নিজ বাড়িতেই ধর্ষণের শিকার হয় তৃতীয় শ্রেণির শিশু শিক্ষার্থী। মেয়েটি এখন আর ঘর থেকে বের হয় না, ভয় পায়। অন্য শিশুদের সঙ্গেও খেলতে যায় না। মাদ্রাসায়ও যায় না বলে আক্ষেপ করে কথাগুলো বলেন শিশুটির বাবা।

ধর্ষণের ঘটনায় সাইফুল ইসলাম নামে যুবকের বিরুদ্ধে মামলা করে বিপাকে পড়েছেন শিশুটির বাবা। মামলার ১৪ দিনেও আসামি গ্রেপ্তার হয়নি। উল্টো আসামির পরিবারের হুমকিতে আতঙ্কে দিন কাটছে বাদীর পরিবারের। ঘটনাটি ঘটেছে ঘাটাইল উপজেলার লক্ষিন্দর ইউনিয়নের একটি গ্রামে।

জানা গেছে, গত ৩ জুন বিকেলে বাড়িতে কেউ না থাকায় ঘরেই ছিল ১১ বছরের শিশুটি। এই সুযোগে ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেয় স্থানীয় যুবক সাইফুল ইসলাম। শিশুটির ওড়না দিয়ে তার হাত-পা বেঁধে ধর্ষণ করে। চিৎকার করলে হাত দিয়ে মুখ চেপে ধরে। কিছুক্ষণ পর শিশুটির দাদি বাড়িতে এসে ঘরের দরজা বন্ধ দেখে ধাক্কা দিয়ে ঘরে ঢুকে সাইফুলকে দেখতে পান। তাকে ধাক্কা দিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যান অভিযুক্ত যুবক।

শিশুটির বাবা জানান, তার মেয়েকে ছোট রেখে স্ত্রী অন্যত্র চলে যায়। দাদির কাছেই বড় হচ্ছে মেয়েটি। স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে। ঘটনার দিন তিনি অটোরিকশা চালাতে বাড়ির বাইরে ছিলেন। তার মাও বাড়িতে ছিলেন না। এই সুযোগে তার মেয়েটির সর্বনাশ করেছে এলাকার সাইফুল। ঘটনার পর থানায় মামলা করেছেন। ১৪ দিন পার হলেও আসামি গ্রেপ্তার হয়নি। প্রথম দুই-তিন দিন পুলিশ আসামি ধরতে আগ্রহ দেখালেও এখন আর তা দেখা যাচ্ছে না। 

বাদী বলেন, আসামির বাবা প্রবাসী। অনেক টাকার মালিক। মামলা করায় আসামির চাচা জয়নাল আবেদিন, আব্দুল কদ্দুস ও মফিজ উদ্দিন তাকে প্রতিনিয়ত হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। রাস্তায় দেখা হলে আসামির চাচারা বলেন ‘মামলা করলি পুলিশ দিয়া তো ধরাবার পাইলি না। দিন এইডা না, দিন সামনে আবো। আমরা ধান (বিএনপি) করি। টেহা (টাকা) দিয়া জজ কিনা ফালামু। আমাগো পোলারে জামিন করামু।’ 

তাড়াতাড়ি এ বিষয়ে আপস না করলে হাত-পা ভেঙে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ বাদীর। তবে হুমকি দেওয়ার কথাটি অস্বীকার করেন আসামি সাইফুল ইসলামের চাচা আব্দুল কদ্দুস।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ঘাটাইল সাগরদীঘি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের উপপরিদর্শক আব্দুল মতিন। আসামির পরিবার থেকে যে হুমকি দেওয়া হচ্ছে তা তদন্ত কর্মকর্তাকে কয়েক দফা ফোন করে জানানো হয়েছে বলে দাবি বাদীর।

বাদীকে হুমকি দেওয়ার বিষয়ে অবগত আছেন বলে জানান মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আব্দুল মতিন। তিনি বলেন, বাদীকে হুমকির বিষয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ধর্ষণের ঘটনার পর বিষয়টি আপসে মীমাংসার জন্য স্থানীয়রা চেষ্টা করেন। পরে মামলা হলে আসামি ধরতে একাধিক অভিযান চালানো হয়েছে। অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

ঘাটাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মোশাররফ জানান, স্থানীয়ভাবে আপস না করতে পেরে ঘটনার তিন দিন পর শিশুটির বাবা থানায় এসে মামলা করেন। মামলার পর আসামি বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। এরই মধ্যে বিভিন্ন জায়গায় আসামি ধরতে অভিযান চালানো হয়েছে। অভিযান চলমান রয়েছে।


 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ত কর মকর ত তদন ত ক আস ম র র পর ব ঘটন র

এছাড়াও পড়ুন:

মতবিনিময় সভা: নির্বিঘ্নে দুর্গাপূজা উদ্‌যাপনে সবার সহযোগিতা আহ্বান

হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের শারদীয় দুর্গাপূজা উদ্‌যাপনে সবাইকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানিয়েছে ঢাকা সেনানিবাসের ১০ সিগন্যাল ব্যাটেলিয়ন। দুষ্কৃতিকারীর বিষয়ে বা কোনো অঘটনের আশঙ্কা থাকলে, সে বিষয়ে প্রশাসনকে জানানোর আহ্বান জানানো হয়েছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা সেনানিবাসের ১০ সিগন্যাল ব্যাটেলিয়নে ভাষানটেক আর্মি ক্যাম্প আয়োজিত শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে এক মতবিনিময় সভায় এ আহ্বান জানানো হয়। এ সভায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, প্রশাসনের প্রতিনিধি, রাজনৈতিক সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ১০ সিগন্যাল ব্যাটেলিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল হামিদ বলেন, দুর্গাপূজার সময় কিছু দুষ্কৃতিকারী পরিস্থিতি নস্যাৎ করার চেষ্টা করে। কিন্তু আমরা কাউকে সেই সুযোগ দেবো না।

তিনি আরও বলেন, ‘শুধু প্রতিমা ভাঙচুর নয়, পূজায় আসা ব্যক্তিদের হয়রানি বা অসম্মান করা অপরাধ। কেউ এমন ঘটনায় জড়িত থাকলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী—আর্মি, পুলিশ, বিজিবি—সবাই মিলে কাজ করছে।’

আরও পড়ুনদুর্গাপূজায় নিরাপত্তায় সতর্ক অবস্থায় থাকবে পুলিশ: আইজিপি১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সভায় ভাষানটেক থানা জামায়াতে ইসলামীর নেতারা জানান, গত বছরের মতো এবারও দুর্গাপূজায় এলাকাবাসীর জন্য মেডিকেল ক্যাম্প স্থাপন করবে সংগঠনটি। নেতারা জানান, চার-পাঁচ দিন পূজামণ্ডপ এলাকায় ভিড় থাকে। অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাই আমরা চিকিৎসক ও ওষুধসহ মেডিকেল ক্যাম্পের ব্যবস্থা করব।

এ প্রসঙ্গে লেফটেন্যান্ট কর্নেল হামিদ বলেন, যে কোনো উদ্যোগ পূজা উদ্‌যাপন কমিটির সঙ্গে সমন্বয় করে নিতে হবে। কারণ, এটি তাঁদের আয়োজন, তাঁদেরই জানাতে হবে যে, তাঁরা কোন ধরনের সহায়তা চান।

আরও পড়ুনসবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় দুর্গাপূজা নির্বিঘ্নে অনুষ্ঠিত হবে: ডিএমপি কমিশনার৯ ঘণ্টা আগে

লেফটেন্যান্ট কর্নেল হামিদ আরও বলেন, ‘আমরা ২৪ ঘণ্টা প্রস্তুত আছি। কোনো সমস্যা হলে জানাবেন। সবাই মিলে যেন সুন্দরভাবে এ আয়োজন শেষ করতে পারি।’

মতবিনিময় সভায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিরপুর বিভাগ ও ভাষানটেক থানার কর্মকর্তা, বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুনপূজামণ্ডপের নিরাপত্তা নিশ্চিতে স্থানীয় নেতা–কর্মীদের এগিয়ে আসার আহ্বান১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ