‘ডিসেম্বরের মধ্যে বিদেশিদের হাতে যাবে ৩ টার্মিনাল’
Published: 13th, October 2025 GMT
আলোচিত চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি), লালদিয়ার চর টার্মিনাল এবং ঢাকার কেরাণীগঞ্জের পানগাঁও অভ্যন্তরীণ কনটেইনার টার্মিনাল পরিচালনার জন্য বিদেশি অপারেটরদের সঙ্গে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে চুক্তি সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ ইউসুফ।
তিনি বলেন, “এসব টার্মিনাল ২৫ থেকে ৩০ বছরের জন্য বিদেশিদের হাতে ছেড়ে দেওয়া হবে। আশা করছি, ডিসেম্বরের মধ্যে এ বিষয়ে চুক্তি হবে।” বন্দরের সক্ষমতা বাড়াতে এ ছাড়া আর উপায় নেই বলেও জানান তিনি।
রবিবার(১২ অক্টোবর) পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) মিলনায়তনে 'সমুদ্রগামী জাহাজশিল্পের বিনিয়োগ সম্ভাবনা' শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথাগুলো বলেন তিনি।
ইআরএফের আয়োজনে অনুষ্ঠিত এই সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির সভাপতি দৌলত আক্তার। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ সমুদ্রগামী জাহাজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আজম জে চৌধুরী। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) চেয়ারম্যান জাইদী সাত্তার। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ইআরএফের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম।
নৌসচিব জানান, বিদেশিদের সঙ্গে টার্মিনালগুলো পরিচালনার যে চুক্তি হবে, প্রয়োজনে তা প্রকাশ করা হবে ওয়েবসাইটে।
চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বাড়ানো হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “পৃথিবীর কোথাও যেটা নেই, আমরা তা করছি, বন্দরের মধ্যে কনটেইনার খুলে পণ্য ছাড় করা হচ্ছে। চট্টগ্রাম বন্দরের ১৩টি গেট আছে, এর মধ্যে স্ক্যানিং মেশিন আছে মাত্র ৬টি। তার মধ্যে আবার ৩-৪টি নষ্ট থাকে। এভাবে বন্দর চলতে পারে না। এ জন্য আমরা বন্দরের সক্ষমতা বাড়াতে বিদেশি অপারেটর নিয়োগের চেষ্টা করছি।”
এটা করতে পারলে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়বে জানিয়ে তিনি আরো বলেন, “২০৩০ সালের মধ্যে আমাদের ৫ দশমিক ৩৬ মিলিয়ন টিইউএস কনটেইনার ওঠানো–নামানোর চ্যালেঞ্জ সামাল দিতে হবে। তাই বিদেশি অপারেটর নিয়োগ ছাড়া উপায় নেই।” ভারত, শ্রীলঙ্কাসহ অনেক দেশেই এমন বিদেশি অপারেটর আছে বলেও তিনি জানান।
দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রাম নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) পরিচালনা করে আসছিল বেসরকারি অপারেটর সাইফ পাওয়ারটেক লিমিটেড। গেল জুলাই প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে চট্টগ্রাম বন্দরের চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বেসরকারি অপারেটরটির সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ না বাড়িয়ে বিদেশি অপারেটরকে দায়িত্ব দেওয়ার উদ্যোগ নেয়। আর সেই কাজে দুবাইভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ডিপি ওয়ার্ল্ডের নাম উঠে আসে। এর মধ্যে ছয় মাসের জন্য টার্মিনালটি পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছে নৌবাহিনীর প্রতিষ্ঠান চিটাগং ড্রাইডক লিমিটেড। বিদেশি অপারেটরদের দায়িত্ব দেওয়া নিয়ে এর আগে বেশ বিতর্ক সৃষ্টি হয়।
ঢাকা/এএএম/ইভা
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ট ইন র সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
৪০ বছর পর চট্টগ্রাম বন্দরের মাশুল বেড়েছে, কমানোর সুযোগ নেই: নৌপরিবহন সচিব
নৌ পরিবহন সচিব মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, ১৯৮৬ সালের পর এ বছর চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহারে মাশুল বাড়ানো হয়েছে। গত প্রায় ৪০ বছরে মাশুল বাড়ানো হয়নি। তাই এই মাশুল কমানোর সুযোগ নেই। তিনি বলেন, পাঁচ বছর পরপর এটা বাড়ানো উচিত ছিল।
আজ রোববার রাজধানীর পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) মিলনায়তনে ‘সমুদ্রগামী জাহাজ শিল্পের বিনিয়োগ সম্ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন নৌপরিবহন সচিব মোহাম্মদ ইউসুফ। ইআরএফের আয়োজনে অনুষ্ঠিত এই সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির সভাপতি দৌলত আক্তার। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ সমুদ্রগামী জাহাজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আজম জে চৌধুরী।
নৌপরিবহন সচিব মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, ‘কনটেইনার টার্মিনাল পরিচালনায় আন্তর্জাতিক অপারেটর নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে। আশা করছি, ডিসেম্বরের মধ্যে এই নিয়োগ হয়ে যাবে। তাদেরও মুনাফার বিষয় আছে। তাই মাশুল কমানোর সুযোগ নেই। সমীক্ষার ভিত্তিতে এই মাশুল নির্ধারণ করা হয়েছে। যদিও এই হার একটু বেশি।’
বিদেশি অপারেটর নিয়োগের বিষয়ে নৌপরিবহন সচিব বললেন, ‘চট্টগ্রামসহ তিনটি কনটেইনার টার্মিনাল পরিচালনায় বিদেশি অপারেটর নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। ২০ থেকে ৩০ বছরের জন্য এই অপারেটর নিয়োগ দেওয়া হবে। এসব টার্মিনালের সক্ষমতা বাড়িয়ে লিড টাইম কমিয়ে আনতে বিদেশি অপারেটর ছাড়া উপায় নেই। এসব চুক্তি প্রয়োজনে আমরা ওয়েবসাইটে দিয়ে দেব।’ ভারত, শ্রীলঙ্কাসহ অনেক দেশেই এমন বিদেশি অপারেটর আছে বলে জানান তিনি।
আজম জে চৌধুরী বলেন, সমুদ্রগামী জাহাজ খাতে বিনিয়োগে কর অবকাশ দেওয়া ছিল ২০৩০ সাল পর্যন্ত। এ কারণে বাংলাদেশি জাহাজের সংখ্যা বেড়েছে। কিন্তু বর্তমান সরকার এই কর অবকাশ বাতিল করেছে। ফলে সাড়ে তিন বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ চ্যালেঞ্জে পড়েছে। এই কর অবকাশ পুনর্বহালের দাবি জানান তিনি।
এর আগে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) চেয়ারম্যান জাইদী সাত্তার। তিনি বলেন, পোশাক খাতের বাইরে চার-পাঁচটি খাত এক বিলিয়ন ডলারের বেশি রপ্তানি করে। ভবিষ্যতে জাহাজ নির্মাণশিল্প এক বিলিয়ন ডলার রপ্তানির সুযোগ রয়েছে। সে জন্য ব্যাংক গ্যারান্টিসহ অর্থায়নের সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।
অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন ইআরএফের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম।