ঢাকা চলচ্চিত্র উৎসবে আজ প্রদর্শিত হবে ‘পদাতিক’, আরও যা দেখা যাবে
Published: 16th, January 2025 GMT
৭৫ দেশের ২২০টি চলচ্চিত্র নিয়ে গত শনিবার শুরু হয়েছে ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের ২৩তম আসর। ‘নান্দনিক চলচ্চিত্র, মননশীল দর্শক, আলোকিত সমাজ’ স্লোগানে উৎসবটির আয়োজন করেছে রেইনবো চলচ্চিত্র সংসদ। আজ উৎসবের ষষ্ঠ দিন রয়েছে একাধিক সিনেমার প্রদর্শনী।
জাতীয় জাদুঘর (মূল মিলনায়তন)
‘কালচক্র’, রাশিয়া; মন্তে ক্লেরিগো, পর্তুগাল ও ‘রেইজ মি আ মেমোরি’, এস্তোনিয়া (সকাল ১০টা ৩০ মিনিট), ‘ইন দ্য বেলি অব আ টাইগার’, ভারত (বেলা ১টা); মেলোডি, ইরান (বেলা ৩টা); ‘বটলম্যান’, সার্বিয়া (বিকেল ৫টা); ‘পদাতিক’, ভারত (সন্ধ্যা ৭টা)
জাতীয় জাদুঘর (সুফিয়া কামাল মিলনায়তন)
‘হোয়েন এভরিথিং বার্নস’, আর্জেন্টিনা; ‘অ্যাকিউট’, ব্রাজিল; ‘নট জাস্ট অ্যানি ডে’, মলদোভা; ‘আলট্রাভায়োলেট’, বেলজিয়াম; ‘কালচক্র’ ও ‘পুশ’, রাশিয়া (সকাল ১০টা ৩০ মিনিট)। ‘এটেভিজম’ ও ‘ফার্স্ট অন দ্য মুন’, রাশিয়া (বেলা ১টা); ‘ইগো ইস্ট, হায়াটি’, তুরস্ক; ‘হ্যালো সালমা’, ইরান; ‘আওয়ার মেমোরি’, ফ্রান্স ও ‘আওয়ার মাদার’, ইতালি (বেলা ৩টা); ‘নামহীন গোত্রহীন’, বাংলাদেশ ও ‘আর কতবার বলবো’, বাংলাদেশ (বিকেল ৫টা); ‘আনারকলি’, বাংলাদেশ (সন্ধ্যা ৭টা)।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি (জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তন)
‘আ সামার’স অ্যান্ড পোয়েম’, চীন; ‘আই কুড হ্যাভ লিভড বিকজ অব ইউ’, সিরিয়া; ‘বিয়ন্ড দ্য ওয়েস’, তুরস্ক (সকাল ১০টা ৩০ মিনিট)); ‘সো লং ফর লাভ’, চীন (বেলা ১টা); ‘সানডে’, উজবেকিস্তান (বেলা ৩টা ৩০ মিনিট); ‘দ্য সাউন্ড ইজ লাউড’, ‘দ্য রিবার্থ অব বাংলাদেশ’, ‘ডিসকানেক্টেড’, ‘চাঁদ আকাশের গল্প’, ‘পথ’, ‘জুলাইয়ের চিঠি’ ও ‘সহযাত্রা’, বাংলাদেশ (বিকেল ৫টা ৩০ মিনিট)।
আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ দো ঢাকা
‘ড্রিমিং অ্যান্ড ডায়িং’, ইন্দোনেশিয়া (সকাল ১০টা ৩০ মিনিট); ‘প্রজেকশনিস্ট’, ইরান (বেলা ২টা ৩০ মিনিট); ‘পারফর্মিং কাওয়েওস ফিউনারেল’, জাপান (বিকেল ৪টা ৩০ মিনিট)।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: চলচ চ ত র চলচ চ ত র ৩০ ম ন ট
এছাড়াও পড়ুন:
প্রার্থনার সুরে শেষ হলো ‘ফাতেমা রানীর’ তীর্থোৎসব
পাহাড়ের আঁকাবাঁকা প্রায় দুই কিলোমিটারেরও বেশি উঁচুনিচু ঢালু পথ পাড়ি দিয়ে আলোক শোভাযাত্রা করে করলেন হাজারো খৃষ্ট ভক্ত। মা মারিয়ার আশীর্বাদপ্রাপ্ত শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার গারো পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ‘বারোমারি সাধু লিওর খ্রিষ্টধর্মপল্লি’ তে ছিলো এ বছরের আয়োজন।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) সকাল থেকে শুরু হয় ক্যাথলিক খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ‘ফাতেমা রানীর’ তীর্থোৎসব। দুই দিনব্যাপী এই তীর্থোৎসব শেষ হয়েছে গতকাল শুক্রবার জীবন্ত ক্রুশের পথ ও পবিত্র মহাখ্রিষ্টযাগের মধ্যে দিয়ে।
এ উৎসবে শুধু ক্যাথলিক খ্রিষ্টানই নন, অন্য ধর্মাবলম্বীরাও প্রতিবছর অংশ নেন। এ বছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি। উৎসবের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভ্যাটিকান সিটির রাষ্ট্রদূত কেভিন এস র্যান্ডেল।
এসময় জেলা প্রশাসক (ডিসি) তরফদার মাহমুদুর রহমান ও পুলিশ সুপার (এসপি) আমিনুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আয়োজক কমিটি জানায়, প্রতিবছর অক্টোবর মাসের শেষ বৃহস্পতি ও শুক্রবারে এই তীর্থযাত্রার আয়োজন করা হয়। প্রধান পৌরহিত্যকারী ন্যুনসিওকে বরণ, তীর্থের জুবিলী উদজাপন, পুর্নমিলন সংস্কার, পবিত্র খিষ্টযাগ, জপমালার প্রার্থন, আলোক শোভাযাত্রা, সাক্রান্তের আরাধনা, নিরাময় অনুষ্ঠান, ব্যক্তিগত প্রার্থনা ও নিশি জাগরণের মধ্য দিয়ে প্রথম দিনের অনুষ্ঠান শেষ হয়। শুক্রবার সকাল আটটায় জীবন্ত ক্রুশের পথ অতিক্রম এবং সকাল ১০টায় মহাখ্রিষ্টযোগের মধ্য দিয়ে শেষ হয় এবারের তীর্থোৎসব।
১৯৪২ সালে ৪২ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত হয় বারোমারি সাধু লিওর ধর্মপল্লি। ১৯৯৮ সালে প্রয়াত বিশপ ফ্রান্সিস এ গোমেজ স্থানটিকে ‘ফাতেমা রানীর তীর্থস্থান’ হিসেবে ঘোষণা করেন। তখন থেকেই প্রতিবছর আয়োজিত হয়ে আসছে এই ধর্মীয় উৎসব। এ বছর প্রায় ৩০-৪০ হাজার দেশি-বিদেশি রোমান ক্যাথলিক তীর্থযাত্রী অংশ নিয়েছেন উৎসবে। সার্বিকভাবে উৎসব এলাকা ছিল আলো, প্রার্থনা ও শান্তির আবহে মোড়ানো।
রংপুর থেকে আসা তীর্থযাত্রী রিপন আরেং বলেন, “সবাই যখন মোমবাতি প্রজ্বলন করে প্রার্থনা করতে করতে পাহাড়ি আকাঁবাঁকা পথ অতিক্রম করছিলেন, তখন পাহাড় আলোয় আলোকিত হয়ে উঠেছিল। তীর্থে আমরা মা মারিয়ার কাছে প্রার্থনা করতে এসেছি।”
চট্টগ্রাম থেকে আসা রীতা নকরেক বলেন, “পুত্রবধূর সন্তান হচ্ছিল না। গতবার মানত করার পর এবার নাতী পেয়েছি। তাই এবার নাতীকে নিয়ে আবার এসেছি।”
গাজীপুর থেকে পরিবারের সঙ্গে আসা শিক্ষার্থী ঝর্ণা আরেং বলেন, “মারিয়ার কাছে এলে মনে একধরনের শান্তি পাই। আমরা প্রার্থনা করি যেন জীবনের দুঃখ-কষ্ট দূর হয়। প্রতিবছর এই সময়টার অপেক্ষায় থাকি।”
শেরপুরের পুলিশ সুপার মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, “আমরা এই তীর্থযাত্রাকে নিরাপদ ও ঝুঁকি মুক্ত রাখতে তিন স্তর বিশিষ্ট নিরাপত্তা ব্যবস্থায় রেখেছি। পাঁচ শতাধিক পুলিশ পোশাকে এবং সাদা পোশাকে দ্বায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়াও র্যাব, বিজিবি, এপিবিএন ও সেচ্ছাসেবক কাজ করছেন। যে কোন ঝুঁকি মোকাবেলায় আমরা প্রস্তুত আছি।”
শেরপুর জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান বলেন, “উৎসবটি দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য উদাহরণ। সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে ব্যবস্থাপনায়। জেলা ও উপজেলা প্রশাসন দীর্ঘ ১৫ দিন ধরে সহযোগীতা করে আসছে। এবারের তীর্থযাত্রায় সারাদেশের মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে তাদের উৎসব পালন করেছে।”
ময়মনসিংহ ধর্মপ্রদেশের বিশপ পনেন পল কুবি সিএসসি বলেন, “এ উৎসবের মাধ্যমে বিশ্ব মানবতার কল্যাণে প্রার্থনা করা হয়েছে। ধর্মীয় চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে এ তীর্থে দেশ-বিদেশের হাজারো মানুষ সমবেত হয়েছেন। তাঁরা দুই দিনব্যাপী তীর্থে নানা ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছেন। মা ফাতেমা রানীর কাছে দেশ ও মানবজাতির কল্যাণে প্রার্থনা শেষে যার যার বাড়ি ফিরে যাবেন।”
ঢাকা/তারিকুল/এস