স্ত্রীকে হত্যা মামলায় র্যাব হেফাজতে থাকা আসামির ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
Published: 15th, September 2025 GMT
সিলেটে র্যাবের হেফাজতে থাকা অবস্থায় এক আসামির ঝুলন্ত মরদেহ পাওয়ার কথা জানিয়েছে র্যাব। র্যাবের ভাষ্য, হেফাজতে থাকা অবস্থায় গতকাল রোববার সকালে গলায় কম্বল পেঁচিয়ে ভেন্টিলেটরের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় তাঁকে পাওয়া যায়। তিনি আত্মহত্যা করেছেন।
মারা যাওয়া ব্যক্তির নাম তানভীর চৌধুরী (২৫)। তিনি গাজীপুরের বাসিন্দা। নওগাঁয় স্ত্রীকে ছুরিকাঘাতে হত্যার অভিযোগে গত শনিবার রাতে সিলেটের জৈন্তাপুর থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র্যাব-৯ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গণমাধ্যম) কে এম শহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, নওগাঁ কাঁঠালতলীতে ১১ সেপ্টেম্বর ছুরিকাঘাতে খুন হন যূথি খাতুন (২২)। এ ঘটনায় নওগাঁ থানায় তানভীরের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করা হয়।
র্যাব সূত্রে জানা গেছে, প্রেমের সম্পর্কে পর প্রায় এক বছর আগে তানভীরকে বিয়ে করেন যূথি। বিয়ের কয়েক মাস পর যূথি জানতে পারেন, তানভীরের আরেকজন স্ত্রী আছেন। বিষয়টি নিয়ে যূথি ও তানভীরের মধ্যে কলহ শুরু হয়। একপর্যায়ে বাবার বাড়ি নওগাঁয় গিয়ে স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করেন যূথি। ১১ সেপ্টেম্বর মামলার শুনানিতে আদালতে যাওয়ার উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হলে যূথিকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যান তানভীর। এ ঘটনায় করা মামলায় গত শনিবার রাতে জৈন্তাপুরে বোনের বাড়ি তানভীরকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। পরে তাঁকে র্যাবের সিলেট কার্যালয়ে হাজতে রাখা হয়। পরদিন সকালে তানভীরকে হাজতে ভেন্টিলেটরের সঙ্গে কম্বল দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়।
র্যাব কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম জানান, তানভীরকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নওগাঁ থানার পুলিশকে জানানো হয়েছিল। সিলেটে থেকে তানভীরকে সেখানে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু গ্রেপ্তারের পরদিন সকালে হাজতের সংলগ্ন শৌচাগারে ভেন্টিলেটরের রডে কম্বল দিয়ে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় তাঁকে পাওয়া যায়। পরে তানভীরের পরিবারের সদস্য, গোলাপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও গোলাপগঞ্জ থানার পুলিশের উপস্থিতিতে লাশটি নামানো হয়। পরে ময়নাতদন্তের জন্য লাশটিকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়।
র্যাবের এই কর্মকর্তা আরও যোগ করে বলেন, হাজতের ক্লোজড সার্কিট (সিসিটিভি) ক্যামেরায় দেখা গেছে, কম্বল ভেন্টিলেটরের সঙ্গে পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন তানভীর। এ ঘটনায় গোলাপগঞ্জ থানায় তানভীরের বোন শিলা একটি অপমৃত্যুর মামলা করেছেন। মরদেহটি আজ সোমবার দুপুরে তানভীরের পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
আমিরাতকে হারিয়ে সুপার ফোরে পাকিস্তান
এশিয়া কাপ-২০২৫ এর সুপার ফোরে জায়গা করে নিলো আনপ্রেডিক্টেবল পাকিস্তান। বুধবার দিবাগত রাতে ‘এ’ গ্রুপে নিজেদের শেষ ম্যাচে স্বাগতিক আরব আমিরাতকে ৪১ রানের ব্যবধানে হারিয়ে ভারতের সঙ্গী হলো সালমান-শাহীনরা।
দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের আলো-ঝলমলে রাতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তান সংগ্রহ করে ৯ উইকেটে ১৪৯ রান। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১৭.৪ ওভার পর্যন্ত টিকেছিল আমিরাত। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ১০৫ রানেই গুটিয়ে যায় তাদের ইনিংস। সেই সুবাদে সহজ জয় নিয়ে শেষ চারে জায়গা নিশ্চিত করে পাকিস্তান।
আরো পড়ুন:
আরব আমিরাতকে ১৪৭ রানের টার্গেট দিল পাকিস্তান
বেথেলের ইতিহাস গড়া দিনে ইংল্যান্ডের দাপুটে জয়
এই জয়ের নায়ক নিঃসন্দেহে শাহীন শাহ আফ্রিদি। বিপদের মুহূর্তে নামতে হয় তাকে ব্যাট হাতে। সেখানে ১৪ বলে ৩টি চার ও ২টি ছক্কার ঝড়ে অপরাজিত ২৯ রানের ইনিংস খেলেন তিনি, যা পাকিস্তানের সংগ্রহকে দাঁড় করায় লড়াইযোগ্য অবস্থানে। শুধু ব্যাটেই নয়, বল হাতেও ছিলেন সমান কার্যকর। ৩ ওভারে মাত্র ১৬ রান খরচ করে তুলে নেন ২টি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট। এমন সর্বাঙ্গীন পারফরম্যান্সে স্বাভাবিকভাবেই ম্যাচসেরার পুরস্কার উঠে যায় তার ঝুলিতে।
তবু শুরুটা বেশ আশাব্যঞ্জক ছিল আমিরাতের। ১৩.৫ ওভার পর্যন্ত তারা প্রতিযোগিতায় টিকে ছিল দারুণভাবে। তিন উইকেট হারিয়ে সংগ্রহ করেছিল ৮৫ রান। কিন্তু এরপর যেন ধস নামে। মাত্র ২০ রানের ব্যবধানে বাকি সাত উইকেট হারিয়ে পুরো দল অলআউট হয়ে যায় ১০৫ রানে। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৩৫ রান করেন রাহুল চোপড়া, যার ইনিংসে ছিল ১টি চার ও ১টি ছক্কা। ধ্রুব পারাশার যোগ করেন ২০, মুহাম্মদ ওয়াসিম ১৪ এবং আলিশান শারাফু করেন ১২ রান।
পাকিস্তানের বোলিং আক্রমণে শাহীনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দুটি করে উইকেট নেন হারিস রউফ ও আবরার আহমেদ।
এর আগে ব্যাট হাতে পাকিস্তানও ভুগেছে। চারজন ছাড়া কেউ দুই অঙ্কে পৌঁছাতে পারেননি। ফখর জামান খেলেন ৩৬ বলে ৫০ রানের দৃষ্টিনন্দন ইনিংস, যেখানে ছিল ২টি চার ও ৩টি ছক্কা। শাহীন আফ্রিদির অপরাজিত ২৯ রান ছাড়া অধিনায়ক সালমান আলি আগা ২০ এবং মোহাম্মদ হারিস যোগ করেন ১৮ রান।
আমিরাতের হয়ে দুর্দান্ত বোলিং করেন জুনায়েদ সিদ্দিকী। তিনি ৪ ওভারে মাত্র ১৮ রান দিয়ে তুলে নেন ৪টি উইকেট। সিমরানজিত সিংয়ের বোলিং ফিগারও কম চমকপ্রদ নয়, ৪ ওভারে ২৬ রান খরচ করে শিকার করেন ৩ উইকেট।
এই জয়ে পাকিস্তান-ভারত দ্বৈরথের আরেকটি অধ্যায় লেখার সুযোগ তৈরি হলো। শুধু তাই নয়, ভাগ্য যদি সহায় হয়, তবে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর ফাইনাল লড়াইও দেখা যেতে পারে এবারের এশিয়া কাপে।
ঢাকা/আমিনুল