বলিউড অভিনেত্রী আমিশা প্যাটেল ও অভিনেতা হৃতিক রোশান। ‘কহো না পেয়ার হ্যায়’ সিনেমার মাধ্যমে বলিউডে অভিষেক ঘটে এই জুটির। হৃতিকের বাবা রাকেশ রোশান পরিচালিত এই সিনেমা ২০০০ সালের ১৪ জানুয়ারি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায়। হৃতিক-আমিশার এই সিনেমা দেশ ও দেশের বাইরে ঝড় তুলেছিল।

কয়েক দিন আগে ‘কহো না পেয়ার হ্যায়’ সিনেমা মুক্তির ২৫ বছর পূর্তি হয়েছে। এ উপলক্ষে স্মৃতির ডায়েরি খুলেছিলেন বলিউডের ‘গ্রিক গড’ হৃতিক। অন্যদিকে, আমিশা প্যাটেল নিউজ১৮-কে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। এ আলাপচারিতায় হৃতিকের অনেক অজানা তথ্য জানিয়েছেন আমিশা। পাশাপাশি নিজের অভিনয় ক্যারিয়ার নিয়েও কথা বলেছেন পর্দার ‘সোনিয়া সাক্সেনা’।
 
হৃতিক রোশানের সঙ্গে পরিচয়ের পাতা খুলে আমিশা প্যাটেল বলেন, “আমরা পারিবারিক বন্ধু ছিলাম। আমরা যখন কিশোর-কিশোরী তখন থেকেই পরস্পরকে চিনতাম। সে (হৃতিক) দেখতে রোগা, সুশ্রী ছিল না। স্বভাবে অন্তর্মুখী ছিল। সে আমার মতোই লাজুক ছিল। বোস্টনে পড়াশোনা শেষে মুম্বাই ফিরে যখন তাকে দেখি, তখন সে সম্পূর্ণরূপে বদলে গেছে।”

বদলে যাওয়া হৃতিকের বর্ণনা দিয়ে আমিশা প্যাটেল বলেন, “তাকে দেখে মনে হয়েছিল, শুঁয়োপোকাটি প্রজাপতিতে পরিণত হয়েছে। আমি তার দিকে তাকিয়ে বলেছিলাম, ‘সুপারস্টার’। কিন্তু সে এটা হজম করতে পারেনি। আমাকে ‘পক্ষপাতদুষ্ট’ বলে মন্তব্য করেছিল। আমরা দুজনেই চঞ্চল টিনএজ থেকে তরুণে পরিণত হয়েছিলাম। আমরা একইসঙ্গে আত্মবিশ্বাসী এবং বাচাল হয়ে উঠেছিলাম। আমাদের লজ্জা চলে গিয়েছিল। আমি তাকে ‘পিয়ার্স ব্রসনান’, ‘বন্ড’ বলে ডাকতাম! ‘গ্রিক গড’ তকমাটি আমিই তাকে দিয়েছিলাম; এজন্য আমি গর্বিত।”

আমিশা প্যাটেল তার ক্যারিয়ারে উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে গিয়েছেন। তারপরও এই জার্নিকে ‘গৌরবময়’ বলে মনে করেন। তার ভাষায়, “আমি বলিউডের সবচেয়ে বড় আইকনিক হিট সিনেমাগুলো উপহার দিয়েছি, যার কখনো প্রতিস্থাপন করা যাবে না। একজন অভিনেত্রীর আর কী চাওয়া থাকতে পারে?”

নিজেকে নিয়ে গর্বিত ‘হামরাজ’খ্যাত অভিনেত্রী আমিশা প্যাটেল বলেন, “একজন বহিরাগতর সঙ্গে কোনো গডফাদার থাকে না। আমি মনে করি, নিজের জন্য অসাধারণ কাজ করেছি। আমার নামের সঙ্গে তিনটি ফ্র্যাঞ্চাইজি রয়েছে। যেমন— ‘গদর’, ‘ভুল ভুলাইয়া’ ও ‘রেস’। এসব সিনেমা এখনো নির্মিত হচ্ছে। হিন্দি, তামিল এবং তেলেগু ভাষার বেশ কিছু হিট সিনেমা উপহার দিয়েছি। এসব সিনেমা বক্স অফিসে রেকর্ড ভেঙেছে।”

দীর্ঘ অভিনয় ক্যারিয়ারে ৩৮টি সিনেমায় অভিনয় করেছেন আমিশা। অনেক সিনেমায় অভিনয় না করা নিয়ে আফসোস নেই আমিশার। তার ভাষায়— “বেশি সংখ্যক সিনেমায় অভিনয় না করা নিয়ে কি আফসোস হয়? না! শুক্রবারে এসে শনিবারে ভুলে যাওয়ার চেয়ে আমার আইকনিক সিনেমার জন্য আমাকে স্মরণ করা উচিত। আমি সেই কয়েকজনের মধ্যে একজন, যে ‘গদর: এক প্রেম কথা’, ‘কহো না পেয়ার হ্যায়’ সিনেমার দুবার মুক্তি দেখেছি।”

চলচ্চিত্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করা মানেই সাফল্য এবং দীর্ঘ ক্যারিয়ার নয়। এ তথ্য স্মরণ করে আমিশা প্যাটেল বলেন, “আমি কীভাবে অসুখী হতে পারি? আমি যদি অসুখী হই, তবে আমি ঈশ্বরের প্রতি অকৃতজ্ঞ। এমনকি, যাদের গডফাদার আছে এবং চলচ্চিত্র পরিবারে বিয়ে করেছে, তাদেরকেও ভয়াবহ রকমের ব্যর্থ, প্রত্যাখ্যাত হতে হয়। আমি সবাইকে বলতে চাই, আপনার সঙ্গে যখন ঈশ্বর থাকে, তখন গডফাদারের প্রয়োজন নেই।”

আমিশা প্যাটেল হারিয়ে যাচ্ছেন না। তা উল্লেখ করে এ অভিনেত্রী বলেন, “ভবিষ্যতে, আমার দর্শকদের জন্য অনেক চমক থাকবে। আমি কোথাও যাচ্ছি না। আমি এখানে থাকার জন্যই এসেছি।”

২০০০ সালে বলিউডে পা রাখেন আমিশা প্যাটেল। কিন্তু ২০০৩ সালের পর সেভাবে আর বক্স অফিসে সাফল্যের মুখ দেখেনি আমিশার সিনেমা। মাঝে একটি আইটেম গানে পারফর্ম করেছিলেন। নিজে প্রযোজনা সংস্থাও খুলেও কোনো লাভ হয়নি। তবে ব্যর্থতার তকমা ‍মুছে দিয়েছে ‘গদর টু’ সিনেমা। ২০২৩ সালে মুক্তি পায় এটি। আমিশা অভিনীত সর্বশেষ মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা ‘তওবা তেরা জালওয়া’। গত বছরের শুরুতে মুক্তি পায় সিনেমাটি।

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

দারফুরে ধর্ষণ-মুক্তিপণ-হত্যা: আরএসএফের ভয়াবহ নিপীড়নের বর্ণনা দিলেন পালিয়ে আসা মানুষেরা

সুদানের পশ্চিমাঞ্চলীয় দারফুর শহরে আধাসামরিক বাহিনী র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্স (আরএসএফ)–এর কাছ থেকে পালিয়ে আসা ক্ষুধার্ত এবং নির্যাতিত মানুষেরা বিভিন্ন সংস্থা ও সংবাদমাধ্যমের কাছে তাঁদের ভয়ংকর অভিজ্ঞতাগুলো বর্ণনা করছেন। তবে তাঁরা পালাতে পারলেও হাজার হাজার মানুষ এখনো নিখোঁজ রয়েছেন।

উত্তর দারফুরের রাজধানী এল-ফাশের শহর ছিল রাজ্যটিতে সুদানি সেনাবাহিনীর সর্বশেষ ঘাঁটি। গত রোববার আরএসএফ বাহিনী এটির দখল নেয়। এরপর থেকে জাতিসংঘ ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থা স্থানীয় মানুষের পরিণতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে। এরই মধ্যে দারফুরে ধর্ষণ, মুক্তিপণ ও গণহত্যাসহ অন্যান্য নির্যাতনের কথা সামনে আসছে।

আলখেইর ইসমাইল নামের এক সুদানি তরুণ দারফুর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার (৩১ মাইল) দূরের তাবিলা শহরে পালিয়ে এসেছেন। তিনি বলেন, রোববার এল-ফাশের থেকে পালানোর চেষ্টার সময় ৩০০ জনকে আটক করে আরএসএফ। তিনিও ওই দলে ছিলেন। তবে আটককারীদের একজন তাঁর বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের পরিচিত হওয়ায় তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

ইসমাইল বলেন, ‘খার্তুমের বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার সঙ্গে পড়াশোনা করেছেন এমন একজন তরুণ সেখানে ছিলেন। তিনি তাঁদের বললেন, “ওকে হত্যা করো না”। এরপর তাঁরা আমার সঙ্গে থাকা সব তরুণ ও আমার বন্ধুদের হত্যা করেন।’

তাবিলা এলাকায় পালিয়ে আসা অন্য নাগরিকেরাও তাঁদের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন। তেমনই একজন তাহানি হাসান। তিনি বলেন, ‘হঠাৎ করেই তাঁরা সেখানে হাজির হলেন। কোথা থেকে এলেন জানি না। ভিন্ন ভিন্ন বয়সী তিন তরুণকে দেখা গেল। তাঁরা আকাশে গুলি ছুড়লেন এবং বললেন, ‘থামো, থামো’। তাঁরা আরএসএফের পোশাকে ছিলেন।’

আলখেইর ইসমাইল নামের এক সুদানি তরুণ দারফুর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার (৩১ মাইল) দূরের তাবিলা শহরে পালিয়ে এসেছেন। আলখেইর বলেছেন, রোববার এল-ফাশের থেকে পালানোর চেষ্টা করার সময় ৩০০ জনকে আটক করে আরএসএফ। তিনিও ওই দলে ছিলেন। তবে আটককারীদের একজন তাঁর বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের পরিচিত ব্যক্তি হওয়ায় তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

তাহানি হাসান বলেন, ‘এই তরুণেরা আমাদের বেধড়ক মারধর করেছেন। আমাদের পোশাক মাটিতে ছুড়ে ফেলেছেন। এমনকি আমি একজন নারী হওয়ার পরও আমাকে তল্লাশি করা হয়েছে। হামলাকারীরা সম্ভবত বয়সে আমার মেয়ের চেয়েও ছোট হবে।’

ফাতিমা আবদুলরহিম তাঁর নাতি–নাতনিদের সঙ্গে তাবিলাতে পালিয়ে এসেছেন। তিনি বলেন, পাঁচ দিন ধরে অনেক কষ্ট করে হেঁটে তাবিলাতে পৌঁছাতে পেরেছেন।

ফাতিমা বলেন, ‘তাঁরা (আরএসএফের সদস্যরা) ছেলেশিশুগুলোকে মারলেন এবং আমাদের সব সম্পদ কেড়ে নিলেন। আমাদের কিছুই রাখা হলো না। আমরা এখানে পৌঁছানোর পর জানতে পারলাম, আমাদের পর যেসব মেয়ে এসেছে, তাদের ধর্ষণ করা হয়েছে। তবে আমাদের মেয়েরা বেঁচে গেছে।’

পালিয়ে আসা তরুণী রাওয়া আবদাল্লা বলেছেন, তাঁর বাবা নিখোঁজ।

গত বুধবার রাতে দেওয়া এক বক্তৃতায় আরএসএফের প্রধান মোহাম্মদ হামদান দাগালো বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য তাঁর যোদ্ধাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। বলেন, মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটলে বিচারের মুখোমুখি করা হবে। হামদান ‘হেমেদতি’ নামেও পরিচিত।

২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে সুদানি সেনাদের সঙ্গে আরএসএফ সদস্যদের লড়াই চলছে। গত বৃহস্পতিবার আরএসএফ দাবি করে, নির্যাতনের অভিযোগে বেশ কয়েকজন যোদ্ধাকে আটক করেছে তারা।

তবে জাতিসংঘের মানবিক সহায়তাবিষয়ক প্রধান টম ফ্লেচার সাধারণ নাগরিকদের ওপর আরএসএফ সদস্যদের নিপীড়নের অভিযোগ তদন্তে বাহিনীটির দেওয়া প্রতিশ্রুতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আরএসএফের একজন উচ্চপদস্থ কমান্ডার এই ঘটনাগুলো ‘গণমাধ্যমের অতিরঞ্জন’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। তাঁর দাবি, এল–ফাশেরে নিজেদের পরাজয় ও ক্ষয়ক্ষতি আড়াল করতে সেনাবাহিনী এবং তাদের মিত্ররা এমন অপপ্রচার চালাচ্ছে।

জাতিসংঘের তথ্য বলছে, এ সংঘাত চলাকালে আরএসএফ ও সেনাবাহিনী—দুই পক্ষের বিরুদ্ধেই অভিযোগ উঠেছে। সংঘাতে কয়েক হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। প্রায় ১ কোটি ৪০ লাখ মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন। সংঘাতকে কেন্দ্র করে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় তৈরি হয়েছে। বিরাজ করছে ব্যাপক দুর্ভিক্ষের অবস্থা। পাশাপাশি কলেরা ও অন্যান্য প্রাণঘাতী রোগের সংক্রমণ বাড়ছে।

দারফুর থেকে পালিয়ে আসা লোকজন তাবিলা এলাকায় আশ্রয় নিয়েছেন। ২৯ অক্টোবর, ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দারফুরে ধর্ষণ-মুক্তিপণ-হত্যা: আরএসএফের ভয়াবহ নিপীড়নের বর্ণনা দিলেন পালিয়ে আসা মানুষেরা
  • ‘সাংস্কৃতিক জাগরণেই মুক্তি’
  • যদি ঠিক পথে থাকো, সময় তোমার পক্ষে কাজ করবে: এফ আর খান
  • বিবাহবিচ্ছেদ ও খোরপোষ নিয়ে ক্ষুদ্ধ মাহি
  • ফতুল্লায় দুই ট্রাকের মাঝে পড়ে যুবকের মৃত্যু
  • ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে ২০ মামলার আসামি নিহত, গুলিবিদ্ধ ৩
  • নামতে গেলেই চালক বাস টান দিচ্ছিলেন, পরে লাফিয়ে নামেন
  • তানজানিয়ার বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ফের বিজয়ী সামিয়া
  • আমার স্ত্রী খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করছেন না: জেডি ভ্যান্স
  • নির্বাচন সামনে রেখে সরকারের ৩১ বিভাগকে প্রস্তুতির নির্দেশ ইসির