১৫ মাস ধরে চলা গাজা যুদ্ধে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি নিহত এবং ছিটমহলটি ধ্বংস হয়ে যাওয়ার পর ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরের কাছাকাছি পৌঁছেছেন আলোচকরা। বুধবার আলোচকদের বরাত দিয়ে রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, কাতারের আলোচনায় যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি প্রত্যাবর্তনের প্রস্তাবে হামাস মৌখিক অনুমোদন দিয়েছে এবং চূড়ান্ত লিখিত অনুমোদনের জন্য আরো তথ্যের অপেক্ষায় রয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হামাসের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, হামাস এখনো প্রস্তাবের লিখিত জবাব দেয়নি। তাদের প্রতিক্রিয়া না জানানোর কারণ হচ্ছে, ইসরায়েল গাজা থেকে তাদের বাহিনী কীভাবে প্রত্যাহার করবে তা এখনো জানায়নি।

কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা বুধবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় দোহায় একটি সংবাদ সম্মেলন করবে।

এর আগে, একজন ইসরায়েলি কর্মকর্তা জানিয়েছিলেন, কাতারি আলোচকদের উত্থাপিত প্রস্তাবে হামাস সম্মত হয়েছে। 

তবে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় কিছুক্ষণ পরেই জানিয়েছে যে হামাস এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।

আলোচনার সাথে ঘনিষ্ঠ একজন ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা বুধবার বলেছেন, “আমি আশাবাদী আজ রাতে, শেষ পর্যন্ত আগামীকাল একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হতে পারে।”

২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজায় হামলা শুরু করে ইসরায়েল। গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ৪৬ হাজার ছাড়িয়েছে, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। এর আগে বেশ কয়েকবার যুদ্ধবিরতির উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা ইসরায়েলের অনীহার কারণে ভেস্তে গেছে।
 

ঢাকা/শাহেদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসর য

এছাড়াও পড়ুন:

দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের অ্যানালগ শিক্ষা

প্রতিবন্ধীদের উন্নয়নের তিনটি ধারণা রয়েছে– এক. চ্যারিটি মডেল, দুই. মেডিকেল মডেল, তিন. সামাজিক মডেল। প্রথম মডেল অনুযায়ী প্রতিবন্ধীরা সমাজে কোনো অবদান রাখতে পারেন না। দান-দক্ষিণার মাধ্যমে তাদের জীবন চলে।

দ্বিতীয় মডেল অনুযায়ী শারীরিক প্রতিবন্ধিতার কারণে তারা সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য বোঝাস্বরূপ। শেষ মডেল অনুযায়ী প্রায় সব প্রতিবন্ধী ব্যক্তির কোনো না কোনো যোগ্যতা আছে। সামাজিক নানা বাধার কারণে তারা সেই যোগ্যতা ও দক্ষতার বিকাশ ঘটাতে পারেন না। উচ্চশিক্ষা গ্রহণে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের নানা ধরনের বাধা সামাজিক মডেলের একটি জ্বলন্ত উদাহরণ।

উচ্চশিক্ষার প্রথম বাধা শুরু হয় আবেদন করার মাধ্যমে। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিচ্ছুদের প্রথমে অনলাইনে আবেদন করতে হয়। সেখানেই বাধে বিপত্তি। দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটগুলো দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীবান্ধব না হওয়ায় তারা নিজেরা আবেদন করতে পারেন না। অন্যের সহায়তা নিতে গিয়ে প্রায়ই নানা ধরনের ভুল হয়। 

এর পর পরীক্ষা। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা সবার কাছে অনেক কঠিন। কিন্তু একজন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীর কাছে এটি অগ্নিপরীক্ষার চেয়ে কম নয়। কারণ তারা নিজেরা পরীক্ষা দিতে পারেন না; একজন শ্রুতিলেখকের সহায়তায় পরীক্ষাটি সম্পন্ন করতে হয়। শ্রুতিলেখক নিয়ে পরীক্ষা দেওয়ার ইতিবাচক ও নেতিবাচক উভয় দিকই আছে। পাশাপাশি দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী যেন নিজে পরীক্ষা দিতে পারেন, সে ব্যবস্থা থাকা একান্ত কাম্য। কারণ এতে তাদের ইচ্ছা ও স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়। কিন্তু বাংলাদেশে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে এ রকম ব্যবস্থা নেই।

ভর্তি পর্যায়ের বাধা পেরিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের চৌহদ্দিতে পা রাখার পর দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের নতুন সংগ্রাম শুরু হয় টিকে থাকা এবং ভালো ফল করার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের প্রায় সব প্রতিষ্ঠানে এখন প্রযুক্তির ছোঁয়া লেগেছে। সে ক্ষেত্রে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীরা অনেক পিছিয়ে।

দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের নিয়ে কাজ করা উন্নয়ন সংস্থা বাংলাদেশ ভিজুয়ালি ইম্পায়ার্ড পিপলস সোসাইটি একটি গবেষণা করে। সেই গবেষণায় অংশ নেওয়া প্রায় ৯৮ শতাংশ উত্তরদাতা বলেছেন, ক্লাসে যেসব প্রাযুক্তিক সহায়তা দেওয়া হয়, সেগুলো তারা নিতে পারেন না। এর মাঝে আছে পড়ার সহায়ক বই কিংবা অনুলিপি, যেগুলো প্রবেশগম্য করে দেওয়া হয় না।  

পাঠাগার হলো শিক্ষার্থীদের কাছে প্রাণস্বরূপ। কিন্তু আমাদের দেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠাগার তাদের জন্য প্রবেশগম্য নয়। এতে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী জ্ঞান আহরণের সুযোগ থেকে বঞ্চিত। এতে একজন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী সত্যিকার অর্থে মানবসম্পদ হয়ে গড়ে উঠছেন না। 

অন্য শিক্ষার্থীরা তাদের পছন্দমতো বিষয়ে পড়তে পারলেও একজন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী সে সুযোগ পাচ্ছেন না। এর একমাত্র কারণ উচ্চশিক্ষা পর্যায়ে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের লেখাপড়ার বিষয়ে তেমন গুরুত্ব দেওয়া হয় না। তার পরও আমাদের দেশে শতাধিক দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ব্যক্তি উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেছেন এবং তারা নানা ক্ষেত্রে কর্মরত। আমরা যদি তাদের অনুকূল পরিবেশ দিতে পারতাম, তাহলে তারা আরও অবদান রাখতে পারতেন সমাজ বিনির্মাণে। উচ্চশিক্ষায় প্রবেশগম্য করার বিষয়টি খুব জটিল কিছু নয়। ইউরোপ-আমেরিকার বড় সব বিশ্ববিদ্যালয় অনেক আগেই তাদের পাঠ ব্যবস্থাকে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের জন্য প্রবেশগম্য করে গড়ে তুলেছে। আমাদের দেশের সরকার কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যদি তাদের থেকে কারিগরি সহায়তা নেয়, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীবান্ধব করা সম্ভব। তাই এখনই এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে তাদের মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তুলতে সহায়তা করতে হবে।

তালুকদার রিফাত পাশা: পলিসি কর্মকর্তা, ইনস্টিটিউট অব ওয়েলবিং বাংলাদেশ
 rifatir2@gmail.com.

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রাশিয়ায় মানবপাচার চক্রের এক নারী সদস্য গ্রেপ্তার
  • করুণারত্নের শেষ টেস্টের প্রথম দিনেও বিবর্ণ শ্রীলঙ্কা
  • রাজধানীতে ছিনতাই ঠেকাতে ‘স্মল আর্মস’ পাচ্ছেন ট্রাফিক সার্জেন্টরা: ডিএমপি কমিশনার
  • অবৈধ ভারতীয় অভিবাসীদের হাতকড়া ও শিকল পরিয়ে ফেরত পাঠিয়েছে যুক্তরাষ
  • ‘ট্রাম্প একজন উন্মাদ’: যুক্তরাষ্ট্রের গাজা দখলের পরিকল্পনায় ফিলিস্তিনির প্রতিক্রিয়া
  • ২৮ বছরেও আমি পরিবারের মন জয় করতে পারিনি: পপি
  • ২৮ বছরেও আমি পরিবারের মন জয় করতে পারিনি: চিত্রনায়িকা পপি
  • ২৮ বছরে আমি পরিবারের মন জয় করতে পারিনি: পপি
  • চার বিভাগকে প্রদেশ করার প্রস্তাব
  • দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের অ্যানালগ শিক্ষা