বরিশালে পরিবহনশ্রমিক-শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ, আহত ৬০
Published: 15th, November 2025 GMT
বরিশালের কেন্দ্রীয় নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনালে অর্ধেক ভাড়া দেওয়া নিয়ে বাসের শ্রমিকদের সঙ্গে ব্রজমোহন (বিএম) কলেজের শিক্ষার্থীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। এতে দুই পক্ষের প্রায় ৬০ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। এ সময় অর্ধশতাধিক বাস ভাঙচুর করা হয়।
শনিবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে শুরু হওয়া সংঘর্ষ রাত সোয়া আটটা পর্যন্ত চলে।
বরিশাল বিমানবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামুন উল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, শ্রমিক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে থাকায় টার্মিনাল এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, সন্ধ্যা সাতটার দিকে বিএম কলেজের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনালে আসেন। এ সময় সেখানে থামিয়ে রাখা বাসগুলোতে ভাঙচুর শুরু করেন তাঁরা। পরিবহনশ্রমিকেরা প্রতিরোধে এগিয়ে এলে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া শুরু হয়। প্রায় দেড় ঘণ্টা দুই পক্ষের মধ্যে এ পরিস্থিতি চলে। এ সময় একটি বাসে আগুন দেওয়া হলে তাৎক্ষণিক নিভিয়ে ফেলা হয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। রাত সাড়ে আটটার দিকে পরিস্থিতি শান্ত হলেও পুরো বাস টার্মিনাল ও আশপাশ এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
বিএম কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, অর্ধেক ভাড়া দিয়েই তাঁরা সব সময় বাসে চলাচল করেন। শনিবার বিকেলে মুলাদী থেকে বিএম কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থী বরিশাল আসার পথে অর্ধেক ভাড়া দিতে চাইলে তাঁদের পরিবহনশ্রমিকেরা শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। খবর পেয়ে অন্য শিক্ষার্থীরা বাস টার্মিনালে জড়ো হয়ে শ্রমিকদের বিচার দাবি করলে উল্টো শ্রমিকেরা তাঁদের ওপর হামলা চালান।
বিএম কলেজ শিক্ষার্থীদের দাবি, পরিবহনশ্রমিকদের হামলায় ২৫ জন আহত হয়েছেন।
নথুল্লাবাদের পরিবহন শ্রমিকনেতা আরজু মৃধা বলেন, কলেজ বন্ধের দিনেও অর্ধেক ভাড়া নিয়ে কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে এক পরিবহনশ্রমিকের বিরোধ হয়। এর জের ধরে সন্ধ্যায় বিএম কলেজের কয়েক শ শিক্ষার্থী নথুল্লাবাদ বাসস্ট্যান্ডে এসে বাসে ভাঙচুর চালান। একটি বাসে আগুন দেন। শিক্ষার্থীরা শ্রমিকদের ওপর হামলা চালান। এতে ৩০-৩৫ জন আহত হন। তিনি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
বিএম কলেজের শিক্ষার্থী আকবর মুবিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের অন্তত ১০ জন শিক্ষার্থীকে গুরুতর অবস্থায় শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আমরা আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছি। অন্যথায় কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: জন শ ক ষ র থ অর ধ ক ভ ড় পর স থ ত বর শ ল এ সময়
এছাড়াও পড়ুন:
মানিকগঞ্জে বাসস্ট্যান্ড এলাকায় রাতে ককটেল বিস্ফোরণ, পাহারায় পরিবহনশ্রমিকেরা
কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের অনলাইনে ঘোষিত ‘লকডাউন’ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে মানিকগঞ্জের বাসস্ট্যান্ড এলাকায় গতকাল বুধবার রাতে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এরপর বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও শ্রমিক দলের নেতা-কর্মীরা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অবস্থান নেন।
এ ছাড়া বাস টার্মিনালে রাতে পাহারা দিয়েছেন শ্রমিক দল ও পরিবহন ইউনিয়নের নেতা-কর্মীরা।
সদর থানা-পুলিশ ও সরেজমিন খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গতকাল রাত সাড়ে ৮টার দিকে বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ফলপট্টির সামনে দ্রুতগতিতে আসা একটি পিকআপ ভ্যান থেকে দুর্বৃত্তরা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। এরপর গাড়িটি দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক ধরে আরিচার দিকে চলে যায়। এ ঘটনার পর সেখানে পুলিশ আসে। পরে বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও শ্রমিকদলের নেতা-কর্মীরা জড়ো হন এবং অবস্থান নেন।
গতকাল রাত সাড়ে ১০টার দিকে দেখা যায়, মানিকগঞ্জের বাস টার্মিনালে ৩০-৩৫ বাস রাখা আছে। সেখানে পাহারা দিচ্ছেন কয়েকজন শ্রমিক। আগুন জ্বালিয়ে বসে গল্পগুজব করছেন তাঁরা।
এ সময় পরিবহনশ্রমিক নেতা হাফিজ মিয়া বলেন, আওয়ামী লীগের ঘোষিত ‘ঢাকা লকডাউন’ কর্মসূচিতে আগে দেশের বিভিন্ন স্থানে বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। টার্মিনালে রাখা বাসগুলোর নিরাপত্তায় পাহারার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এর আগে মোটরসাইকেল নিয়েও বিএনপির একদল নেতা-কর্মী মহড়া দেন। তাঁরা ‘আওয়ামী লীগের দালালেরা হুঁশিয়ার সাবধান’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন।
মানিকগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেন বলেন, খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পুলিশ নিয়মিত টহল দিচ্ছে।