‘আপু’ ডাকায় ক্ষেপে গেলেন চিকিৎসক, বের করে দিলেন রোগীকে
Published: 18th, September 2025 GMT
আপু ডাকায় এক রোগীর স্বজনের ওপর ক্ষেপেছেন শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মেডিকেল অফিসার মারজিয়া খাতুন। এমনকি রোগী ও তার স্বজনকে কক্ষ থেকে বের দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। অভিযোগকারী কাজী মাসুম শহরের নয়নী বাজার মহল্লার বাসিন্দা।
তিন জানান, দুপুর ২টার দিকে তার ছোট মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস মামিয়ার পেট ব্যথা নিয়ে জেলা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আসেন। এ সময় জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক অনন্যা তাকে কিছু ওষুধ লিখে দেন। হাসপাতালের ফার্মেসিতে ওষুধগুলো না পেয়ে বাইরের বিভিন্ন দোকানে খুঁজতে থাকেন। তবে, কোথাও পাননি। পরে আবার জরুরি বিভাগে ফিরে আসেন। দেখেন, চিকিৎসক অনন্যা ডিউটি শেষ করে চলে গেছেন। তার পরিবর্তে ডিউটিতে এসেছেন ডা.
কাজী মাসুমের অভিযোগ, তিনি বিনয়ের সঙ্গে ডা. মারজিয়াকে আপু সম্বোধন করে বলেন, আগের ডাক্তার যে ওষুধ দিয়েছিল সেটি পাওয়া যাচ্ছে না। অন্য কোনো ওষুধ দেওয়া যায় কি না। এ কথা শুনে ডা. মারজিয়া ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে বলেন, আপু বলছেন কেন? আমি মেডিকেল অফিসার। যান বের হয়ে যান। হতভম্ব হয়ে জানতে চাই, আপু ডেকে কি দোষ করেছি। এতে তিনি আরো রাগান্বিত হয়ে কয়েক দফা ধমকে তার কক্ষ থেকে বের করে দেন।
এদিকে ঘটনাটি জানার পর জেলায় কর্মরত কয়েকজন সাংবাদিক ওই চিকিৎসকের কক্ষে জান বিষয়টি সম্পর্কে জানতে। এ সময় সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘‘আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ছাড়া কারো সঙ্গে কথা বলব না।’’
শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) তাহেরাতুল আশরাফি বলেন, ‘‘বিষয়টি শুনেছি। হয়তো ভুলক্রমে তিনি এ কথা বলেছেন।’’
জেলা সিভিল সার্জন মুহাম্মদ শাহীন বলেন, ‘‘বিষয়টি দুঃখজনক ও অনাকাঙ্ক্ষিত। এ ধরণের কথা বা রুম থেকে কাউকে বের করে দেওয়া উচিত না। হাসপাতালে গ্রাম থেকে শহর সব পর্যায়ের লোকজন আসবে, তাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহারের সুযোগ নেই। এ বিষয়ে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের সঙ্গে কথা বলব।’’
ঢাকা/তারিকুল/রাজীব
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
খুলনার ফুটপাত পথচারীদের নয়, হকারদের দখলে
খুলনা নগরের প্রধান সড়ক ও ফুটপাত এখন পথচারীদের নয়, হকারদের দখলে। ডাকবাংলা থেকে বড়বাজার পর্যন্ত নগরের প্রধান ব্যবসাকেন্দ্রজুড়ে ফুটপাতের ওপর চলছে অস্থায়ী দোকানপাট, পণ্যের পসরা আর ক্রেতাদের ভিড়। ফলে পথচারীদের হাঁটার জায়গা নেই, স্থায়ী দোকানের ব্যবসায়ীরা হারাচ্ছেন ক্রেতা, হচ্ছেন ক্ষতিগ্রস্ত।
ডাকবাংলা এলাকা খুলনা নগরের বাণিজ্যিক প্রাণকেন্দ্র। এখানে ডাকবাংলা সুপারমার্কেট, রেলওয়ে মার্কেট, খুলনা বিপণিবিতান, দরবেশ চেম্বার, শহীদ সোহরাওয়ার্দী বিপণিবিতান, কাজী নজরুল ইসলাম মার্কেট, মশিউর রহমান মার্কেটসহ বড় শপিং কমপ্লেক্স আছে। মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষের অন্যতম বাজার এটি। কিন্তু এখন এর পুরো এলাকার ফুটপাত দখল হয়ে গেছে ভাসমান ব্যবসায়ীদের হাতে।
হকারদের ভিড়ে দোকান দেখা যায় নাসম্প্রতি সরেজমিনে দেখা গেছে, ডাকবাংলা মোড় থেকে ক্লে রোড পর্যন্ত ফুটপাতে মালামাল সাজিয়ে বসেছেন হকাররা। স্থায়ী দোকানদাররাও নিজেদের দোকানের সামনের জায়গা দখল করে ব্যবসা করছেন। ভ্যানে করে জামাকাপড়, ফল, গৃহস্থালির পণ্য বিক্রি হচ্ছে ফুটপাতের পর এখন রাস্তার অর্ধেকজুড়ে। পুরোনো যশোর রোড, সদর থানা মোড়, কেডি ঘোষ রোড থেকে হেলাতলা পর্যন্ত একই চিত্র। খালিশপুর চিত্রালি বাজার ও দৌলতপুর বাজারেও ফুটপাতের ওপর খাট বসিয়ে চালা তুলে ব্যবসা চলছে। ফলে পথচারীদের চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে প্রতিদিন।
খালিশপুর চিত্রালি বাজারের দোকান ব্যবস্থাপক মো. আসাদ বলেন, ‘হকারদের কারণে বাইরে থেকে আমাদের দোকান দেখা যায় না। তাদের ব্যবসা জমজমাট, কিন্তু আমাদের বিক্রি কমে গেছে। সিসিটিভি ক্যামেরাগুলোও ঢেকে গেছে অস্থায়ী দোকানে।’
খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) সূত্রে জানা গেছে, নগরের আয়তন ৪৬ বর্গকিলোমিটার, পাকা সড়ক ৬৪১ কিলোমিটার। ফুটপাতের সঠিক হিসাব না থাকলেও অন্তত ২৫ কিলোমিটার ফুটপাত হকারদের দখলে। চলতি বছরে ১২ দিনের মতো উচ্ছেদ অভিযান চালানো হলেও কয়েক দিনের মধ্যেই ফের দখল হয়ে যায়।
কেসিসির সম্পত্তিবিষয়ক কর্মকর্তা গাজী সালাউদ্দীন বলেন, ‘আমরা নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছি। কিন্তু নাগরিক সমাজ, ব্যবসায়ী নেতা ও প্রশাসন সবাই একসঙ্গে উদ্যোগ না নিলে এটি বন্ধ হবে না। অনেকে নিজের দোকানের সামনের ফুটপাতও ভাড়া দেন হকারদের। সহযোগিতা না পেলে একা আমাদের কিছু করার নেই।’
পথচারীদের চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সম্প্রতি তোলা