চেয়ারে বসে টেবিলে রাখা ল্যাপটপে এই লেখা যখন লিখতে বসেছি, তখন আমার আড়াই বছরের কন্যা আমার কোলে। নিয়ম ভেঙে ওকে মুঠোফোনে কার্টুন দেখতে দিয়েছি। সেটি সে আমার কোলে বসেই দেখবে। বিছানায়, কার্টুন আঁকা নরম মাদুরে ছড়ানো–ছিটানো খেলনা; কিন্তু সে কোল থেকে নামবে না।

এক রাতে ঘুম ভেঙে বাথরুমে গেছি। দরজা খুলে রীতিমতো আঁতকে উঠলাম। সামনে আমার কন্যা দাঁড়িয়ে চোখ মুছছে। আমি ওর পাশ থেকে বিছানা ছেড়ে উঠে আসায় সে-ও ওঠে, অল্প আলোয় মশারি থেকে বেরিয়ে বাথরুমের দরজার সামনে এসে দাঁড়িয়েছে।

কন্যাকে নিয়ে যখন একটু হাঁটতে বের হই বা শপিংয়ে যাই, সে কোল থেকে নামবে না! জুতায় ময়লা লাগবে, নানা বাহানা। উপায় না দেখে ১০ কেজি অতিরিক্ত ওজন নিয়েই পথ চলি।

আরও পড়ুনশিশু ভারী ব্যাগ বহন করলে যেসব সমস্যা হতে পারে২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

খেলনা দিয়ে বসিয়ে কোনো কাজে গেলে কিছুক্ষণ পরই শুরু হয়, ‘মা, পা ব্যথা করে। মশা কামড় দিছে। পিঁপড়া কামড় দিছে। খাটের নিচে একটা ডায়নোসর। মা পেটু (পেট) ব্যথা। পানি খাব…এই দেখো, একটা টিকটিকি। এদিকে আসো…।’ এক কথায়, সে আমার উপস্থিতি আর সক্রিয় মনোযোগ চায়। সে চায় না আমি তাকে রেখে কিছু করি।

সেদিন ফেসবুক স্ক্রল করতে করতে দেখলাম, আমার কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বান্ধবী মুক্তা লিখেছেন, ‘ঘণ্টাখানেক ঘাড়ে নিয়ে হেঁটে হেঁটে ছোটবেলার সব মুখস্থ কবিতা পড়া শেষ করে, গুনগুনিয়ে বাচ্চাকে ঘুম পাড়ানো থেকে ঘুমন্ত বাচ্চাকে বিছানায় “ল্যান্ড করানো” বড় চ্যালেঞ্জ। এই নিয়ে তিনবার শোয়ালাম।’

মানে হলো, শিশুটি একা শোবে না। পাশে মাকেও শুয়ে থাকতে হবে। সে মায়ের শরীরের ওমে ঘুমাবে। না হলে শোয়ানোমাত্র উঠে যাবে, কাঁদবে।

ভেলক্রো বেবিদের কোল থেকে নামালেই কাঁদতে থাকে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আম র ক

এছাড়াও পড়ুন:

এইচএসসি পরীক্ষার্থী সাদিয়া এক দিনের নরওয়ের রাষ্ট্রদূত

এইচএসসি পরীক্ষার্থী সাদিয়া এক দিনের জন্য গত শনিবার (১১ অক্টোবর) বাংলাদেশে নরওয়ের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। পঞ্চগড়ে জন্ম ও বেড়ে ওঠা সাদিয়া সব সময় ন্যায়বিচার ও সমতার পক্ষে কাজ করে আসছেন এবং ইতিমধ্যে শিশু অধিকার ও জেন্ডার সমতার একজন তরুণ কণ্ঠস্বর হিসেবে নিজের জায়গা করে নিয়েছেন।

এ বছরের আন্তর্জাতিক কন্যাশিশু দিবস পালিত হয়েছে ১১ অক্টোবর। এবারের বৈশ্বিক প্রতিপাদ্য ‘The girl I am, the change I lead: Girls on the frontlines of crisis’ এবং জাতীয় প্রতিপাদ্য ‘আমি কন্যাশিশু—স্বপ্ন গড়ি, সাহসে লড়ি, দেশের কল্যাণে কাজ করি।’ এ প্রতিপাদ্যগুলোই মনে করিয়ে দেয় যে সংকটের সময় মেয়েরাই পরিবর্তনের অগ্রভাগে থাকে।

এ ব্যাপারে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে প্লান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ জানিয়েছে, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনালের বৈশ্বিক এ কর্মসূচির অংশ হিসেবে কিশোরীরা প্রতীকীভাবে বিভিন্ন দূতাবাস, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও উন্নয়ন সংস্থার নেতৃত্বে আসছে। এই উদ্যোগে কিশোরীরা প্রতীকীভাবে দূতাবাস, সরকারি দপ্তর, উন্নয়ন সংস্থা ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্বের আসনে এক দিনের জন্য অধিষ্ঠিত হয়—নেতৃত্ব বিকাশ ও প্রচলিত ধ্যানধারণাকে চ্যালেঞ্জ করার লক্ষ্যে।

সাদিয়া বলেন, ‘এই টেকওভার উদ্যোগ আমাকে গভীরভাবে অনুপ্রাণিত করেছে। আমি আশা করি, আমার এই অভিজ্ঞতা অন্য কিশোরীদেরও উৎসাহিত করবে নিজেদের মূল্যবোধে বিশ্বাস রাখতে এবং এমন একটি পৃথিবী গড়তে, যেখানে সমতা বাস্তবতা হয়ে উঠবে।’

পঞ্চগড়ে জন্ম ও বেড়ে ওঠা সাদিয়া ন্যায়বিচার ও সমতার পক্ষে কাজ করে আসছেন

সম্পর্কিত নিবন্ধ