জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল রাইজিংবিডি ডটকমে সংবাদ প্রকাশের পর জাতীয় নারী ফুটবল দলের গোলরক্ষক ফেরদৌসী আক্তার সোনালীর পরিবারকে পাকা ঘর করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক।

বিশেষ সুবিধা সম্পন্ন দৃষ্টিনন্দন পাকা ঘর করে দেওয়ার সেই আশ্বাস রূপ নিয়েছে বাস্তবে। শুরু হয়েছে নতুন ঘর নির্মাণের কাজ।

আরো পড়ুন:

রোনালদোর লাল কার্ড, পর্তুগালকে চমকে দিল আয়ারল্যান্ড

হামজার জোড়া গোলের পর ‘পুরোনো রোগে’ জয় বঞ্চিত বাংলাদেশ

শনিবার (১৫ নভেম্বর) সকালে সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়ন বনগ্রামে সোনালীর বাড়িতে গিয়ে নতুন ঘরের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক সাবেত আলী।

চা বাগান শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নে টেকসই আবাসন নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ঘরটি করে দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে। উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা সমাজসেবা অফিস যৌথভাবে বাস্তবায়ন করছেন প্রকল্পটি।

ঘরের নির্মাণ কাজ উদ্বোধনের সময় উপস্থিত ছিলেন- উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন, জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক অনিরুদ্ধ কুমার রায়, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা লায়লা আঞ্জুমান, হাড়িভাসা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইয়েদ নুর-ই-আলম, উপজেলা প্রশাসনিক কর্মকর্তা আব্দুর রশিদ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ফজলে রাব্বী, হাড়িভাসা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জিয়াউল হক জিয়া, ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা আলিউল ইসলাম প্রমুখ।

এর আগে, গত ১৬ আগস্ট রাইজিংবিডি ডটকমে ‘আমি ভ্যান চালাই, আমার মেয়ে বিমানে চড়ে বিদেশে খেলতে যায়’ শিরোনামে একটি বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। সেখানে ফেরদৌসি আক্তার সোনালী ও তার বাবার সংগ্রামী জীবনের গল্প তুলে ধরা হয়। প্রতিবেদনটি নজরে এলে জেলা প্রশাসক সাবেত আলী তাদের খোঁজ নিয়ে পাশে দাঁড়ানোর উদ্যোগ নেন।

পরে ২৫ আগস্ট তার বাড়িতে পরিদর্শনে এসে দৃষ্টিনন্দন একটি পাকা ঘর এবং তার বাবাকে উপার্জনের জন্য ভ্যানের বদলে নতুন ইজিবাইক কিনে দেওয়ার আশ্বাস দেন পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক সাবেত আলী। এ সময় তার বাড়ির সামনের কাঁচা সড়কটিও পাকা করার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।

ফুটবলার ফেরদৌসী আক্তার সোনালী বনগ্রাম এলাকার ফারুক ইসলাম ও মেরিনা বেগম দম্পতির মেয়ে। তিনি হাড়িভাসা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন, অনুশীলন করতেন পঞ্চগড় টুকু ফুটবল একাডেমিতে। বর্তমান বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে (বিকেএসপি) দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী তিনি।

সোনালীর বাবা ফারুক ইসলাম বলেন, “আমার মেয়ের সফলতার কারণে আমি নতুন ঘর পেতে যাচ্ছি। উপার্জনের জন্য একটি ইজিবাইক পেয়েছি। আমি গর্বিত এবং জেলা প্রশাসনের প্রতি কৃতজ্ঞ। সবাই আমার মেয়ের জন্য দোয়া করবেন।”

হাড়িভাসা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইয়েদ নুর-ই-আলম বলেন, “আমাদর ইউনিয়নের প্রত্যন্ত এলাকার দরিদ্র পরিবারের মেয়ে সোনালী ফুটবলে অসাধারণ নৈপুণ্য দেখিয়ে নিজের অবস্থান তৈরি করেছে- এটা আমাদের জন্য গর্বের। জেলা প্রশাসক তার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সোনালীর বাড়িতে আজ ঘর নির্মাণের উদ্বোধন করলেন। এজন্য ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে প্রশাসনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।”

জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক অনিরুদ্ধ কুমার রায় বলেন, “জাতীয় নারী ফুটবল দলের হয়ে সোনালী বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করছেন। তার বাড়িতে গৃহ নির্মাণ কাজের অংশি হতে পেরে গর্ববোধ করছি। সোনালী ফুটবলে ভালো কিছু করবে এই প্রত্যাশা করছি।”

জেলা প্রশাসক সাবেত আলী বলেন, “গণমাধ্যমের খবরে জানতে সোনালীর পরিবারটি অত্যন্ত দরিদ্র। পরে আমি তার বাড়িতে এসে খোঁজ নিয়ে পরিবারটির আর্থিক অবস্থা বোঝার চেষ্টা করি এবং প্রতিশ্রুতি দেই- তার বাবার উপার্জনের জন্য একটি ইজিবাইক কিনে দেওয়া হবে। ইতোমধ্যে সেটি দেয়া হয়েছে।”

তিনি বলেন, “আমরা তাকে গৃহনির্মাণ করে দেওয়ারও আশ্বাস দিয়েছিলাম, সেটির ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করা হলো। আমি কথা দিয়েছিলাম- তার বাড়িতে রাস্তাটি পাঁকা করা হবে। আশা করছি, শীঘ্রই সেটি বাস্তবায়ন হবে।”

সোনালী তার দক্ষতা ও নৈপুণ্য দিয়ে বাংলাদেশ ফুটবলকে ভালো কিছু উপহার দেবেন বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন জেলা প্রশাসক।

ঢাকা/নাঈম/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ টবল কর মকর ত র পর ব র ল র পর র জন য ফ টবল উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

পুসকাস পুরস্কারের লড়াইয়ে ইয়ামাল, মার্তা পুরস্কারে ফের মনোনীত মার্তা

প্রতিবছর ফুটবল–দুনিয়া অসংখ্য গোলের সাক্ষী হচ্ছে। এই গোলগুলোর বেশির ভাগই সাদামাটা। তবে এমন কিছু গোলও আছে, যা অনেক দিন মনে রয়ে যায়। লম্বা সময় পরও স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে উঠে আসে সেসব গোলের প্রসঙ্গ। তেমন কিছু চোখধাঁধানো গোল থেকেই প্রতিবছর দেওয়া হয় সেরা গোলের পুরস্কার পুসকাস ও মার্তা অ্যাওয়ার্ড।

আগে নারী ও পুরুষ ক্যাটাগরি এক করে বছরের সেরা গোলের পুরস্কার ‘পুসকাস অ্যাওয়ার্ড’ দেওয়া হতো। কিন্তু গত বছর থেকে নারীদেরকে আলাদা করে সেরা গোলের জন্য ‘মার্তা পুরস্কার’ দেওয়া হচ্ছে।

গতকাল রাতে প্রকাশ করা হয়েছে পুসকাস ও মার্তা অ্যাওয়ার্ডের সংক্ষিপ্ত তালিকাও। মজার ব্যাপার, গত বছরের মতো এবারও নিজের নামে দেওয়া পুরস্কারের সংক্ষিপ্ত তালিকায় জায়গা পেয়েছেন ব্রাজিলের কিংবদন্তি মার্তা। গতবার অবশ্য তিনি শুধু সংক্ষিপ্ত তালিকাতেই জায়গা পাননি, জিতে নিয়েছিলেন পুরস্কারও।

আরও পড়ুনমার্তার নামের পুরস্কারে মনোনয়ন পেলেন মার্তা নিজেই২৯ নভেম্বর ২০২৪

ফিফার দেওয়া মর্যাদাপূর্ণ এই পুরস্কারের জন্য বিবেচিত হবে গত ১১ আগস্ট ২০২৪ থেকে ২ আগস্ট ২০২৫ সালের মধ্যে করা গোলগুলো। আর উভয় বিভাগে কে পুরস্কার জিতবেন, তা নির্ধারণ করবেন ভক্ত ও বিশেষজ্ঞরা।

মনোনীত গোলগুলোর তালিকা এখন ফিফা ডটকমে দেখা ও ভোট দেওয়ার জন্য উন্মুক্ত। গত বছরের মতো দুটি পুরস্কারের বিজয়ী নির্ধারণ করা হবে সমানভাবে—৫০ শতাংশ ভক্তদের ভোট এবং ৫০ শতাংশ ফিফা লেজেন্ডস প্যানেলের ভোটের ভিত্তিতে।

ফুটবলভক্তরা ফিফা ডটকমে নিবন্ধন করে ভোট দিতে পারবেন। নিবন্ধন সম্পন্ন হলে তিনটি সেরা গোলকে ক্রমানুসারে সাজাতে পারবেন। প্রথম পছন্দের গোলকে দেওয়া হবে ৫ পয়েন্ট, দ্বিতীয় পছন্দকে ৩ পয়েন্ট এবং তৃতীয় পছন্দকে ১ পয়েন্ট।

পুসকাস পুরস্কারের জন্য যেসব গোল সংক্ষিপ্ত তালিকায় জায়গা পেয়েছে, তার মধ্যে লা লিগায় এস্পানিওলের বিপক্ষে লামিনে ইয়ামালের করা গোল আছে। বক্সের বাইরে থেকে বাঁকানো শটে অসাধারণ এক গোল করেন ইয়ামাল। বার্সেলোনার এই স্প্যানিশ তরুণ ছাড়া তালিকায় আছেন আর্সেনালের ডেক্লান রাইস—তিনি রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে ফ্রি–কিক থেকে করেছিলেন দুর্দান্ত এক গোল।

নারীদের মধ্যে নিজের নামে দেওয়া পুরস্কারের জন্য মনোনীত গোলটি মার্তা করেছিলেন গত বছরের ১৭ নভেম্বর। অরল্যান্ডো প্রাইডের হয়ে সেদিন কানসাস সিটির গোলরক্ষকসহ চারজন কাটিয়ে অসাধারণ এক গোল করেছিলেন ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি। এ গোলটিই পুরস্কারের লড়াইয়ে জায়গা করে দিয়েছে তাঁকে। এখন শেষ পর্যন্ত টানা দ্বিতীয়বারের মতো নিজের নামে দেওয়া পুরস্কারটি মার্তার হাতে ওঠে কি না, সেটাই দেখার অপেক্ষা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পুসকাস পুরস্কারের লড়াইয়ে ইয়ামাল, মার্তা পুরস্কারে ফের মনোনীত মার্তা