আকস্মিক স্কুল পরিদর্শনে গিয়ে ক্লাস নিলেন ইউএনও
Published: 4th, September 2025 GMT
প্রকল্পের উদ্বোধন শেষে অফিসে ফিরছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রিফাত আরা মৌরি। পথিমধ্যে রাস্তার পাশের একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় আকস্মিক পরিদর্শনে গিয়ে ক্লাস নিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) বেলা ৩টার দিকে বরিশালের গৌরনদী উপজেলার গেরাকুল বেগম আখতারুন্নেছা মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিদর্শনে যান রিফাত আরা মৌরি।
আরো পড়ুন:
ফেনীতে নদী ভাঙনের কবলে বিদ্যালয়ের ভবন
চট্টগ্রামে সরকারি স্কুলের মাঠ বেচাকেনা, তদন্তে দুদক
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো.
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে, স্বল্প সময়ের জন্য আমরা ইউএনওকে শিক্ষক হিসেবে পেয়ে আনন্দিত। তিনি আমাদের লেখাপড়া করে বড় হওয়ার জন্য উৎসাহ যুগিয়েছেন।
গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার রিফাত আরা মৌরি বলেন, ‘‘মানসম্মত শিক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। সেই ধারাবাহিকতায় ইতোমধ্যে আকস্মিকভাবে বিভিন্ন বিদ্যালয় পরিদর্শন করে শিক্ষার মানোন্নয়নের জন্য প্রতিষ্ঠান প্রধানদের দিক-নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’’
এ সময় বিদ্যালয়ের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।
ঢাকা/পলাশ/রাজীব
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র ফ ত আর আকস ম ক অফ স র উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
‘লাল পরি’ হয়ে ঘরে ফিরল হারিয়ে যাওয়া শিশুটি
ঠিকমতো চোখে দেখে না আট বছরের শিশু মরিয়ম। মাদ্রাসা থেকে ঘরে ফেরার পথে নিখোঁজ হয় সে। নানা ঘটনাচক্রে একসময় পৌঁছায় কক্সবাজার সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার ( ইউএনও) কার্যালয়ে। পরে ইউএনওর সহায়তায় ঘরে ফিরেছে শিশুটি। ঘরে ফেরার আগে তার ‘লাল পরি’ সাজার ইচ্ছাপূরণও হয়েছে।
শিশু মরিয়মের বাড়ি কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলায় পূর্ব পোকখালী চরপাড়া গ্রামে তার বাড়ি। সেখানেই একটি মাদ্রাসায় পড়ালেখা করে। গত বুধবার মাদ্রাসা ছুটির পর মায়ের জন্য অপেক্ষায় ছিল সে। তবে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে এক ব্যক্তি তাকে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায় কক্সবাজার সদরে।
ইউএনও কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মরিয়ম কক্সবাজার পৌরসভার কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকায় চোখেমুখে ভয় আর আতঙ্কের ছাপ নিয়ে হাঁটাহাঁটি করছিল। কৌতূহলী এক পথচারী কথা বলে তার নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি জানতে পারেন। ওই পথচারী মরিয়মকে নিয়ে যান তিন কিলোমিটার দূরে উপজেলা পরিষদের কার্যালয়ে। সেখান থেকে এক আনসার সদস্য মরিয়মকে ইউএনও কার্যালয়ে নিয়ে আসেন।
ইউএনও নিলুফা ইয়াছমিন চৌধুরী এ সময় শিশু মরিয়মের সঙ্গে কথা বলে তার বিস্তারিত ঠিকানা জানার চেষ্টা করেন। শিশুটি কেবল তার বাড়ি ঈদগাঁওয়ের পোকখালী এতটুকুই বলতে পারছিল। পরে ঈদগাঁওয়ের ইউএনওর মাধ্যমে শিশুটির বাড়ির ঠিকানা নিশ্চিত হওয়া যায়।
কাপড় কিনে দেওয়ার সময় মরিয়ম বলল, সে লাল পরি সেজে বাড়ি ফিরবে। তাকে লাল জামা, লাল চুড়ি, লাল লিপস্টিক ও লাল ওড়না দিয়ে লাল পরি সাজানো হয়। নিলুফা ইয়াছমিন চৌধুরী, ইউএনও, কক্সবাজার সদর উপজেলাশিশুটি প্রথমে পাচারকারীদের খপ্পরে পড়েছিল বলে সন্দেহ ইউএনও নিলুফা ইয়াছমিনের। তিনি বলেন, আলাপে শিশুটি জানায়, সে তার তিন-চার বছর বয়স পর্যন্ত ভালোভাবেই চোখে দেখত। এরপর থেকে ক্রমে তাঁর চোখের আলো ঝাপসা হতে শুরু করে। এখন সে তেমন দেখতে পায় না। তার বাবা মারা গেছেন। মা ও বড় ভাই অন্ধ। পরিবারে অষ্টম শ্রেণিপড়ুয়া একটি বোন আছে, সে–ই কেবল চোখে দেখতে পায়। ঘরের কাজ সব বোনই সামলায়। তাদের পরিবার থাকে সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে।
শিশুটির কাছ থেকে চোখের বিষয়টি জেনে তাকে কক্সবাজার শহরের পানবাজার এলাকার কমিউনিটি চক্ষু হাসপাতালে নেওয়া হয় বলে জানান ইউএনও। তিনি বলেন, ‘শিশুটির সঙ্গে কথা বলে মনে হলো তার চোখের সমস্যা এত জটিল না। হাসপাতালে নেওয়ার পর চক্ষুবিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বিমল চৌধুরী তার চোখের পরীক্ষা করেন। এরপর বিনা মূল্যে শিশু মরিয়মকে চশমা ও এক মাসের ওষুধ কিনে দেওয়া হয়। চশমা চোখে দিয়ে সে জানিয়েছে, আগের চেয়ে অনেক ভালো দেখতে পাচ্ছে।’
শিশুটিকে মায়ের হাতে তুলে দেন কক্সবাজার সদরের ইউএনও নিলুফা ইয়াছমিন চৌধুরী