যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরের কাছাকাছি ইসরায়েল ও হামাস
Published: 15th, January 2025 GMT
১৫ মাস ধরে চলা গাজা যুদ্ধে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি নিহত এবং ছিটমহলটি ধ্বংস হয়ে যাওয়ার পর ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরের কাছাকাছি পৌঁছেছেন আলোচকরা। বুধবার আলোচকদের বরাত দিয়ে রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, কাতারের আলোচনায় যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি প্রত্যাবর্তনের প্রস্তাবে হামাস মৌখিক অনুমোদন দিয়েছে এবং চূড়ান্ত লিখিত অনুমোদনের জন্য আরো তথ্যের অপেক্ষায় রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হামাসের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, হামাস এখনো প্রস্তাবের লিখিত জবাব দেয়নি। তাদের প্রতিক্রিয়া না জানানোর কারণ হচ্ছে, ইসরায়েল গাজা থেকে তাদের বাহিনী কীভাবে প্রত্যাহার করবে তা এখনো জানায়নি।
কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা বুধবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় দোহায় একটি সংবাদ সম্মেলন করবে।
এর আগে, একজন ইসরায়েলি কর্মকর্তা জানিয়েছিলেন, কাতারি আলোচকদের উত্থাপিত প্রস্তাবে হামাস সম্মত হয়েছে।
তবে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় কিছুক্ষণ পরেই জানিয়েছে যে হামাস এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
আলোচনার সাথে ঘনিষ্ঠ একজন ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা বুধবার বলেছেন, “আমি আশাবাদী আজ রাতে, শেষ পর্যন্ত আগামীকাল একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হতে পারে।”
২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজায় হামলা শুরু করে ইসরায়েল। গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ৪৬ হাজার ছাড়িয়েছে, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। এর আগে বেশ কয়েকবার যুদ্ধবিরতির উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা ইসরায়েলের অনীহার কারণে ভেস্তে গেছে।
ঢাকা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ইসরায়েলের হামলায় নিহত তাবতাবাই কে, কীভাবে হিজবুল্লাহতে যোগ দিলেন
লেবাননের রাজধানী বৈরুতের দক্ষিণ-পশ্চিমের শহরতলিতে হামলা চালিয়ে হিজবুল্লাহর শীর্ষ কর্মকর্তা হাইথাম আলী তাবতাবাইকে হত্যা করেছে ইসরায়েল। প্রায় এক বছর আগে লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর সঙ্গে ইসরায়েলের একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়। তারপরও গতকাল রোববার হিজবুল্লাহর অবস্থান লক্ষ্য করে ওই হামলা চালায় ইসরায়েল।
ইসরায়েলের সেনাবাহিনী প্রথমে তাবতাবাইকে হত্যার দাবি করে। পরে হিজবুল্লাহ থেকে তাঁর নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করা হয়।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ২০২৪ সালের নভেম্বর পর্যন্ত চলা যুদ্ধে ইসরায়েল ইরান–সমর্থিত হিজবুল্লাহর নেতৃত্বের বড় অংশ ধ্বংস করে দিয়েছে। পরে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহ একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে স্বাক্ষর করে।
ইসরায়েলের সঙ্গে সংঘাতের পর হাইথাম আলী তাবতাবাইকে হিজবুল্লাহর ‘চিফ অব স্টাফ’ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল।
হাইথাম আলী তাবতাবাই কে
তাবতাবাইয়ের জন্ম লেবাননে, ১৯৬৮ সালে। তাঁর বাবা ইরানি বংশোদ্ভূত এবং মা লেবানিজ। লেবাননের একজন জ্যেষ্ঠ নিরাপত্তা সূত্র থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
সূত্রটি বলেছে, তিনি (তাবতাবাই) হিজবুল্লাহর প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য ছিলেন না, তবে তিনি গোষ্ঠীর ‘দ্বিতীয় প্রজন্মের’ প্রতিনিধি ছিলেন। তিনি সিরিয়া ও ইয়েমেনে হিজবুল্লাহর মিত্রদের সঙ্গে লড়াই করতে এই গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বলেছে, হাইথাম আলী তাবতাবাই ১৯৮০–এর দশকে হিজবুল্লাহতে যোগ দেন। তিনি হিজবুল্লাহর অভিজাত বাহিনী রাদওয়ান ফোর্সসহ বিভিন্ন বাহিনীতে একাধিক উচ্চপদে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ইসরায়েল গত বছর লেবাননে স্থল অভিযান চালিয়ে রাদওয়ান ফোর্সের বেশির ভাগ সদস্যকে হত্যা করেছিল।
গত বছরের যুদ্ধে তাবতাবাই হিজবুল্লাহর ‘অপারেশনস ডিভিশনের’ নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। যুদ্ধে অন্যান্য শীর্ষ কমান্ডাররা নিহত হলে তাবতাবাই ধাপে ধাপে পদোন্নতি পেয়েছিলেন বলে এক বিবৃতিতে দাবি করেছে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী।
বিবৃতিতে ইসরায়েলি বাহিনী আরও দাবি করেছে, যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হওয়ার পর হাইথাম আলী তাবতাবাই চিফ অব স্টাফ হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছিলেন এবং ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধের জন্য তাদের প্রস্তুতি পুনর্গঠনের কাজে ব্যাপকভাবে নিযুক্ত ছিলেন।
লেবানিজ নিরাপত্তা সূত্রও বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। তিনি বলেন, অন্য শীর্ষ হিজবুল্লাহ কর্মকর্তারা নিহত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাবতাবাইকে দ্রুত পদোন্নতি দেওয়া হয়েছিল এবং গত বছর তিনি চিফ অব স্টাফ হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন।
আরও পড়ুনবৈরুতে ইসরায়েলের হামলায় হিজবুল্লাহর একজন শীর্ষ কর্মকর্তা নিহত৫ ঘণ্টা আগে