বিদেশি খেলোয়াড়, দেশি খেলোয়াড় চিন্তা করে বাংলাদেশ জিততে পারবে না—বললেন শমিত
Published: 15th, November 2025 GMT
এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের লড়াই সামনে। মঙ্গলবার রাত আটটায় জাতীয় স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ ও ভারত। ম্যাচ ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে দুই দলের লড়াই ঘিরে উত্তেজনাও বাড়ছে।
ভারত ফুটবল দল আজ বিকেলে ঢাকায় নেমেছে, লক্ষ্য—বাংলাদেশকে হারানো। অন্যদিকে বাংলাদেশও হারাতে মরিয়া ভারতকে। সেই ২০০৩ সালে ঢাকা সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে ভারতকে সর্বশেষ হারিয়েছিল বাংলাদেশ। এবার লক্ষ্য ২২ বছরের জয়খরা কাটানো।
১৩ নভেম্বর নেপালের বিপক্ষে শেষ দিকে গোল হজম করে নিশ্চিত জয় হাতছাড়া হয়েছে (২–২)। সেই ড্রয়ের হতাশা যেন ভারত ম্যাচে বাংলাদেশের জয়ের তৃঞ্চা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। আজ বিকেলে দলের অনুশীলন শুরুর আগে মিডফিল্ডার শমিত সোমের সংবাদ সম্মেলনে যা ফুটে উঠেছে।
জুনে লাল–সবুজ জার্সি গায়ে চাপানোর পর এখন পর্যন্ত ৪ ম্যাচ খেলেছেন শমিত, তবে জয়ের দেখা পাননি। নিজের ৫ম ম্যাচে জয়ের জন্য কতটা মুখিয়ে আছেন কানাডাপ্রবাসী ফুটবলার, তা বোঝাতে গিয়ে শমিত বলেন, ‘আমি আসার পরে এখনো জিতিনি। আমি ও পুরো দল (উপায়) খুঁজছি, কীভাবে ভারত ম্যাচটা জিততে পারি।’
গত কয়েক মাসে বাংলাদেশ দলে কেমন উন্নতি দেখলেন প্রশ্নে শমিতের উত্তর, ‘চার–পাঁচ মাসে অনেক উন্নতি হয়েছে। আমরা টিম স্পিরিট, টিম পাসিং, ম্যাচের কন্ট্রোল.
শমিত বলেন, ‘ভারত ভালো দল। আমরাও ভালো দল। এই ম্যাচটার অনেক অর্থ আছে। লড়াই হবে। আমরা তৈরি থাকব, আশা করি, জিততে পারব। চেষ্টা থাকবে যেন ভালো খেলতে পারি, ভালো পারফরম্যান্স দিতে পারি।’ অন্য এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘২২ বছর বোধ হয় জিতি না ওদের সঙ্গে। আমরা জানি, এই ম্যাচ জিততে হবে এবং জিতব।’
নেপাল ম্যাচের আগে হংকং ম্যাচেও শেষ সময়ে গোল হজম করেছিল বাংলাদেশ। কেন এমন হচ্ছে জিজ্ঞাসা করলে শমিত বলেন, ‘ফুটবলে এগুলো হয়। কিছুটা ভাগ্যও দরকার। নেপালের শেষ সময়ে ওই কর্নার কিক...ওটা আসলে মনে হয় অফসাইডও ছিল। জানি না, কী কারণে এগুলো হচ্ছে। তবে আশা করি, আমরা ওই ভাগ্যটা পাশে পাব, যাতে এভাবে গোল না খাই।’
তাঁর কথায়, ‘মূল বিষয় আমাদের মনোযোগী থাকতে হবে শেষ মিনিট পর্যন্ত। আমাদের একটু মনোযোগ বাড়াতে হবে। আর তৈরি থাকতে হবে। আমরা যে সর্বশেষ তিন–চার–পাঁচ ম্যাচে খেলেছি, বেশির ভাগে আমরা লিডিং পজিশনে ছিলাম। প্রতিপক্ষের সঙ্গে মনস্তাত্ত্বিক লড়াইয়ে আরও শক্ত হতে হবে। এগুলো আমরা এখনো শিখিনি। আস্তে আস্তে আরও শিখব এবং অভিজ্ঞতা পাব। আর জিততে পারব।’
বাংলাদেশ দলে এখন সাতজন প্রবাসী ফুটবলার। তাঁদের উপস্থিতি দলের শক্তি বাড়িয়েছে। ঘুরেফিরে দেশি-বিদেশি প্রসঙ্গ আলোচনায় আসছে। এ নিয়ে প্রশ্নের জবাবে শমিত বলেন,‘ আমাদের টিম ১১ জনের। দেশি–বিদেশি কোনো বিষয় নয়। আমাদের সবার একসঙ্গে থাকতে হবে যেন ম্যাচটা কীভাবে জিততে পারি। আমরা কোনো দিন চিন্তা করিনি যে বিদেশি খেলোয়াড়, দেশি খেলোয়াড়...ওভাবে তো বাংলাদেশ জিততে পারবে না। আমাদের সবাইকে একসঙ্গে থাকতে হবে। ওভাবে আমি চিন্তা করি না। এটা করা যায় না।’
বাংলাদেশের ফুটবলে কোচ হাভিয়ের কাবরেরাকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনামুখর অনেকেই। হামজা-শমিতদের নিয়ে গড়া বাংলাদেশের জন্য হাভিয়ের কাবরেরা উপযুক্ত কোচ কি না, এই প্রশ্ন অনেকের।
এ নিয়ে প্রশ্ন হলে শমিত দাঁড়িয়েছেন কোচের পাশেই, ‘কোচ তো আমাদের টিমের জন্য খুব ভালো। আমি এখানে এসে দেখছি যে সবকিছু মোটামুটি ভালো স্ট্যান্ডার্ডে রেখেছেন কোচ। কোচের মনোভাব এবং পরিকল্পনা ভালো। আমরা কোচকে বিশ্বাস করি। তিনি দলকে খেলাবেন, ট্যাকটিকস সাজাবেন। আমরা যদি তা মাঠে বাস্তবায়ন করতে পারি, তাহলে জিততে পারব।’
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
নির্বাচন ও গণভোট একসঙ্গে করার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের আহ্বান জামায়াতসহ ৮ দলের
জুলাই জাতীয় সনদ জারির জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে ধন্যবাদ জানিয়েছে জামায়াতে ইসলামীসহ সমমনা আট দল। তবে জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট একসঙ্গে করার যে সিদ্ধান্ত, সেটির নিন্দা জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টাকে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করার আহ্বান জানিয়েছে তারা।
আজ বৃহস্পতিবার রাতে সমমনা আট দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন, জুলাই সনদ জারির জন্য প্রধান উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ। তবে এই সনদের কার্যকারিতার জন্য জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট অপরিহার্য। কিন্তু প্রধান উপদেষ্টা গণভোট ও নির্বাচন একসঙ্গে হবে বলে বিভ্রান্তি তৈরি করেছেন। দলগুলো এর নিন্দা জানাচ্ছে। প্রধান উপদেষ্টা যেন এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করেন, সেই আহ্বান জানাচ্ছে দলগুলো।
রাজধানীর মগবাজারে জামায়াতের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় অনুষ্ঠিত ব্রিফিংয়ে সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন, প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে নির্বাচন এবং বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে যে জট লেগে আছে, সেটির সুষ্ঠু সমাধান হবে, এমনটাই আশা করেছিল সমমনা দলগুলো। কিন্তু ভাষণ বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, জাতির মুক্তির প্রত্যাশা পূরণ হয়নি।
জামায়াতের এই নেতা বলেন, প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে কিছু বিষয় আছে যা বিবেচনায় নেওয়া যায়। আবার কিছু বিষয় আছে, যেটির কারণে ভালো দিকগুলো বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে গেছে।
আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন, সমমনা দলগুলো বলে আসছে, কোনটি জনগণ গ্রহণ করেছে আর কোনটি গ্রহণ করেনি, সেটির জন্য গণভোট আগে নির্ধারণ হয়ে যাওয়া দরকার। জনগণ কিছুই গ্রহণ না করলে আগের মতো নির্বাচন হবে। আর জনগণ যদি কিছু গ্রহণ করে বা পুরোটা গ্রহণ করে, তার ভিত্তিতেই নির্বাচন হবে।
প্রধান উপদেষ্টা গণভোটের বিষয়ে দুটো ‘ঠুনকো যুক্তি’ দিয়েছেন অভিযোগ করে জামায়াতে ইসলামীর এই নেতা বলেন, প্রথমত টাকা সাশ্রয়ের কথা বলা হয়েছে। সাশ্রয় কিছুটা হবে। তবে জাতির প্রয়োজনেই যেমন বাজেট হয়, বাজেট খরচও হয়। সে হিসেবে গণভোটে যেটি খরচ হবে, সেটি উপকারের চেয়ে নগণ্য। আর দ্বিতীয়ত একসঙ্গে নির্বাচন ও গণভোট হলে গণভোটে জনগণ যেগুলো ‘হ্যাঁ’ করবে, সেগুলো বাস্তবায়নে জটিলতা তৈরি হবে।
আট দলের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে আগামীকাল শুক্রবার বিস্তারিত প্রতিক্রিয়া জানানো হবে বলে উল্লেখ করেন আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের। এ ছাড়া নির্বাচনের আগে গণভোটসহ পাঁচ দফা দাবিতে আট দলের পূর্বঘোষিত দেশজুড়ে বিক্ষোভ সমাবেশ অব্যাহত থাকবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।