ জন আসামির নাম থাকলেও পরে ৩টি পৃষ্ঠা পাল্টে ১ নম্বর আসামি হিসেবে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. জাফর আলমের নাম বসানো হয় এবং বাদীর স্বাক্ষর জাল করে ২৮ জনের জায়গায় ২৭ জনকে আসামি দেখিয়ে দুদকে নথি পাঠানো হয়। এই জাল স্বাক্ষরের বিষয়টি সিআইডির হস্তলিপি বিশারদের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে।
দুদক ও আদালত সূত্র জানায়, মাতারবাড়ী তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য ১ হাজার ৪১৪ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়। ক্ষতিপূরণ বাবদ বরাদ্দ ছিল ২৩৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে চিংড়িঘের বাবদ ৪৬ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়। ওই অর্থের মধ্যে মনগড়া ২৫টি ঘের দেখিয়ে ১৯ কোটি ৮২ লাখ টাকার বেশি তুলে আত্মসাৎ করা হয়। আরও বিভিন্ন উপায়ে আত্মসাৎ করা হয় টাকা।
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের ১৮ নভেম্বর প্রথম আলোতে ‘শুরুতে লুট ২২ কোটি টাকা’ শিরোনামে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এর পরদিন মামলাটি দায়ের হয়।
শুরুতে লুট ২২ কোটি টাকা