এমন ম্যাচ দ.আফ্রিকাই হারতে পারে, নিউ জিল্যান্ডই জিততে পারে
Published: 26th, July 2025 GMT
চোকার্স তো আর তাদের এমনি এমনিই বলা হয় না। এর পেছনে ইতিহাস আছে। যা ঘুরে ফেরে তাদের তাড়িয়ে বেড়ায়। বছরের পর বছর, টুর্নামেন্টের পর টুর্নামেন্ট গুরুত্বপূর্ণ সময়ে খেই হারিয়ে এসেছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
চাপের মুহূর্তে, গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ভেঙে পড়ার নজীর তো কম নেই তাদের। যে কারণে নামের সঙ্গে জুড়ে গেছে ‘চোকার্স’ ট্যাগ। আরো একবার দক্ষিণ আফ্রিকা প্রমাণ করলো সহজ ম্যাচ কিভাবে হাতছাড়া করে হারতে হয়।
জিম্বাবুয়ের হারারেতে নিউ জিল্যান্ডকে হারিয়ে ত্রিদেশীয় সিরিজের ট্রফি জিততে শেষ ৬ বলে মাত্র ৭ রান লাগত তাদের। হাতে ৬ উইকেট। অথচ ওই ম্যাচ তারা হারল ৩ রানে। স্রেফ অবিশ্বাস্য। অদ্ভুত।
নিউ জিল্যান্ডের দেওয়া ১৮১ রানের লক্ষ্য তাড়ায় দক্ষিণ আফ্রিকার ১৯ ওভারে রান ৪ উইকেটে ১৭৪। ডেওয়াল্ড ব্রেভিস ১৪ বলে ৩১ রান করে ক্রিজে। অপরপ্রান্তে জর্জ লিন্ডে ৯ বলে ১০ রান তুলে নিয়েছেন। থিতু হওয়া দুই ব্যাটসম্যান অনায়েসে রান তুলে নেবেন এমনটাই মনে হচ্ছিল। কিন্তু সমীকরণ পাল্টে দিলেন ম্যাট হেনরি।
ব্রেভিস প্রথম বলে কোনো রান নিতে পারেননি। দ্বিতীয় বলে তার ডিপ মিড উইকেটে অসাধারণ ক্যাচ নেন ব্রেসওয়েল। পরের বলে আবার ক্যাচ উঠলেও নিতে পারেননি ব্রেসওয়েল। স্কোরবোর্ডে ২ রান যোগ করেন নতুন ব্যাটসম্যান করবিন ব্রচ। চতুর্থ বলে ১ রান নিয়ে প্রান্ত বদল করেন ব্রচ। সমীকরণ তখন ২ বলে ৪ রান।
পঞ্চম বলে আবার নাটক। এবার লিন্ডে ডার্ল মিচেলের দুর্দান্ত এক ক্যাচে ফেরেন সাজঘরে। ডট বলের সঙ্গে কিউইরা পেয়ে যায় উইকেটের স্বাদ। শেষ বলে জয়ের জন্য প্রয়োজন বাউন্ডারি। কিন্তু হেনরির গোলায় নতুন ব্যাটসম্যান মুথুসামি ১ রানের বেশি নিতে পারেননি।
ফসকে যাওয়া ম্যাচ ৩ রানে জিতে নিউ জিল্যান্ড প্রমাণ করেছে হারার আগে তারা হারে না। শেষ বল পর্যন্ত লড়াই করার মানসিকতা এখনও জিইয়ে রেখেছে তারা। ১৯ রানে ২ উইকেট নিয়ে ম্যাচের নায়ক হেনরি। ১০ উইকেট নিয়ে সিরিজ সেরাও হয়েছেন তিনি।
ব্যাটিংয়ে তাদের হয়ে ৪৭ রানের দুটি ইনিংস খেলেন ডেভন কনওয়ে ও রাচীন রাবিন্দ্র। ৩০ রান করেন টিম সেইফার্ট। এছাড়া ডার্ল মিচেল ১৬ ও ব্রেসওয়েলের ব্যাট থেকে আসে ১৫ রান।
জবাব দিতে নেমে দক্ষিণ আফ্রিকা ৯.
কিন্তু সব সমীকরণ পাল্টে যায় শেষ ওভারে। হেনরির দারুণ বোলিংয়ে প্রোটিয়ার তীরে এসে তরি ডুবিয়ে প্রমাণ করেছে, এমন ম্যাচ হার শুধুমাত্র তাদের পক্ষেই সম্ভব।
ঢাকা/ইয়াসিন
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক
অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।
বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক।
আরো পড়ুন:
রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী
‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত
সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।
প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।
জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।
আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।
লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড
ঢাকা/লিপি