বাংলাদেশে রাজনৈতিক সংস্কার সত্ত্বেও ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে এখনো উদ্বেগ রয়ে গেছে বলে দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা কমিশন।

গত ২১ জুলাই প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ দাবি করে তারা।

কমিশন বলেছে, অন্তর্বর্তী সরকার রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, উত্তেজনা এবং ধর্মীয় স্বাধীনতার উন্নতিতে যে সংস্কার হাতে নিয়েছে সেগুলো অনেকটা অগ্রগতি হয়েছে। তা সত্ত্বেও ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে এখনো উদ্বেগ রয়ে গেছে।

আরো পড়ুন:

বাণিজ্য চুক্তির খুব কাছাকাছি যুক্তরাষ্ট্র ও পাকিস্তান: দার

কয়েকদিন ধরে না খেয়ে আছে গাজার এক তৃতীয়াংশ মানুষ: ডব্লিউএফপি

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত মে মাসে বাংলাদেশ সফর করে কমিশনের একটি প্রতিনিধিদল। ওই সময় তারা জানান, যদিও প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস ধর্মীয় স্বাধীনতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তবুও অনেকেই নিরাপত্তা ও ধর্ম পালনের স্বাধীনতা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। সংবিধানে ধর্মীয় স্বাধীনতার নিশ্চয়তা থাকলেও, দেশে এখনো ধর্ম অবমাননার আইন ও ২০২৩ সালের সাইবার নিরাপত্তা আইনে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে শাস্তির বিধান রয়েছে।

এতে আরো বলা হয়েছে, সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবে ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’ শব্দের পরিবর্তে ‘বহুত্ববাদ’ যুক্ত করার সুপারিশ করা হলে, বিএনপি তা প্রত্যাখ্যান করে এবং ‘আল্লাহর প্রতি পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস’ ফিরিয়ে আনার দাবি জানায়। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়গুলো অভিযোগ করেছে, তাদের এই সংস্কার প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে দেওয়া হয়নি।

নারী সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব নিয়ে হেফাজতে ইসলামীর আপত্তি ও বিক্ষোভের বিষয়টিও মার্কিনিদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৪৩৩টি সুপারিশকে হেফাজতে ইসলাম ‘ইসলামবিরোধী’ বলে প্রতিবাদ জানিয়েছে এবং মে মাসে ঢাকায় বিশাল সমাবেশ করে কমিশন বাতিলের দাবি তোলে।

এছাড়া বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্যাম্পাসে রক্ষণশীল ধর্মীয় প্রবণতা বেড়েছে এবং সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনায় এখনো জবাবদিহির অভাব রয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে প্রতিবেদনে।

হিন্দু, আদিবাসী, আহমদিয়া ও সুফি মুসলিমরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন বলেও এতে দাবি করা হয়েছে।

অপরদিকে, আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সহিংসতার আশঙ্কা থাকলেও সরকার এখনো কার্যকর কৌশল জানায়নি বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন কমিশনটি বলেছে, সবাই যেন নির্ভয়ে ধর্ম পালন করতে পারে, তা নিশ্চিত করতে হবে।

ঢাকা/হাসান/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর য ক তর ষ ট র য ক তর ষ ট র স ব ধ নত

এছাড়াও পড়ুন:

জুবিনের মৃত্যু নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বিস্ফোরক মন্তব্য

গত ১৯ সেপ্টেম্বর সিঙ্গাপুরে মারা যান ভারতের বরেণ্য সংগীতশিল্পী জুবিন গার্গ। তার মৃত্যু নিয়ে ক্রমশ ধোঁয়াশা তৈরি হচ্ছে। এ গায়কের মৃত্যু মামলায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার নির্দেশে জুবিন গার্গের মৃত্যুতদন্তের জন্য গত সেপ্টেম্বর মাসে ‘সিট’ গঠন করা হয়েছে। আগামী ডিসেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ে চার্জশিট জমা দেবেন তদন্তকারীরা। তার আগে জুবিনের মৃত্যু নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত শর্মা। 

আরো পড়ুন:

ঋত্বিক ঘটক কীভাবে বিধু বিনোদ চোপড়ার নাম রাখেন?

দুই গায়িকার পাল্টাপাল্টি অভিযোগ, দ্বন্দ্ব চরমে

ষড়যন্ত্রের আশঙ্কা করে মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত শর্মা ভারতীয় গণমাধ্যমে বলেন, “১৯ সেপ্টেম্বর সিঙ্গাপুরে জুবিনের রহস্যমৃত্যুকে ‘দুর্ঘটনা’ বলে উল্লেখ করব না। ডিসেম্বর মাসের ১৭ তারিখ জুবিন গার্গের ‘খুন’ এর চার্জশিট জমা দিতে হবে। যদিও আমি ৮ ডিসেম্বরের মধ্যে জমা দিতে বলেছি। আমরা সবদিক থেকে প্রস্তুত।” 

বিষয়টি ব্যাখ্যা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “বিদেশে কোনো ঘটনা ঘটলে চার্জশিট দাখিলের আগে আমাদের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন প্রয়োজন হয়। গতকাল আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকেও বিষয়টি জানিয়েছি, যাতে উনি দ্রুত অনুমোদন দিতে পারেন। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে সিটের পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে চিঠি যাবে। অনুমোদন পেলে, আমরা ৮, ৯ কিংবা ১০ ডিসেম্বর চার্জশিট দাখিল করব।” 

গত ১৯ সেপ্টেম্বর সিঙ্গাপুরের সেন্ট জন’স দ্বীপ থেকে অচেতন অবস্থায় গায়ক জুবিনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেদিনই সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।  

এরপর প্রাথমিক তদন্ত ও ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন ভারতের হাইকমিশনকে সরবরাহ করে সিঙ্গাপুর পুলিশ। তাতে কারণ হিসেবে স্পষ্ট লেখা—“ডুবে যাওয়া”। সাঁতার কাটতে গিয়েই তার মৃত্যু হয়েছে। এরপরও উত্তপ্ত হয়ে পড়ে আসামবাসী। বিষয়টি সিঙ্গাপুর পুলিশও জানতে পারেন।  

গত ১৭ অক্টোবর দুপুরে সিঙ্গাপুর পুলিশ অফিসিয়ালি একটি বিবৃতি প্রকাশ করে। এ বিবৃতিতে বলা হয়, “মিস্টার জুবিন গার্গের মৃত্যু নিয়ে অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া জল্পনা-কল্পনা ও ভুয়া তথ্য সম্পর্কে অবগত সিঙ্গাপুর পুলিশ ফোর্স। বর্তমানে এই মামলা সিঙ্গাপুরের ‘করোনার্স অ্যাক্ট ২০১০’-এর অধীনে তদন্তাধীন। প্রাথমিক তদন্তে, পুলিশ অপরাধমূলক কোনো কিছুই পায়নি।”  

সিঙ্গাপুল পুলিশের তদন্ত শেষ হতে ৯০ দিন সময় লাগতে পারে। এ তথ্য উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, “এ মামলার তদন্ত সম্পূর্ণ করতে আরো তিন মাস বা আরো কিছুটা সময় বেশি লাগবে। তারপর তদন্ত রিপোর্ট সিঙ্গাপুরের স্টেট করোনারের কাছে জমা দেওয়া হবে।” 

জুবিনের মৃত্যুতে আসাম পুলিশ খুনের মামলা দায়ের করেছে। গত ২৫ সেপ্টেম্বর জুবিনের টিমের ড্রামার শেখর জ্যোতি গোস্বামীকে গ্রেপ্তার করা হয়। পয়লা অক্টোবর গ্রেপ্তার হন জুবিনের ম্যানেজার সিদ্ধার্থ শর্মা ও নর্থ-ইস্ট ফেস্টিভ্যালের আয়োজক শ্যামকানু মহন্ত। ৩ অক্টোবর প্রেপ্তার করা হয় জুবিনের টিমের গায়িকা অমৃতপ্রভ মহন্তকে। তাছাড়াও গ্রেপ্তার হয়েছেন জুবিনের এক কাজিন।

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ