হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলা সদরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়ায় ১৪৪ ধারার সময়সীমা আরও বাড়িয়েছে প্রশাসন। আজ বুধবার দিবাগত রাত ১২টা পর্যন্ত এ অবস্থা বলবৎ থাকবে। এদিকে দুই দল গ্রামবাসীর উত্তেজনা নিরসনে স্থানীয় রাজনীতিবিদ ও নেতারা বিষয়টি মীমাংসার উদ্যোগ নিয়েছেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো.

রুহুল আমিন বলেন, ‘পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়ার কারণে ১৪৪ ধারা জারির সময়সীমা আরও বাড়ানো হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সামাজিকভাবে মীমাংসার চেষ্টাও চলছে। যদি সেটি হয়, তাহলে উভয় পক্ষের জন্যই ভালো। আমরা সেই অপেক্ষায় আছি।’

আরও পড়ুনফেসবুকে লেখালেখি নিয়ে ২ গ্রামবাসীর সংঘর্ষ, থামাতে নবীগঞ্জ সদরে ১৪৪ ধারা জারি০৭ জুলাই ২০২৫

আজ নবীগঞ্জ সদর এলাকায় থমথমে অবস্থা দেখা গেছে। প্রয়োজন ছাড়া লোকজন খুব একটা বাইরে বের হচ্ছেন না। মৎস্যজীবী সম্প্রদায় ও অমৎস্যজীবী সম্প্রদায়ের কেউ কাউকে নিরাপদ ভাবছেন না বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এ পরিস্থিতিতে আজ দুপুরে উপজেলার আউশকান্দি এলাকায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও নানা পেশার প্রতিনিধিরা মীমাংসার জন্য বসেছেন।

পুলিশ ও কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, বেশ কিছুদিন ধরে দৈনিক আলোকিত সকাল পত্রিকার উপজেলা প্রতিনিধি আশায়েদ আলী ও হবিগঞ্জের সময় পত্রিকার প্রকাশক ও ব্যবস্থাপনা সম্পাদক সেলিম তালুকদারের মধ্যে পেশাগত ও প্রেসক্লাব নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছে। এ নিয়ে উভয় পক্ষই ফেসবুকে পরস্পরের বিরুদ্ধে লেখালেখি করছিলেন। আশায়েদ আলীকে ৪ জুলাই নবীগঞ্জ উপজেলা সদরের মধ্যবাজারে একটি বিপণিবিতানের সামনে পেয়ে তিমিরপুর গ্রামের বাসিন্দা ও গণমাধ্যমকর্মী সেলিম তালুকদার এবং তাঁর লোকজন মারধর করেন বলে অভিযোগ উঠে। এ সময় বিপণিবিতানের ব্যবসায়ীরা হামলাকারী ব্যক্তিদের মধ্য থেকে দুই তরুণকে আটক করে পুলিশে দেন। ওই দুই তরুণের বাড়ি তিমিরপুর গ্রামে।

আরও পড়ুননবীগঞ্জে ফেসবুকে লেখালেখি নিয়ে দুই গ্রামের সংঘর্ষের ঘটনায় আহত ১ জনের মৃত্যু০৭ জুলাই ২০২৫

এ ঘটনায় তিমিরপুর গ্রামের লোকজন উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। তাঁদের অভিযোগ, উপজেলার আনমুন গ্রামের লোকজন তাঁদের পক্ষের দুজনকে ধরে পুলিশে দিয়েছেন। এ নিয়ে দুই–তিন দিন ধরে ওই দুই গ্রামের লোকজন কয়েক দফায় মারামারিতে জড়ান। একপর্যায়ে এ মারামারি এলাকার মৎস্যজীবী সম্প্রদায় ও অমৎস্যজীবী সম্প্রদায়ে বিভক্ত হয়ে পড়েন। আনমুন গ্রামের অধিকাংশ বাসিন্দা মৎস্যজীবী সম্প্রদায়ের। এ সূত্র ধরে সর্বশেষ গত সোমবার দুপুরে ঘোষণা দিয়ে আনমুন ও তিমিরপুর গ্রামের লোকজন লাঠিসোঁটা, বল্লমসহ দেশি অস্ত্র নিয়ে জড়ো হতে থাকেন নিজ নিজ এলাকায়। তিমিরপুর গ্রামের পক্ষ নেয় পার্শ্ববর্তী পূর্ব তিমিরপুর, পশ্চিম তিমিরপুর, আলিপুর, চড়গাঁও এবং আনমুন গ্রামের পক্ষ নেয় রাজনগর, গন্ধা, রাজাবাদসহ কয়েকটি গ্রাম।

সোমবার বিকেলে উপজেলা সদরে মুখোমুখি হয় দুই পক্ষ। প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে চলে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ। এতে শতাধিক মানুষ আহত হন। গুরুতর আহত হয়ে নিহত হন তিমিরপুর গ্রামের ফারুক তালুকদার। ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগে ক্ষতিগ্রস্ত হয় দোকানপাট, হাসপাতাল, ক্লিনিকসহ নানা প্রতিষ্ঠান। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে ওই রাতেই জারি হয় ১৪৪ ধারা। এ অবস্থা গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টায় শেষ হওয়ার কথা থাকলেও হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসনের সিদ্ধান্ত তা যা আজ মধ্যরাত পর্যন্ত বলবৎ থাকবে বলে জানান ইউএনও।

এ বিষয়ে নবীগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র ও নবীগঞ্জ মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক ছাবির আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘উভয় পক্ষের লোকজন নিয়ে আমরা বসেছি। আশা করি, এ বিষয়ে একটা সমাধানে আমরা যেতে পারব।’

আরও পড়ুনদুই সাংবাদিকের বিরোধ থেকে সূত্রপাত, এরপর নবীগঞ্জ শহরে সংঘর্ষ-আগুন, ঝরল প্রাণ০৮ জুলাই ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গ র ম র ল কজন পর স থ ত ১৪৪ ধ র স ঘর ষ উপজ ল আনম ন

এছাড়াও পড়ুন:

কুকসুর গঠনতন্ত্র প্রণয়নে সময়সীমা বেড়েছে

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (কুকসু) গঠনতন্ত্র প্রণয়নের লক্ষ্যে গঠিত কমিটির প্রতিবেদন জমা দেওয়ার সময় আরো ১০ কর্মদিবস বৃদ্ধি করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী মুঠোফোনে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

আরো পড়ুন:

কুরআন অবমাননার প্রতিবাদে কুবিতে কুরআন বিতরণ

কুবি শিক্ষার্থীকে উত্যক্ত করায় ৫ যুবক আটক

এর আগে, গত ২৪ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০৬তম সিন্ডিকেট সভায় সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সোহরাব উদ্দীনকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যদের এই কমিটি গঠন করা হয়েছিল।

ওই কমিটিকে সাত কর্মদিবসের মধ্যে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কিন্তু সময় পার হয়ে গেলেও প্রতিবেদন জমা দিতে পারেননি কমিটির সদস্যরা।

প্রতিবেদন জমা না দেওয়ার বিষয়ে কমিটির আহ্বায়ক ড. মুহাম্মদ সোহরাব উদ্দীন বলেন, “ছাত্র সংসদের মতো গুরুত্বপূর্ণ সংগঠনের গঠনতন্ত্র প্রণয়ন করার জন্য সাত কর্মদিবস যথেষ্ট নয়। আমরা এরই মধ্যে চারদিন কর্মশালার মতো করে বৈঠকে বসেছি। আমরা যেহেতু এটা প্রথম করছি, অনেক বিষয় বিবেচনা করেই করতে হচ্ছে।”

তিনি বলেন, “কমিটির সঙ্গে বৈঠকে বসার পর বুঝতে পারছি, একজন আইনজ্ঞ দরকার। এজন্যই আইন বিভাগের বিভাগীয় প্রধানকে আমরা কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করেছি। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গঠনতন্ত্র প্রণয়ন কমিটির সদস্য অধ্যাপক বিল্লাল হোসেন স্যারকেও আমাদের এখানে নিয়ে আসব, যাতে আমাদের গঠনতন্ত্রটা অন্যদের জন্য অনুসরণীয় হয়। এজন্যই আমাদের আরও কিছুদিন সময় দরকার। আমরা উপাচার্য স্যারের কাছে ১০ কর্মদিবস সময় চেয়েছি এবং তিনি সম্মতি দিয়েছেন।”

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বলেন, “কমিটিতে আরো দুইজন সদস্য বাড়ানো হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরের। তিনি এসে কমিটির সঙ্গে বৈঠক করে গঠনতন্ত্র প্রণয়ন করার জন্য কমিটির পক্ষ থেকে আরো ১০ কর্মদিবস সময় চেয়েছেন। আমরা তাদের সময় দিয়েছি।”

ঢাকা/এমদাদুল/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৪৮তম বিসিএসে নির্বাচিতদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার সূচি প্রকাশ
  • জিমেইলে নতুন এআই সুবিধা
  • কুকসুর গঠনতন্ত্র প্রণয়নে সময়সীমা বেড়েছে
  • হজযাত্রী নিবন্ধনের সময় বাড়ল
  • জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা স্থগিত, কারণ অনিবার্য
  • বিমানে ইন্টার্ন নিয়োগের মৌখিক পরীক্ষার সময়সূচি প্রকাশ