নেই যাত্রী ছাউনি, বৃষ্টিতে ভিজে ট্রেনে ওঠানামা
Published: 19th, June 2025 GMT
পাবনার ঈশ্বরদী বাইপাস স্টেশনে যাত্রী ছাউনি না থাকায় বর্ষায় দুর্ভোগে পড়তে হয় ট্রেন যাত্রীদের। প্রতিদিন বৃষ্টিতে ভিজে রোদে পুড়ে ট্রেনে ওঠানামা করতে হয়। এ ছাড়া ট্রেনের পা-দানির উচ্চতার চেয়ে নিচু প্ল্যাটফর্মের কারণেও ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে প্রতিদিন।
দীর্ঘদিন এ অবস্থা চলতে থাকলেও ছাউনি নির্মাণসহ অন্য সমস্যার সমাধানে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। তবে রেল কর্তৃপক্ষ বলছে, শিগগিরই ছাউনি নির্মাণকাজ শুরু হবে।
সরেজমিন বাইপাস স্টেশনে গিয়ে দেখা গেছে, বড়সড় এই প্ল্যাটফর্মে ১২ থেকে ১৪ বগির আন্তঃনগর কোনো ট্রেন এসে দাঁড়ালে প্ল্যাটফর্মটি পূর্ণ হয়ে যায়। কিন্তু প্ল্যাটফর্মে ছাউনি না থাকায় শুষ্ক মৌসুমে প্রচণ্ড রোদের তাপ আর বর্ষায় বৃষ্টির পানি মাথায় নিয়ে ট্রেনে উঠতে হয়। এ ছাড়া ট্রেন থেকে প্ল্যাটফর্ম অনেক নিচে থাকায় বগিতে উঠতে ও নামাতে যাত্রীদের কষ্ট করতে হয়। মাঝেমধ্যেই পা পিছলে অনেকে নিচে পড়ে আঘাতপ্রাপ্ত হন। বৃষ্টিতে ভিজে ট্রেনে ওঠানামার কষ্ট ও ভোগান্তির কথা জানিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে যাত্রীরা দ্রুত প্ল্যাটফর্মে শেড নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন।
বৃষ্টির সময় ট্রেনের জন্য স্টেশনে অপেক্ষমাণ সিল্কসিটি ট্রেনের যাত্রী মাহ্বুবুর রহমান পলাশ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, যাত্রীসেবা বাড়ানোর কথা বলা হলেও বৃষ্টিতে ভিজে, বৃষ্টির পানি মাথায় নিয়ে ট্রেনে উঠতে হচ্ছে। এটা কেমন যাত্রীসেবা।
ট্রেনযাত্রী দুর্জয় ইসলাম বলেন, শুধু বৃষ্টিতে নয়; এ স্টেশনে এসে প্রচণ্ড গরমও সহ্য করতে হয়। যাত্রীদের দুর্ভোগ কমাতে অবিলম্বে শেড নির্মাণ করা জরুরি।
পশ্চিমাঞ্চল রেলের পাকশী বিভাগীয় কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ঈশ্বরদী বাইপাস স্টেশনটি চালু হয় ২০০২ সালে। দ্বিতল ভবনের স্টেশনটির নিচে রয়েছে স্টেশন মাস্টারের কক্ষ, টিকিট কাউন্টার, যাত্রীদের বিশ্রামাগার ও একটি ওয়াশরুম। ভবনটির দোতলায় রয়েছে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ। স্টেশনে রাজশাহী থেকে ঢাকার মধ্যে চলাচলকারী ট্রেন ও যাত্রীর সংখ্যা বাড়ায় প্ল্যাটফর্মের পরিধি বাড়ানো হলেও কোনো শেড নির্মাণ করা হয়নি। এ কারণে রোদ ও বৃষ্টিতে যাত্রীদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
রাজশাহী-ঢাকাগামী আন্তঃনগর সিল্কসিটি, পদ্মা ও ধূমকেতু এক্সপ্রেস, চিলাহাটি-ঢাকাগামী চিলাহাটি এক্সপ্রেস এবং ঢালারচর-রাজশাহীগামী ঢালারচর এক্সপ্রেস ট্রেন বাইপাস স্টেশনে থেমে থাকে। এ ছাড়া ঢাকা-পঞ্চগড়গামী একতা ও ঢাকা-বুড়িমারীগামী বুড়িমারী এবং পঞ্চগড়-ঢাকাগামী দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেনও থামে এই স্টেশনে। এসব ট্রেনে ঈশ্বরদী বাইপাস স্টেশন হয়ে বিপুলসংখ্যক যাত্রী নির্দিষ্ট গন্তব্যে যাতায়াত করে থাকে।
বাইপাস স্টেশনের স্টেশন মাস্টার সাইফুল ইসলাম জানান, যাত্রীদের বৃষ্টিতে ভিজে ট্রেনে ওঠা ও রোদে কষ্ট পাওয়ার বিষয়টি পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে।
রেলওয়ে পাকশী বিভাগীয় প্রকৌশলী-১ বীরবল মণ্ডল জানান, ঈশ্বরদী বাইপাস স্টেশন থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে চলাচলকারী ট্রেনের যাত্রীদের দুর্ভোগ কমাতে প্ল্যাটফর্মে শেড নির্মাণ জরুরি। তবে এটি সেতু প্রকৌশল বিভাগের আওতাধীন।
যোগাযোগ করা হলে রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় সেতু প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন বলেন, স্টেশনে শেড নির্মাণের প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। বরাদ্দ পেলেই কাজ শুরু করা হবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: প ল য টফর ম প রক শ
এছাড়াও পড়ুন:
আরেক ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা উত্থানের সম্ভাবনা জিইয়ে রেখে ঘরে ফিরতে পারি নাই: নাহিদ ইসলাম
আওয়ামী লীগ সরকার পতনের আন্দোলনে এক দফা ঘোষণার বর্ষপূর্তির দিনে সেই কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমাবেশ করে দেশে ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা সমূলে উৎপাটনের লক্ষ্যের কথা জানিয়েছেন নাহিদ ইসলাম। গত বছর ওই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদই শেখ হাসিনার সরকার পতনের এক দফা ঘোষণা করেছিলেন।
আজ রোববার সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমাবেশে দাঁড়িয়ে তিনি অভ্যুত্থানের পরে তরুণদের নেতৃত্বাধীন দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) গড়ে তোলার পেছনে যে আকাঙক্ষা কাজ করেছে, সেটি তুলে ধরেছেন।
নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘আমাদের এক দফা দাবি ছিল, আমরা ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ করে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত করতে চাই। কেবল এক ফ্যাসিবাদী শাসন ব্যবস্থা হটিয়ে, আরেক ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা উত্থানের সম্ভাবনা জিইয়ে রেখে আমরা নিশ্চিন্তে ঘরে ফিরতে পারি নাই। বরং রাষ্ট্র ও সমাজে দীর্ঘদিন জেঁকে বসা এই ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা সমূলে উটপাটনে আপনাদের তীব্র আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিতে আমরা আপনাদের ছাত্র–শ্রমিক–জনতা ও রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি গঠন করেছি।’
সমাবেশ থেকে ‘নতুন বাংলাদেশের ইশতেহার’ শিরোনামে ২৪ দফা ঘোষণা করেন নাহিদ ইসলাম। এতে সংবিধান সংশোধনসহ রাষ্ট্র ও জনগণের উন্নতির লক্ষ্যে বিভিন্ন দাবি, এনসিপির ভবিষ্যৎ কার্যক্রমের রূপরেখা তুলে ধরা হয়।
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পরে বাংলাদেশে এই কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আমরা আপনাদের সামনে দাঁড়িয়ে আমাদের দ্বিতীয় রিপাবলিকের ২৪ দফা ইশতিহার ঘোষণা করছি।’
জাতীয় নাগরিক পার্টির এই ২৪ দফার মধ্যে রয়েছে, জুলাই অভ্যুত্থানের স্বীকৃতি ও বিচার; নতুন সংবিধান ও সেকেন্ড রিপাবলিক; গণতন্ত্র ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের সংস্কার; ন্যায়ভিত্তিক বিচারব্যবস্থা ও আইন সংস্কার; সেবামুখী প্রশাসন ও দুর্নীতি দমন; ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ ও স্থানীয় সরকার; টেকসই উন্নয়নের জন্য শিক্ষানীতি; সার্বজনীন স্বাস্থ্য; ধর্ম, সম্প্রদায় ও জাতিসত্ত্বার মর্যাদা; কল্যাণমুখী অর্থনীতি; জনবান্ধব পুলিশ; নারীর নিরাপত্তা, অধিকার ও ক্ষমতায়ন; গবেষণা, উদ্ভাবন ও তথ্যপ্রযুক্তি বিপ্লব; তারুণ্য ও কর্মসংস্থান; বহুমুখী বাণিজ্য ও শিল্পায়ন নীতি; টেকসই কৃষি ও খাদ্য সার্বভৌমত্ব; স্বাধীন গণমাধ্যম ও শক্তিশালী নাগরিক সমাজ; শ্রমিক-কৃষকের অধিকার; জাতীয় সম্পদ ব্যবস্থাপনা, নগরায়ন, পরিবহন ও আবাসন পরিকল্পনা; জলবায়ু সহনশীলতা ও নদী-সমুদ্র রক্ষা; প্রবাসী বাংলাদেশির মর্যাদা ও অধিকার; বাংলাদেশপন্থী পররাষ্ট্রনীতি ও জাতীয় প্রতিরক্ষা কৌশল।