ভয়াবহ দাবানলে পুড়ছে গ্রিস। পাঁচটি বড় দাবানলের সঙ্গে লড়াই করছে দেশটির জরুরি সেবা বিভাগ। এর মধ্যে রাজধানী অ্যাথেন্স থেকে মাত্র ৩০ কিলোমিটার উত্তরে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্ত আফিদনেস অঞ্চলের বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।

রবিবার (২৭ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, দাবানলের ধোঁয়া অ্যাথেন্স শহর পর্যন্ত পৌঁছেছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) কাছে সহযোগিতা চেয়েছে গ্রিস সরকার।

আরো পড়ুন:

তুরস্কে দাবানলে ১০ দমকলকর্মী নিহত

দাবানলে পুড়ছে গ্রিস, নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছে দমকল বাহিনী

দেশটিতে তাপপ্রবাহও চলছে। রবিবার পর্যন্ত তাপমাত্রা ৪৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে বলে পূর্বাভাস রয়েছে। সপ্তাহান্তজুড়ে এমন চরম তাপমাত্রা থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

গ্রিসের জলবায়ু সংকট ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী ইয়ানিস কেফালোইয়ানিস বলেছেন, “আমাদের দমকলকর্মীরা আহত হয়েছেন, মানুষের জীবন ঝুঁকিতে পড়েছে, সম্পদ পুড়ে গেছে, বনাঞ্চল ধ্বংস হয়ে গেছে।”

প্রচণ্ড গরমের মধ্যে প্রবল বাতাস দাবানল আরো ছড়িয়ে দিচ্ছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে ইইউ সিভিল প্রোটেকশন মেকানিজম থেকে অতিরিক্ত ছয়টি দমকল বিমান চেয়েছে গ্রিস।

অ্যাটিকা অঞ্চলে (যেখানে অ্যাথেন্স অবস্থিত), আফিদনেসে শুরু হওয়া আগুন দ্রোসোপিগি, ক্রিওনেরি ও আগিওস স্টেফানোস পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে, ফলে বহু মানুষকে বাড়িঘর ছেড়ে নিরাপদ স্থানে সরতে হয়েছে।

প্রধান আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও এখনও বেশ কয়েকটি এলাকা থেকে ধোঁয়া ও আগুন দেখা যাচ্ছে। ২০০ জনের বেশি ফায়ারফাইটার, হেলিকপ্টার ও পানিবাহী বিমান আগুন নেভাতে চেষ্টা চালাচ্ছেন।

কর্মকর্তারা বলছেন, ইভিয়া দ্বীপে পিসোনার কাছে দ্বিতীয় একটি দাবানল ‘নিয়ন্ত্রণের বাইরে’ চলে গেছে এবং দ্রুত আফ্রাতির দিকে এগোচ্ছে। আগুনে বিদ্যুতের খুঁটি ও তার পুড়ে যাওয়ায় পুর্নোস ও মিস্ট্রোসের মত কয়েকটি গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।

দগ্ধ ও শ্বাসনালীতে ধোঁয়া যাওয়ায় এ পর্যন্ত ছয়জন দমকলকর্মীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে; তবে ১১৫ জন কর্মী এখনও আগুন নেভানোর চেষ্টা করছেন।

দিরফিওন-মেসাপিয়নের মেয়র জর্জোস সাথাস বলেছেন, “ধ্বংসের পরিমাণ হিসাবের বাইরে।”

তৃতীয় একটি দাবানল কিথিরা দ্বীপের বড় অংশকে গ্রাস করেছে। সেখানে রীতিমত ‘ধ্বংসযজ্ঞ’ চলছে বলে বর্ণনা করেছেন স্থানীয়রা। বেশ কিছু বাড়িঘর খালি করা হয়েছে। কোস্টগার্ড লিমনিওনাস বিচ থেকে ১৩৯ জনকে উদ্ধার করে কাপসালি বন্দরে পৌঁছে দিয়েছে।

মেসিনিয়ার ত্রাফিলিয়া এলাকার পলিথেয়াতে শনিবার সকালে চতুর্থ দাবানল শুরু হয়, যা পরে আরো তীব্র হয়।

সেখানে কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দাদের সরে যাওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। প্রবল বাতাসের কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণ কঠিন হয়ে পড়ছে। ৮৪ জন দমকলকর্মী, ৩০টি যানবাহন এবং সাতটি উড়োযান দিয়ে আগুন নেভানোর কাজ চলছে সেখানে।

পঞ্চম দাবানল চলছে ক্রিতির খানিয়া অঞ্চলের তামেনিয়া এলাকায়। সেখানে দুটি আলাদা স্থানে আগুন শুরু হওয়ার পর তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।

কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আরো কয়েকটি অঞ্চলে নতুন করে আগুন ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে- আয়োনিয়ান দ্বীপপুঞ্জ, পশ্চিম গ্রিস, পিলোপনিস, মধ্য গ্রিস, অ্যাটিকা, এপিরাস, পশ্চিম মেসিডোনিয়া (ফ্লোরিনা, কাস্তোরিয়া, কোজানি), পূর্ব মেসিডোনিয়া ও থ্রেস (এভ্রোস), থেসালি (মাগনিসিয়া, লারিসা, ত্রিকালা), দক্ষিণ ঈজিয়ান (রোডস) ও ক্রিট।

গত মাসে উত্তর এজিয়ান সাগরের খিওস দ্বীপে দাবানলে ৪ হাজার ৭০০ হেক্টর জমি পুড়ে ছাই হয়ে যায়। জুলাইয়ের শুরুর দিকে ক্রিটে আরেকটি দাবানলে ৫ হাজার পর্যটককে সরিয়ে নিতে হয়েছিল।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর দমকলকর ম আগ ন ন

এছাড়াও পড়ুন:

মাইলস্টোন ট্র্যাজিডি: হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাচ্ছে ২ জন, আশঙ্কাজনক ৪

মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের দুজন শিক্ষার্থী জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট থেকে বাসায় ফিরছে আজ। তবে হাসপাতালে ভর্তি ৩৬ জনের মধ্যে চার জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। 

শনিবার (২৬ জুলাই) দুপুরে দগ্ধ রোগীর আপডেট নিয়ে ব্রিফ করেন জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসির উদ্দিন।

তিনি বলেন, “মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় দগ্ধ হয়ে বার্ন ইনস্টিটিউটে এখনও ভর্তি আছে ৩৬ জন। তাদের মধ্যে ৪ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক, আর ৯ জনের অবস্থা গুরুতর। তবে একটি ভালো খবর হলো আজ দুই শিক্ষার্থী হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরছে।” 

আজ সকালে দুই ঘণ্টার ব্যবধানে এ ঘটনায় দগ্ধ শিশুসহ দুজন মারা গেছেন। তাদের একজন মাইলস্টোনের শিক্ষার্থী জারিফ ফারহান (১৩)। সে স্কুলের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। অন্যজন মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের স্ট্যাফ মাসুমা। দুজনই জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এ নিয়ে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ১৭ জন মারা গেলেন। 

গত ২১ জুলাই দুপুরে বিমান বাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে বিধ্বস্ত হয়। এই দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৩৫ জন মারা গেছে, তাদের বেশির ভাগই শিশু শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় আহত হয়ে এখনও অনেকে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।

ঢাকা/বুলবুল/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মাইলস্টোন ট্র্যাজিডি: হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাচ্ছে ২ জন, আশঙ্কাজনক ৪