রাজনৈতিক অস্থিরতা, গ্যাস–বিদ্যুতের সংকটসহ বিভিন্ন কারণে দীর্ঘদিন ধরেই প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগে (এফডিআই) মন্দাভাব চলছিল। গত বছরের শেষ ছয় মাসে তা ৭১ শতাংশ কমে যায়। তবে চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে (জানুয়ারি–মার্চ) এফডিআই আসার হার বেড়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে দেশে মোট ১৫৮ কোটি ডলারের এফডিআই এসেছে। এর মধ্যে ৭১ কোটি ডলার ফেরত নিয়ে গেছেন বিদেশি বিনিয়োগকারীরা। সেই হিসাবে, গত জানুয়ারি–মার্চ সময়ে নিট এফডিআই এসেছে ৮৬ কোটি ডলার। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় যা ১১৪ শতাংশ বেশি।

চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে আসা নিট এফডিআই ২০২২ সালের পর সর্বোচ্চ। ওই বছরের জানুয়ারি–মার্চে নিট এফডিআই এসেছিল ৮৯ কোটি ডলার। পরের বছরের একই সময়ে সেটি কমে ৬৩ কোটি ডলারে দাঁড়ায়। গত বছরের প্রথম তিন মাসে নিট এফডিআই এসেছিল মাত্র ৪০ কোটি ডলারের।

বিদেশি কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে কারখানা স্থাপন করে, নতুন প্রকল্পে টাকা আনে কিংবা শেয়ার কেনে—এসবই মোট বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) হিসেবে গণ্য হয়। এই অর্থ অর্থনীতিতে প্রবেশ করে। একই সঙ্গে বিদেশি কোম্পানিগুলো দেশ থেকে তাদের মুনাফা ফেরত নিয়ে যায়, কখনো আবার শেয়ার বিক্রি করে টাকা তুলে নেয়—এটি হলো এফডিআই আউটফ্লো বা বহির্গমন। মোট এফডিআই থেকে আউটফ্লো বাদ দিলে নিট এফডিআই পাওয়া যায়। এই অর্থই শেষ পর্যন্ত দেশের অর্থনীতিতে থাকে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে নিট নতুন বিনিয়োগ বা ইক্যুইটি এসেছে ২৭ কোটি ডলার। গত বছরের একই সময়ে ইক্যুইটি এসেছিল ১২ কোটি ডলার। এ ছাড়া গত জানুয়ারি–মার্চ সময়ে নিট এফডিআইয়ের ১৯ কোটি ডলার এসেছে পুনর্বিনিয়োগ আয় থেকে। আন্তকোম্পানি ঋণ থেকে এসেছে ৪০ কোটি ডলার। বাংলাদেশের এফডিআইয়ের বড় অংশই আগে থেকে দেশে বিনিয়োগ করা কোম্পানির আয় পুনর্বিনিয়োগের মাধ্যমে আসে।

এদিকে প্রণোদনা দেওয়ার মাধ্যমে প্রত্যক্ষ বৈদেশিক বিনিয়োগ (এফডিআই) বৃদ্ধির বিষয়ে মতামত দিতে পাঁচ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করেছে সরকার। গত ২৯ মে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে। বলা হয়, কমিটি এক মাসের মধ্যে মতামত দেবে।

গত বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেন, ‘আমি আগেও বলেছি, এই বছরের এফডিআই আসার পেছনে আমাদের ভূমিকা যৎসামান্য। বিনিয়োগের ডিসিশন (সিদ্ধান্ত) আগেই হয়ে ছিল। সম্ভবত প্রসেস (প্রক্রিয়া) একটু গতিশীল হয়েছে।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: বছর র প রথম ত ন ম স গত বছর র

এছাড়াও পড়ুন:

রবিবার থেকে মেট্রো ১ ঘণ্টা বেশি চলবে, ট্রিপ বাড়ানোরও প্রস্তুতি

মেট্রোরেল পরিচালনার সময় আগামী রবিবার থেকে দিনে এক ঘণ্টা করে বাড়ানো হচ্ছে; এই সুবিধা কাজে লাগিয়ে আগামী মাসের মাঝামাঝি থেকে ট্রিপ সংখ্যা বৃদ্ধিরও জোর প্রস্তুতি চলছে। 

বুধবার (১৫ অক্টোবর) মেট্রোরেল নির্মাণ-পরিচালনার দায়িত্বে থাকা ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) সূত্রে এই তথ্য পাওয়া গেছে। ট্রিপ বাড়লে দুটি ট্রেন চলাচলের মধ্যবর্তী বিরতি অন্তত ২ মিনিট করে কমে যাবে বলে জানা যাচ্ছে।

আরো পড়ুন:

নতুন সূচিতে সেবা, ট্রেন পাওয়া যাবে সোয়া ৪ মিনিট পরপর

২ দিন বন্ধ থাকবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মেট্রোরেল স্টেশন 

ডিএমটিসিএলের ঊর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তা জানান, মেট্রোরেল চালুর পর যাত্রী সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। চাহিদা অনুযায়ী পর্যায়ক্রমে সেবা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগামী রবিবার থেকে দিনে এক ঘণ্টা সময় বাড়িয়ে মেট্রোরেল চালানোর চেষ্টা চলছে।

বর্তমানে শনি থেকে বৃহস্পতিবার সপ্তাহে ছয় দিন উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে দিনের প্রথম ট্রেন ছাড়ে সকাল ৭টা ১০ মিনিটে। আগামী রবিবার নতুন সূচিতে চলাচল শুরু হলে এই স্টেশন থেকে সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে প্রথম ট্রেন ছাড়বে। এখন উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে সবশেষ ট্রেন রাত ৯টায় ছাড়ে। নতুন সূচিতে ছাড়বে রাত সাড়ে ৯টায়।

বর্তমানে মতিঝিল থেকে দিনের প্রথম ট্রেন ছাড়ে সকাল সাড়ে ৭টায়। নতুন সূচিতে সকাল ৭টায় ছাড়বে। রাতে মতিঝিল থেকে সবশেষ ট্রেন ছাড়ে রাত ৯টা ৪০ মিনিটে। নতুন সূচিতে ছাড়বে রাত ১০টা ১০ মিনিটে। মতিঝিল থেকে ছাড়া সবশেষ ট্রেন এখন উত্তরা উত্তর স্টেশনে পৌঁছায় রাত ১০টার পর। নতুন সূচিতে পৌঁছাবে রাত পৌনে ১১টার দিকে।

এখন শুক্রবার বেলা ৩টা থেকে মেট্রোরেলের চলাচল শুরু হয়। নতুন সূচিতে সময় আধাঘণ্টা এগিয়ে বেলা আড়াইটায় চলাচল শুরু হবে। রাতে চলাচলের সময় বাড়বে আধা ঘণ্টা।

মেট্রোরেল চলাচলের সময় ও ট্রিপের সংখ্যা বাড়ানোর বিষয়ে গত মাসে সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ। এ লক্ষ্যে গত ২৫ সেপ্টেম্বর পরীক্ষামূলক চলাচল শুরু হয়। এর মধ্যে মঙ্গলবার এক বৈঠকে প্রথমে বাড়তি এক ঘণ্টা মেট্রোরেল চালানোর সিদ্ধান্ত নেয় ডিএমটিসিএল।

স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে জানান, মেট্রোরেল চলাচলের সময় ও ট্রিপের সংখ্যা বাড়ানোর বিষয়ে গত মাসে সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ। এ লক্ষ্যে গত ২৫ সেপ্টেম্বর পরীক্ষামূলক চলাচল শুরু হয়। এর মাঝে মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) এক বৈঠকে প্রথমে বাড়তি এক ঘণ্টা মেট্রোরেল চালানোর সিদ্ধান্ত নেয় ডিএমটিসিএল। অন্যদিকে আগামী মাসের মাঝামাঝিতে মেট্রোরেলের ট্রিপের সংখ্যা বাড়ানো হবে। ট্রিপ বাড়লে দুই ট্রেনের মধ্যে বিরতি অন্তত দুই মিনিট কমে যাবে।

ডিএমটিসিএল সূত্র জানায়, বর্তমানে মেট্রোরেলে দৈনিক গড়ে সাড়ে ৪ লাখ যাত্রী চলাচল করেন। বাড়তি সময় ও ট্রিপ শুরু হলে যাত্রীসংখ্যা ৫ লাখ ছাড়িয়ে যাবে। এ লক্ষ্য নিয়েই ডিএমটিসিএল প্রস্তুতি নিচ্ছে।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ