সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে দুইটি আলাদা ফ্লাইটে গতকাল দেশে ফেরেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা। সন্ধ‌্যার পরপরই বড় বহর আসে। যেখানে ছিলেন নাঈম, মোস্তাফিজ, সাইফ, হাসান, রিশাদ, তানজিম, তাসকিনরা। 

দেশে পা রেখেই অপ্রীতিকর ঘটনার মুখোমুখি হতে হয় তাদেরকে। বিমানবন্দর থেকে বের হওয়ার পথে সমর্থকদের তোপের মুখোমুখি হতে হয় তাদেরকে। ভুয়া-ভুয়া স্লোগান, পরিবার তুলে গালাগাল চলতে থাকে। কিন্তু তারা কেউই ক্রিকেট সমর্থক ছিলেন না।

ঠিক ওই সময়ে একজন রাজনৈতিক নেতা ভিভিআইপি টার্মিনাল দিয়ে বের হচ্ছিলেন। তার আগমণ উপলক্ষ‌্যে কর্মীরা গিয়েছিলেন বিমানবন্দরে।  কিন্তু তারা যখন জানতে পারেন ক্রিকেটাররা ওই সময়ে বের হবেন তখনই ক্ষোভ উগড়ে দেন। 

সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ খুবই খারাপ ক্রিকেট খেলছে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ হেরেছে প্রচন্ড বাজেভাবে। সিরিজ হারের পর প্রথমবার হোয়াইটওয়াশ হয়েছে তাদের বিপক্ষে। শেষ ম‌্যাচে পরাজয়ের ব‌্যবধান ছিল ২০০। অলআউট হয় মাত্র ৯৩ রানে। এর আগে এশিয়া কাপেও ভালো করতে পারেনি। কিন্তু আফগানদের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতেছিল দল। পঞ্চাশ ওভারের ক্রিকেটে নুন‌্যতম লড়াই করতে না পারায় মূলত ক্ষোভ তৈরি হয়।

নাঈম বের হওয়ার সময় তার গাড়িতে আঘাত করেছেন তারা। তাসকিনের গাড়িতেও একই কাণ্ড হয়েছে। ব‌্যাটিংয়ে কেবল ভালো সময় কাটানো সাইফ হাসান স্ত্রী ও বাচ্চা নিয়ে ফিরেছিলেন। তাকেও এই রোষানলের শিকার হতে হয়। বিষয়গুলো একদমই ভালো ভাবে নেননি শেষ ওয়ানডেতে ২৪ বলে ৭ রান করা নাঈম শেখ। কঠিন এই সময়ে ভক্ত, সমর্থকদের সবাইকে পাশে চেয়েছেন তিনি।

নাঈম নিজের পোস্টে লিখেছেন, ‘‘আমরা যারা মাঠে নামি, আমরা শুধু খেলি না — আমরা দেশের নামটা বুকে নিয়ে নামি। লাল-সবুজ পতাকাটা শুধু শরীরে নয়, রক্তে মিশে থাকে। প্রতিটা বল, প্রতিটা রান, প্রতিটা শ্বাসে চেষ্টা করি সেই পতাকাটাকে গর্বিত করতে।’’

‘‘হ্যাঁ, কখনো পারি, কখনো পারি না। জয় আসে, পরাজয়ও আসে — এটাই খেলাধুলার বাস্তবতা। জানি, আমরা যখন হেরে যাই, তখন আপনাদের কষ্ট হয়, রাগ হয় — কারণ আপনারাও এই দেশটাকে আমাদের মতোই ভালোবাসেন।’’

‘‘কিন্তু আজ যেভাবে আমাদের প্রতি ঘৃণা, গাড়ীতে আক্রমণ করা হয়েছে, তা সত্যিই কষ্ট দেয়। আমরা মানুষ, ভুল করি, কিন্তু কখনো দেশের প্রতি ভালোবাসা-চেষ্টার ঘাটতি রাখিনা। প্রতিটা মুহূর্তে চেষ্টা করি দেশের জন্য,মানুষের জন্য,  আপনাদের মুখে হাসি ফোটাতে।’’

‘‘ভালোবাসা চাই, ঘৃণা নয়। সমালোচনা হোক যুক্তিতে, রাগে নয়। কারণ আমরা সবাই একই পতাকার সন্তান। জয় হোক, পরাজয় হোক — লাল-সবুজ যেন আমাদের সবার গর্ব থাকে, ক্ষোভের নয়।’’

‘‘আমরা লড়বো, আবার উঠবো — দেশের জন্য, আপনাদের জন্য, এই পতাকার জন্য।’’

ক্রিকেটাররা দম ফেলার ফুরসত পাচ্ছেন না। শনিবারই বাংলাদেশের ঘরের মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডে। 

ঢাকা/ইয়াসিন

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

রাকসু নির্বাচন : চার কেন্দ্রে সকালে ভোটারদের উপস্থিতি কম

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), হল সংসদ ও সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা ১০ মিনিটে শুরু হওয়া এই ভোট চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। ভোট দিতে সারিবদ্ধভাবে লাইনে দাঁড়িয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এর মধ্যে সকাল ১০টা পর্যন্ত চারটি ভোট কেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিতি কম ছিল।

বিশ্ববিদ্যালয়ের জামাল নজরুল ইসলাম বিজ্ঞান ভবন ও স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু অ্যাকাডেমিক ভবনে এই চারটি কেন্দ্র অবস্থিত। জামাল নজরুল ইসলাম বিজ্ঞান ভবনের দুটি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই কেন্দ্রে পূর্ব-দক্ষিণ গেট দিয়ে প্রবেশ করে ভোট দেবেন বিজয়-২৪ হলের ১ হাজার ৫২৯ ভোটার এবং উত্তর-পশ্চিম গেট দিয়ে নবাব আব্দুল লতিফ হলের ১ হাজার ১১৩ ভোটার।

জামাল নজরুল ইসলাম বিজ্ঞান ভবনের ফটকে দায়িত্বপালনকারী রোভার স্কাউটের সদস্য শাহিন মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, সকালে ভোটারদের উপস্থিতি তেমন নেই। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটারদের উপস্থিতি বাড়ছে।

অন্যদিকে স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু অ্যাকাডেমিক ভবনের দক্ষিণ-পূর্ব গেট দিয়ে মাদার বখশ হল ও দক্ষিণ-পশ্চিম গেট দিয়ে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের শিক্ষার্থীরা ভোট দিচ্ছেন। এই কেন্দ্রে মোট ভোটার ৩ হাজার ৭৩৫৷ সকাল ১০টার দিকে গিয়ে দেখা যায়, দুটি ফটকেই ভোটারদের সারি নেই। শিক্ষার্থীরা বিক্ষিপ্তভাবে এসে ভোট দিচ্ছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আটটি একাডেমিক ভবন এবং একটি গেস্টহাউসসহ মোট ভোটকেন্দ্র ১৭টি; বুথ ৯৯০টি। আজ সকাল থেকে অন্য কেন্দ্রগুলোতে ভোটাররা সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে ভোট দিতে যাচ্ছেন।  

রাকসুতে পদ ২৫টি। এর মধ্যে সভাপতি ও কোষাধ্যক্ষ ছাড়া বাকি ২৩টি পদে শিক্ষার্থী প্রতিনিধি থাকেন। এসব পদে প্রার্থীরা শিক্ষার্থীদের সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হন। এ ছাড়া প্রতিটি হল সংসদে ১৭টি পদ রয়েছে। সেখানেও সভাপতি ও কোষাধ্যক্ষ পদ ছাড়া বাকি ১৫টি পদে নির্বাচন হয়। এ ছাড়া সিনেটের ৫টি পদে ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচন রাকসুর সঙ্গেই অনুষ্ঠিত হবে।

আরও পড়ুনরাকসুর ভোট আজ, ৭২ বছরে নির্বাচন ১৬ বার ৩ ঘণ্টা আগে

রাকসুর ২৩টি পদে ২৪৭ জন, ১৭টি হলে ১৫টি করে পদে ৫৯৭ জন এবং সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনের ৫টি পদে ৫৮ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। একজন ভোটার ৪৩টি পদে ভোট দিতে পারবেন। সময় পাবেন ১০ মিনিট।

রাকসুতে ভিপি পদে ১৮ জন, জিএস পদে ১৩ জন ও এজিএস (সহসাধারণ সম্পাদক) পদে ১৬ জন প্রার্থী লড়াই করছেন। নির্বাচনে মোট ভোটারসংখ্যা ২৮ হাজার ৯০১। এর মধ্যে ছাত্রী ভোটার ১১ হাজার ৩০৫ জন ও ছাত্র ভোটার ১৭ হাজার ৫৯৬ জন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ