সোনারগাঁয়ে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ডের সঙ্গে জড়িত সজিব মিয়া ওরফে ব্লেড সজিবকে দেশীয় অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-১১ একটি দল।

গত শনিবার রাতে বন্দর উপজেলার মদনপুর এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তারে করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে একটি ছুরি, একটি সুইচ গিয়ার, একটি লেজার লাইট ও একটি ইলেকট্রিক শকার উদ্ধার করা হয়। 

রবিবার দুপুরে এক র‌্যাব-১১ সিনিয়র এএসপি অপস অফিসার মো.

গোলাম মোর্শেস স্বাক্ষরিক এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

গ্রেপ্তারকৃত সজীব মিয়া ওরফে ব্লেড সজিব (২২) সোনারগাঁয়ের পিরোজপুর ইউনিয়নের দুধঘাটা এলাকার মো. শহিদুল্লাহর ছেলে তার বিরুদ্ধে সোনারগাঁ থানায় গণধর্ষণ, ছিনতাই ও ডাকাতিসহ ১০টি বিভিন্ন অপরাধে মামলা রয়েছে। 

জানা যায়, চলতি বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারী মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার বালুয়াকান্দি এলাকার এক নারী সন্ধ্যায় তার দেবরকে নিয়ে মদনপুর এলাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বোনকে দেখতে যান। 

পরে তার দেবর ও ওই নারী রাতে সিএনজিযোগে সোনারগাঁ পৌরসভার কৃষ্ণপুরা এলাকায় তার খালাতো ভাইয়ের বাড়ি যাওয়ার পথে রাত সাড়ে ১১টার দিকে চিলারবাগ এলাকায় সজীব ওরফে ব্লেড সজিব নেতৃত্বে ৬-৭ জন সহযোগী নিয়ে তাদের বহনকারী সিএনজি গতিরোধ করে।

একপর্যায়ে তাদের দেশীয় অস্ত্র ঠেকিয়ে অপহরণ করে দৈলেরবাগ এলাকার একটি পরিত্যক্ত টিনশেড বাড়িতে নিয়ে যায়। তাদের মারধর করে নগদ টাকা এবং স্বর্ণের কানের দুল ছিনিয়ে নেয়।

পরবর্তীতে ছিনতাইয়ের পর সজিব ও তার সহযোগীরা মিলে ওই নারীর দেবরকে অন্য একটি কক্ষে আটকে রেখে নারীকে জোরপূর্বক পালাক্রমে ধর্ষণ করে। ঘটনার পরদিন ভূক্তভোগী নারী সোনারগাঁ থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর থেকে সজিব মিয়া পলাতক থাকে।

পরে র‌্যাব তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে তার অবস্থানি নিশ্চিত হয়ে গত শনিবার রাতে মদনপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে। রবিবার বিকেলে গ্রেপ্তারকৃত সজিবকে সোনারগাঁ থানায় হস্তান্তর করেছে।  

সোনারগাঁ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো: রাশেদুল হাসান খান জানান, র‌্যাব-১১ এর একটি দল সজিবকে গ্রেপ্তার করে থানায় হস্তান্তর করেছে। সজিবের বিরুদ্ধে ডাকাতি, গণধর্ষণ ও অস্ত্র মামলাসহ ১০টি মামলা রয়েছে। ওই মামলায় গ্রেপ্তারে দেখিয়ে সোমবার আদালতে পাঠানো হবে।
 

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: স ন রগ ও ন র য়ণগঞ জ অপর ধ এল ক র স ন রগ

এছাড়াও পড়ুন:

রাতে নারীদের বাইরে বের হওয়া নিয়ন্ত্রণ করা উচিত: মমতা

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, “রাতে নারীদের বাইরে বের হওয়া নিয়ন্ত্রণ করা উচিত,গভীর রাতে জঙ্গলের মতো জায়গায় মেয়েদের বের হওয়া উচিত নয়।”

পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিম বর্ধমান জেলার দুর্গাপুরের এক বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গণধর্ষণ কাণ্ডে পুলিশ ও প্রশাসনের দায় এড়াতে গিয়ে এমন বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন তিনি । শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গণধর্ষনের মত গুরুতর অপরাধের দায় এড়াতে মমতা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি বেসরকারি বলেও দায় এড়ানোর চেষ্টা করেন তিনি।  রবিবার উত্তরবঙ্গে বিপর্যয় পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে যাওয়ার আগে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে এমন মন্তব্য করেন মমতা।

গণধর্ষণ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলে মমতা বলেন, “পুলিশকে জিজ্ঞেস করুন, আমাকে নয়। একটি বেসরকারি কলেজ। কেউই সমর্থন করছে না। তিন সপ্তাহ আগে ওড়িশায় তিনটি মেয়েকে সমুদ্র সৈকতে ধর্ষণ করা হয়। ওড়িশা সরকার কী করেছে? বাংলায় মহিলাদের সঙ্গে কিছু হলে, আমরা হালকা ভাবে নিই না। গুরুতর ঘটনা।”

দুর্গাপুরের ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী তার সরকারের উপর দায় চাপানোর বিষয়টিকে অন্যায় বলে অভিহিত করেন। তার মতে, ছাত্রীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব বেসরকারি মেডিকেল কলেজেরই ছিল।

মমতা বলেন, “স্তম্ভিত করে দেওয়ার মতো ঘটনা। ওই মেয়েটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজে পড়ছিল। বেসরকারি কলেজে....কার দায়িত্ব। রাত ১২ টা ৩০ মিনিটে বেরোল কী করে? আমি যতদূর জানি, জঙ্গলের মধ্যে ঘটেছে। ১২টা ৩০ মিনিটে কী হয়েছে জানি না। তদন্ত চলছে। আমি হতবাক। বেসরকারি মেডিকেলগুলোকে সতর্ক হতে হবে, পড়ুয়াদের খেয়াল রাখতে হবে। বিশেষ করে মেয়েদের ক্ষেত্রে, রাতের বেলায় বাইরে বেরোতে দেওয়া উচিত নয়। নিজেদের রক্ষা করতে হবে। বিশেষ করে জঙ্গল এলাকায়। আমি প্রাথমিক যে রিপোর্ট পেয়েছি, পুলিশ তল্লাশি চালাচ্ছে। কেউ রেহাই পাবে না। যেই দোষী হোক না কেন, কড়া শাস্তি দেওয়া হবে।”

তিনি বলেন, “তিন জনকে ইতিমধ্যেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে মেয়েটির বয়ানের ভিত্তিতেই। আমরা কড়া পদক্ষেপ নেব।”

দুর্গাপুরে ওড়িশার বাসিন্দা ওই ছাত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগ ঘিরে রাজনীতিও তপ্ত হয়ে উঠেছে। সেই আবহেই উত্তরপ্রদেশ থেকে একটি গণধর্ষণের ঘটনা সামনে এসেছে। 

সেই নিয়ে প্রশ্ন করা হলে মমতা বলেন, “অন্য রাজ্যের ঘটনাও সমান নিন্দনীয়। মণিপুর, উত্তরপ্রদেশ, বিহারে, ওড়িশায় বহু ঘটনা ঘটেছে। সেখানকার সরকারেরও কড়া পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। আমাদের রাজ্যে এক-দু’মাসে চার্জশিট দেওয়া হয়। নিম্ন আদালত মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত দিয়েছে।”

লখনউয়ে গণধর্ষণের ঘটনা নিয়ে মমতা বলেন, “অনেক ঘটনা ঘটছে। রোজ ঘটছে। সেখানে মাথাব্যথা নেই। ধর্ষিতাকে আদালতে পৌঁছনোর আগে পুড়িয়ে মেরে ফেলা হয়। সাংবাদিকদের ধরে, নগ্ন করে জেলে পুরে রাখে। এমন অনেক ঘটনা ঘটে। আমরা কোনো ঘটনাকেই সমর্থন করি না। জিরো টলারেন্স নীতি মেনে চলি বাংলায়। বিভিন্ন রাজ্যের ছেলেমেয়ে এখানে পড়তে আসেন। তাদের আমি অনুরোধ করব, রাত্রি বেলা না বেরোতে। পুলিশ তো জানতে পারে না, কে কখন রাত্রিবেলা বেরিয়ে যাচ্ছে! বেসরকারি মেডিকেল কলেজেরও একটা দায়িত্ব আছে, পড়ুয়াদের দেখভাল করা। পুলিশ তো আর বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে বসে থাকবে না! কেউ যদি রাত ১২টা ৩০ মিনিটে বেরিয়ে কোথাও যায়...ঘটনাটা নিন্দনীয়, ঘটনাটিকে সমর্থন করছি না। যে যেখানে যেতে পারে, তার অধিকার। কিন্তু হস্টেলে থাকে যারা, একটা সিস্টেম আছে। ও ফার্স্ট ইয়ারের পড়ুয়া। এটা প্রাইভেট কলেজ। ওদের নিরাপত্তা আরো বাড়ানো উচিত। আমি ডিটেলস খবর নিয়েছি। পুলিশকে বলেছি কড়া পদক্ষেপ নিতে। কেউ রেহাই পাবে না।”

ধর্ষণের শিকার ওই তরুণী ওড়িশার জলেশ্বরের বাসিন্দা। তরুণীর পরিবার জানিয়েছে, ১০ অক্টোবর রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ ওই পড়ুয়া সহপাঠীদের সঙ্গে কলেজের বাইরে খেতে বেরিয়েছিলেন। সেই সময় কয়েকজন যুবক ওই তরুণীর পথ আটকায় এবং জোর করে হাসপাতালের পিছনের দিকে থাকা একটি জঙ্গলে নিয়ে যায়। 

সুচরিতা/শাহেদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রাতে নারীদের বাইরে বের হওয়া নিয়ন্ত্রণ করা উচিত: মমতা