রাকসু নির্বাচন বর্জনের বিন্দুমাত্র ইচ্ছা নেই ছাত্রদলের ভিপি প্রার
Published: 18th, September 2025 GMT
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনে ছাত্রদলের প্যানেল থেকে সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন শেখ নূর উদ্দিন আবীর। বর্তমানে তিনি রাবি শাখা ছাত্রদলের সহ-সভাপতির দায়িত্বে আছেন। লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের এই শিক্ষার্থী রাইজিংবিডি ডটকমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান সমস্যা, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও শিক্ষার্থীদের প্রতি তার অঙ্গীকার নিয়ে কথা বলেছেন।
রাইজিংবিডি: রাকসুতে প্রার্থী হওয়ার সিদ্ধান্ত কেন নিলেন?
আরো পড়ুন:
রাকসু নির্বাচন নিয়ে ৭ দাবি ছাত্রশিবিরের
রাকসু নির্বাচন: ৬ দফা দাবিতে ছাত্রদলের স্মারকলিপি
আবীর: আমি রাজনীতির সঙ্গে অনেক আগে থেকেই যুক্ত। ছাত্রদের কল্যাণে কাজ করে আসছি সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষ থেকেই। আমি ছাত্রদের কল্যাণে কাজ করতে চাই। তাদের অধিকার আদায়ে, তাদের কন্ঠস্বর হয়ে কাজ করতে চাই। তাই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া।
রাইজিংবিডি: চাউর হয়েছিল আপনারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন না। তারপরও সবার আগে দেওয়া প্যানেলে কোন কোন দিক বিবেচনায় নিয়েছেন?
আবীর: আমাদের প্যানেলে চারজন নারী আছেন। একজন এজিএস পদে লড়বেন। ক্রীড়া সম্পাদক প্রার্থী জাতীয় নারী ফুটবল দলের খেলোয়াড়। অন্যদের তুলনায় আমরা নারীদের প্রাধান্য দিয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয় ফুটবল দলের গোলরক্ষক, সাংস্কৃতিক কর্মী, সাংবাদিক, অরাজনৈতিক শিক্ষার্থীদের নিয়ে বৈচিত্র্যময় প্যানেল করেছি আমরা। আমরা চাই শিক্ষার্থীদের কণ্ঠস্বর হয়ে কাজ করতে।
রাইজিংবিডি: নির্বাচিত হতে পারলে কি করবেন?
আবীর: যেখানেই শিক্ষার্থীদের প্রয়োজন, তাদের অধিকার আদায়ের কথা উঠবে, সেখানে আমি থাকব। বিশেষ কোনো সেক্টর না, সব সেক্টরে কাজ করবো। শিকার্থীদের জন্য সেখানে কথা বলা দরকার, সেখানে এই আবীর থাকবে ইনশাআল্লাহ। এছাড়া শিক্ষার পরিবেশ, শিক্ষকদের নিরপেক্ষতা, একাডেমিক ক্যালেন্ডার বাস্তবায়ন, গ্রন্থাগার সংস্কার ও পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসাকেন্দ্র নিয়ে কাজ করব।
রাইজিংবিডি: আপনার মতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান সমস্যা কি কি?
আবীর: আবাসন সমস্যা আমাদের প্রধান সমস্যা। যারা অনাবাসিক আছেন তারা কোনোভাবেই হলে সিট পাচ্ছেন না। বিশাল একটা অংশ, প্রায় ৭০ ভাগ শিক্ষার্থী অনাবাসিক। তাদের হলে সিট পাওয়া অধিকার, এই অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে প্রশাসন। আমরা নির্বাচিত হলে শতভাগ আবাসিক করার জন্য প্রশাসন থেকে একটা রূপরেখা নেব। যদিও এটা একদিনে সম্ভব না, এটা একটা দীর্ঘ প্রক্রিয়া। আমরা অনাবাসিক ভর্তুকি চাই। এছাড়া নিরাপত্তা নিয়ে আমরা অবশ্যই কাজ করব।
আরেকটা সমস্যা হচ্ছে নির্বাচনে অর্থের ছড়াছড়ি। কোনো একটা গোষ্ঠী বা প্যানেল অর্থ দিয়ে শিক্ষার্থীদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে। কিন্তু অন্য প্যানেল বিশেষ করে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা তাদের অর্থাভাবে ঠিকমতো প্রচারণা চালাতে পারছে না। এছাড়া নারী শিক্ষার্থীদের বিভিন্নভাবে সেমিং, কুরুচিপূর্ণ কথা বলা হচ্ছে, যা অন্যতম একটা সমস্যা।
রাইজিংবিডি: ডাকসু, জাকসুর প্রভাব রাকসুতে পড়বে কি না?
আবীর: দেখুন, লর্ডসের পিচ এবং মেলবোর্নের পিচ দুইটা আলাদা। কিন্তু এক টিম, দুই জায়গায় কিন্তু দুই রকম রেজাল্ট করে। সুতরাং ডাকসু, জাকসুর সঙ্গে রাকসুর তুলনা করবেন না, এখানে পিচ আলাদা। ওখানে যারা ভালো করেছে, এখানে তারা নাও করতে পারে। সুতরাং আমি আশাবাদী ডাকসু এবং জাকসুর প্রভাব এখানে পড়বে না। আমাদের আলাদা পরিবেশ আলাদা কালচার। সুতরাং আমরা ওটা নিয়ে ভাবছি না। আমরা ডাকসু, জাকসুর পরাজয়ের কথা না ভেবে রাকসু নিয়ে ভাবছি।
রাইজিংবিডি: ছাত্রদল ডাকসুতে ভোট প্রত্যাখ্যান আর জাকসুতে বর্জন করেছে। রাকসুতে কি এমন হওয়ার সম্ভাবনা আছে?
আবীর: বর্তমানে আমাদের যে নির্বাচন কমিশন, তারা কতটা সদিচ্ছাপূর্ণ তা আমরা জানি না। তবে আমরা আশা করছি তাদের সদিচ্ছায় একটি স্বচ্ছ এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে। আমদের নির্বাচন বর্জনের বিন্দুমাত্র ইচ্ছা নেই। আশা করছি, তারা এমন কোনো পরিবেশ তারা সৃষ্টি করবেন না, যাতে শুধু আমরা না, একটা গোষ্ঠী বাদে সবাই বর্জন করতে বাধ্য হয়। যদি নির্বাচন সুষ্ঠু এবং গ্রহণযোগ্য হয়, সেখানে বর্জনের কোনো প্রশ্নই আসে না।
রাইজিংবিডি: শিক্ষার্থীরা কেন আপনাদের ভোট দিবে?
আবীর: আমাদের প্যানেলটা বৈচিত্র্যময়। এখানে সব ধরনের শিক্ষার্থী রয়েছেন। তারা বিশেষ ক্ষেত্রে অবদান রাখতে পারবেন এবং রাখছেনও। এটা শিক্ষার্থীরাও জানেন। আমরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে থেকে, তাদের দাবি আদায়ে কাজ করি। তারা ছাত্রদলকে ভালোবাসেন। শিক্ষার্থীদের ভালোবাসাই আমাদের শক্তি।
রাইজিংবিডি: নির্বাচন নিয়ে কতটা আশাবাদী? কেমন সাড়া পাচ্ছেন?
আবীর: আমরা অবশ্যই আশাবাদী। কারণ ৫ আগস্ট পরবর্তী যে নৈতিক চরিত্র হরণের একটা প্রচেষ্টা চলেছে, সেখানে আমরা আমাদের নৈতিক চরিত্র ধরে রেখে শিক্ষার্থীদের পাশে থেকেছি। তাদের জন্য সর্বদা কাজ করে গেছি। আশা করি, তারা যোগ্য প্রার্থীকেই বেছে নিবেন। আমরা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি।
ঢাকা/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ত রদল ছ ত রদল র ন সমস য ক জ কর আম দ র করব ন
এছাড়াও পড়ুন:
ঝিনাইদহে বেওয়ারিশ কুকুরের কামড়ে আহত ২০
ঝিনাইদহ পৌর এলাকায় বেওয়ারিশ কুকুরের কামড়ে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার দুপুর থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত পৌর এলাকার বিভিন্ন স্থানে একাধিক কুকুর পথচারীদের আক্রমণ করে কামড় দেয়। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে অন্তত ১৫ জন ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী প্রিয়ন্তী বসাক, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয়ের কর্মকর্তা শাহিনুর রহমানসহ অন্তত ১৫ জনকে হাসপাতালে টিকাসহ প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
হামদহ মোল্লাপাড়া এলাকার বাসিন্দা দীপু মিয়া বলেন, ‘বিকেলে আমাদের এলাকায় এক পথচারীকে একটি পাগলা কুকুর কামড় দেয়। কুকুরটি কয়েকজন পথচারীকে কামড় দিয়েছে, এমনকি বাড়ির ভেতরে ঢুকে শিশুদেরও আক্রমণ করেছে। দীর্ঘদিন শহরের বেওয়ারিশ কুকুরগুলোকে টিকা দেওয়া হয় না। এখন শহরে বেওয়ারিশ কুকুরের সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে গেছে।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শুধু হামদহ মোল্লাপাড়াই নয়, শহরের বিভিন্ন জায়গায় পাগলা কুকুর মানুষের ওপর হামলা চালিয়েছে। সন্ধ্যায় সরকারি বালক বিদ্যালয়ের সামনে এক শিশুকে বাঁচাতে গেলে জামির নামে এক যুবক কুকুরের কামড়ে আহত হন। একইভাবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কার্যালয়ে ঢুকে শাহিনুর রহমান নামে এক কর্মকর্তাকে কামড় দেয় কুকুরটি। আর কাঠপট্টি এলাকায় রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী প্রিয়ন্তী বসাকও কুকুরের কামড়ে আহত হন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের এসএএও শাহিনুর রহমান বলেন, ‘অফিস শেষ করে গ্যারেজ থেকে মোটরসাইকেল নিচ্ছিলাম। হঠাৎ গাড়ির নিচ থেকে একটি কুকুর দ্রুত আমার দিকে আসে। তাড়ানোর চেষ্টা করলে সেটি আমার পায়ে কামড়ে দেয়। পরে অনেক চেষ্টা করে কুকুরটিকে তাড়াতে পারি। পরে হাসপাতালে এসে টিকা নিয়েছি।’
কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও ভূমি ব্যবস্থাপনা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী প্রিয়ন্তী বসাক বলেন, ‘ঝিনাইদহ শহর থেকে ফিরে সড়ক ভবনসংলগ্ন কাঠপট্টি এলাকায় রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে ছিলাম। হঠাৎ একটি কুকুর এসে আমার ডান হাতে কামড় দেয়। এখন হাতে প্রচণ্ড যন্ত্রণা করছে। হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়েছি।’
ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ছোয়া ইসরাইল বলেন, কুকুরে কামড়ানো রোগীদের টিকাসহ প্রয়োজনীয় ওষুধ দেওয়া হয়েছে। তাঁদের শারীরিক অবস্থা শঙ্কামুক্ত।
ঝিনাইদহ পৌরসভার প্রশাসক রথীন্দ্রনাথ রায় বলেন, সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগের একটি প্রকল্পের মাধ্যমে পৌর এলাকার বেওয়ারিশ কুকুরদের ধরে টিকা দেওয়া হতো। করোনার সময় থেকে প্রকল্পটি বন্ধ হয়ে গেছে। তবে বেওয়ারিশ কুকুরের সংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়ে জরুরি ব্যবস্থা নিতে স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করে কী করা যায়, তা দেখা হচ্ছে।