দুই সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে দুই বাংলাদেশি নিহত
Published: 12th, July 2025 GMT
দেশের দুই সীমান্ত এলাকায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে দুই বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার রাতে সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলা এবং আজ শনিবার ভোরে ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার সীমান্ত এলাকায় এসব ঘটনা ঘটে।
দোয়ারাবাজার উপজেলার ভাঙারপাড় এলাকায় বিএসএফের গুলিতে নিহত ব্যক্তির নাম শফিকুল ইসলাম (৪৫। তিনি একই এলাকার বাসিন্দা। অন্যদিকে হরিপুর উপজেলার মিনাপুর সীমান্তে নিহত ব্যক্তির নাম মো.
সুনামগঞ্জ বিজিবি-২৮ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল এ কে এম জাকারিয়া কাদির জানান, গতকাল ভাঙারপাড় দিয়ে ১০-১২ জন বাংলাদেশি অবৈধভাবে গরু আনতে ভারতের ৫০০ গজ ভেতরে যান। সেখান থেকে তাঁরা গরু নিয়ে আসার পথে বিএসএফের বাধার মুখে পড়েন। এ সময় তাঁরা বিএসএফকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। অন্যদিকে বিএসএফ চার-পাঁচটি সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। পরে তাঁরা পিছু না হটায় তিন-চারটি গুলি ছোড়ে বিএসএফ। গুলি লেগে শফিকুল সেখানে গুরুতর আহত হন। পরে দোয়ারাবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল রাত আড়াইটার দিকে শফিকুলের মৃত্যু হয়।
এদিকে ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার সীমান্ত এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা ও জনপ্রতিনিধি সূত্রে জানা গেছে, আজ ভোর চারটার দিকে রাসেলসহ কয়েকজন মিনাপুর সীমান্ত এলাকার শূন্যরেখা পেরিয়ে ভারতীয় সীমানার কাঁটাতারের বেড়ার কাছে যান। এ সময় বিএসএফের সদস্যরা তাঁদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন। এতে রাসেল গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে মারা যান। ঘটনার পর বিএসএফের সদস্যরা তাঁর লাশ ভারতে নিয়ে যান।
রাসেলের বাবা নিয়াজ উদ্দিন বলেন, রাসেল টুকটাক কাজ করত। দুই দিন ধরে ওর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। কেউ হয়তো টাকার লোভ দেখিয়ে ওকে সীমান্তে নিয়ে গেছে।
দিনাজপুর বিজিবি-৪২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবদুল্লাহ আল মঈন হাসান বলেন, ‘এ বিষয়ে বিএসএফ নিশ্চিত না করা পর্যন্ত আমরা বিস্তারিত বলতে পারছি না। এ ঘটনায় বিজিবি ও বিএসএফের কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক ডাকা হয়েছে। পতাকা বৈঠক হলেই বিস্তারিত জানাতে পারব।’
বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত হওয়ার খবর পেয়েছেন জানিয়ে হরিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাকারিয়া মণ্ডল বলেন, এ বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে বিস্তারিত জানতে পারেননি।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ম ন ত এল ক র উপজ ল র ব এসএফ র এল ক র
এছাড়াও পড়ুন:
নেত্রকোনা সীমান্ত দিয়ে ফের ২১ জনকে পুশইন করল বিএসএফ
নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার সীমান্ত দিয়ে ২১ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। তাদের মধ্যে ১৯ জন তৃতীয় লিঙ্গ ও দুইজন পুরুষ রয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার ভোরে দুর্গাপুরের বিজয়পুর সীমান্ত দিয়ে তাদেরকে পুশইন করা হয় বলে জানিয়েছেন নেত্রকোনা ৩১ বিজিবির বিজয়পুর ক্যাম্প কমান্ডার মো. শহীদুল ইসলাম।
তিনি আরও বলেন, আজ ভোরে বিজয়পুর বিওপির ১১৪৮/৪ এস থেকে প্রায় ১০০ গজ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে আড়াপাড়া এলাকা দিয়ে তাদেরকে পুশইন করানো হয়। পরে তাদের আটক করে বিজিবি। আটককৃদের বাড়ি ঢাকা, চট্রাগ্রাম, রাজবাড়ী, পটুয়াখালী, মৌলভীবাজার, জামালপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও টাঙ্গাইলের বিভিন্ন এলাকায়।
ক্যাম্প কমান্ডার বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে তাদের পরিচয় নিশ্চিত করা হয়েছে। আটককৃতরা ভারতের দিল্লিতে কাজের জন্যে যান। তাদেরকে দিল্লির বিভিন্ন এলাকা থেকে একত্রিত করে গতকাল বুধবার নাজিরাবাদ বিমানবন্দর দিয়ে উড়োজাহাজে করে আসামে আনা হয়। পরে তাদেরকে আজ বৃহস্পতিবার ভোরে বিজয়পুর সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঠেলে পাঠায় বিএসএফ। এর আগে গত ৩ জুন ওই সীমান্ত দিয়ে ৩২ জনকে ঠেলে পাঠিয়েছিল বিএসএফ।
নেত্রকোনার ৩১ বিজিবির ক্যাম্প কমান্ডার মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, হাবিলদার আবদুল করিমের নেতৃত্বে একটি দল, সীমান্তে টহল দেওয়ার সময় বিএসএফের পুশইন করা ওই ২১ জনকে আড়াপাড়া এলাকা থেকে আটক করে। আমাদের অফিসিয়াল প্রক্রিয়া শেষে তাদের দুর্গাপুর থানায় হস্তান্তর করা হবে।
নেত্রকোনা ৩১ বিজিবি’র অধিনায়ক লেফটেনেন্ট কর্নেল এস এম কামরুজ্জামান বলেন, বুধবার রাতে বিএসএফ ২১ জনকে পুশইন করেছে। তাদের পরিচয় শনাক্ত করা হয়েছে। তারা গত ৬ মাস থেকে ১২ বছর আগে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ভারতে গিয়েছিলেন। বৈধ প্রক্রিয়া না করে বিএসএফ তাদের পুশইন করেছে। তাদেরকে বিজয়পুর ক্যাম্পে রাখা হয়েছে। পুলিশের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।