রাজধানী ঢাকার গাবতলীতে এক নারীকে মারধর করে অ্যাসিড নিক্ষেপ করার অভিযোগে বাংলা সিনেমার খলচরিত্রের অভিনেতা মনোয়ার হোসেন ডিপজলের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে ৩৫ বছর বয়সী ওই নারী বাদী হয়ে এই মামলা করেন। আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য পুলিশের অপরাধ ও তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) নির্দেশ দিয়েছেন। ৬ আগস্ট এই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। ওই আদালতের বেঞ্চ সহকারী সিরাজুল ইসলাম প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আদালত–সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, মামলায় ডিপজলের সঙ্গে ফয়সাল নামের এক ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। মামলার আরজিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ফয়সাল ডিপজলের একান্ত সচিব।

বাদী মামলায় অভিযোগ করেছেন, তিনি ডিপজলের একজন ভক্ত। গত ২ জুন তিনি গাবতলীতে গরুর হাটে যান। সেখানে লোকের জটলা দেখতে পেয়ে তিনি এগিয়ে যান। পরে তিনি জানতে পারেন, সেখানে ডিপজল রয়েছেন। পরে ডিপজল যে কক্ষে ছিলেন, তিনি সেই কক্ষে যান। তিনি ডিপজলের উদ্দেশে বলতে থাকেন, তিনি তাঁর অভিনয়ে মুগ্ধ। ওই নারীর কথা শোনার পর ডিপজল তাঁর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন। ডিপজল ওই নারীকে ওই কক্ষ থেকে চলে যেতে বলেন।

মামলায় ওই নারী আরও অভিযোগ করেছেন, ডিপজল তাঁকে চলে যেতে বললেও ওই নারী সেখানে অবস্থান করেন। এতে ক্ষিপ্ত হন ডিপজল। একপর্যায়ে ডিপজল ওই নারীকে মারধর করে বের করে দিতে বলেন। পরে ডিপজলের সহযোগীরা ওই নারীকে ওই কক্ষ থেকে মারধর করে বের করে দেন। এর প্রতিবাদ করেন ওই নারী। তখন ডিপজলের নির্দেশে ওই নারীর হাত–পা বেঁধে ফেলা হয়। এলোপাতাড়ি মারতে থাকেন ডিপজলের সহযোগীরা। একপর্যায়ে ওই নারীকে অ্যাসিড নিক্ষেপ করা হয়। পরে ওই নারী ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।

ওই নারী চিকিৎসার কাগজপত্র আদালতে জমা দিয়েছেন। মারধর করার ছবিও আদালতে জমা দিয়েছেন তিনি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ওই ন র ক ড পজল র ন ড পজল

এছাড়াও পড়ুন:

স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের মামলায় প্রতিবেশীর যাবজ্জীবন  

পঞ্চগড়ে চতুর্থ শ্রেণির এক ছাত্রীকে ভাতের লোভ দেখিয়ে ধর্ষণের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় তার প্রতিবেশী চাচা নজরুল ইসলামকে (৫৩) যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। 

মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) বিকেলে পঞ্চগড় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মাসুদ পারভেজ আসামির উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন। নজরুল ইসলামের বাড়ি পঞ্চগড় সদর উপজেলায়। 

আদালত সূত্রে জানা যায়, চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী ওই শিশুটি অভাবের মধ্যে বেড়ে উঠছিলেন। বাবা মারা যাওয়ায় তার এক চাচা তার মাকে বিয়ে করেন। অর্ধাহারে অনাহারে দিন কাটত শিশুটির। ২০২২ সালের ১৫ মার্চ ওই শিশুকে ভাত খাওয়ানোর কথা বলে রাস্তা থেকে ডেকে নিয়ে যায় প্রতিবেশী চাচা নজরুল ইসলাম। বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে ঘরে নিয়ে মুখ চেপে ধর্ষণ করা হয় তাকে। এ সময় শিশুটির রক্তক্ষরণ হলে তার হাতে ৫০০ টাকার একটি নোট গুঁজে দেয় নজরুল। বিষয়টি কাউকে জানালে ছুরি দেখিয়ে প্রাণনাশের হুমকিও দেওয়া হয়। এভাবে ভয় দেখিয়ে এক মাস ধরে শিশুটিকে ধর্ষণ করে নজরুল। একপর্যায়ে শিশুটি ২৩ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে শারীরিক পরিবর্তন দেখে পরিবারের সদস্যদের সন্দেহ হয়। পরে শিশুটির মা তাকে ডেকে জিজ্ঞেস করলে সব ঘটনা খুলে বলে সে। বিষয়টি জানাজানি হলে নজরুল ইসলামের ছেলে হামিদার রহমান ১ লাখ টাকার বিনিময়ে বিষয়টি ধামাচাপা ও জোর করে স্ট্যাম্পে সাক্ষর নেওয়ার চেষ্টা করে। এমনকি গর্ভপাত করানোর জন্য চাপ দিতে থাকে। স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরাও সমঝোতার জন্য চাপ দিতে থাকেন। একপর্যায়ে ন্যায়বিচারের আশায় আদালতে নজরুল ও তার ছেলে হামিদারকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন শিশুটির মা। দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে মঙ্গলবার আদালত রায় ঘোষণা করেন। তবে, রায়ে নজরুলের ছেলে হামিদারকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।

আদালতের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর জাকির হোসেন বলেছেন, আমরা ওই শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ আদালতে সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি। আদালত আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন। এই রায়ে আমরা এবং বাদী সন্তুষ্ট। 

ঢাকা/নাঈম/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের মামলায় প্রতিবেশীর যাবজ্জীবন