ঢাকা থেকে গ্রামের দাদা বাড়িতে বেড়াতে এসে নিখোঁজের একদিন পর বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) ভোরে শিশু সাফওয়ানের (৫) রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে পুলিশ স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ দুইজনকে আটক করেছে। উত্তেজিত এলাকাবাসী আটককৃতদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছে।

বরিশালের গৌরনদী উপজেলার মধ্য হোসনাবাদ গ্রামের এ ঘটনা ঘটে। নিহত সাফওয়ান ওই গ্রামের ইমরান শিকদারের ছেলে। খবর পেয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

গৌরনদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শারমিন সুলতানা রাখি জানান, বুধবার (১৫ জানুয়ারি) দুপুর ২টার দিকে স্থানীয় অন্যান্য শিশুদের সঙ্গে খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয় শিশু সাফওয়ান। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাকে না পেয়ে রাতেই গৌরনদী মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন সাফওয়ানের দাদা বারেক শিকদার। বৃহস্পতিবার ভোর ৬টার দিকে স্থানীয় মান্না বেপারীর বিল্ডিংয়ের পিছনের জমির মধ্যে শিশু সাফওয়ানের রক্তাক্ত লাশ দেখতে পেয়ে এলাকাবাসী পুলিশে খবর দেয়।

আরো পড়ুন:

নারীকে ব্যবহার করে খুলনার সাবেক কাউন্সিলর টিপুকে হত্যা: পুলিশ

শিশু নাবিলা ধর্ষণ ও হত্যা মামলার আসামির মৃত্যুদণ্ড 

গৌরনদী মডেল থানার ওসি মো.

ইউনুস মিয়া জানান, নিহত শিশুর লাশের ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। ওসি আরও জানান, স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে একই বাড়ির লোকমান চৌধুরীর বসতঘরে তল্লাশি চালিয়ে হত্যার বেশকিছু আলামত জব্দ করা হয়েছে। পরবর্তীতে এলাকাবাসীর অভিযোগের ভিত্তিতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য লোকমান চৌধুরীর ছেলে রুমান চৌধুরী ও সরিকল ইউনিয়ন পরিষদের ৯নং ওয়ার্ডের সদস্য মোজাম্মেল হক চৌধুরীকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানান ওসি।

নিহত শিশুর দাদা বারেক সিকদার বলেন, ‘‘প্রতিবেশী লোকমান চৌধুরীর সঙ্গে জমির সীমানা নিয়ে আমার দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। বুধবার দুপুরে লোকমানের ছেলে রুমানকে আমার নাতির সঙ্গে কথা বলতে দেখেছে স্থানীয়রা।’’

আটককৃত ইউপি সদস্য মোজাম্মেল বলেন, ‘‘বিনাকারণে আমাকে এলাকার কতিপয় ব্যক্তি মারধর করে গুরুতর আহত করেছে।’’ তবে এলাকাবাসীর অভিযোগ শিশু সাফওয়ান হত্যার সঙ্গে ইউপি সদস্যের সরাসরি যোগসূত্রের আলামত রয়েছে।

শিশুটির মরদেহ পাওয়ার খবরে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। শিশু সাফওয়ানের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধারের পর থেকে এলাকাবাসীর মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। আটককৃত ইউপি সদস্যকে সেনা ও র‌্যাবের সহায়তায় থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। এলাকাবাসী হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করে ফাঁসির দাবিতে দফায় দফায় বিক্ষোভ করেছেন। 

ঢাকা/পলাশ/বকুল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর এল ক ব স সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

ইয়েমেনে মার্কিন হামলায় ৬৮ আফ্রিকান অভিবাসী নিহত: হুতি

হুতি নিয়ন্ত্রিত ইয়েমেনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের একটি আটককেন্দ্রে মার্কিন বিমান হামলায় অন্তত ৬৮ জন আফ্রিকান অভিবাসী নিহত হয়েছেন বলে সশস্ত্র গোষ্ঠীটির টিভি চ্যানেল আল মাসিরাহ জানিয়েছে। সূত্র: বিবিসি

আল মাসিরাহর বরাত দিয়ে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাদা প্রদেশে অবস্থিত ওই আটককেন্দ্রে হামলার ফলে আরও ৪৭ জন অভিবাসী আহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগের অবস্থা সংকটজনক। আল মাসিরাহ টেলিভিশন হামলার দৃশ্যের গ্রাফিক ফুটেজ প্রচার করেছে, যেখানে ধ্বংসস্তূপের নিচে পড়ে থাকা বহু মরদেহ দেখা গেছে।

তবে মার্কিন সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এ বিষয়ে এখনো কোনো মন্তব্য আসেনি।

এই হামলার কিছুক্ষণ আগেই যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল কমান্ড (সেন্টকম) জানায়, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ১৫ মার্চ হুতিদের বিরুদ্ধে বিমান হামলা জোরদার করার নির্দেশের পর থেকে তারা ৮০০টিরও বেশি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে।

সেন্টকম জানায়, এসব হামলায় শত শত হুতি যোদ্ধা এবং অসংখ্য হুতি নেতা নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন কর্মসূচির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও রয়েছেন।

হুতির কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, মার্কিন হামলায় অনেক বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন, যদিও তারা হুতি সদস্যদের মধ্যে হতাহতের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম উল্লেখ করেছে।

রিপোর্ট অনুযায়ী, হামলার সময় সাদা প্রদেশের ওই অভিবাসী আটক কেন্দ্রে ১১৫ জন আফ্রিকান অভিবাসী ছিল।

১১ বছরের সংঘাতের কারণে ইয়েমেনে মানবিক সংকট সত্ত্বেও, অভিবাসীরা এখনও আফ্রিকার হর্ন অঞ্চল থেকে নৌকায় করে ইয়েমেনে আসছে। তাদের বেশিরভাগের লক্ষ্য সৌদি আরবে পৌঁছে কাজ খোঁজা। কিন্তু বাস্তবে তারা শোষণ, আটক, সহিংসতা এবং যুদ্ধক্ষেত্র পেরিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ যাত্রার মুখোমুখি হয় বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম)।

আইওএম আরও জানিয়েছে, শুধু ২০২৪ সালেই প্রায় ৬০ হাজার ৯০০ অভিবাসী ইয়েমেনে পৌঁছেছে, যাদের অধিকাংশের বেঁচে থাকার কোনো উপায় নেই।

এর আগে মাসের শুরুতে হুতি-চালিত সরকার জানিয়েছিল, রেড সি উপকূলের রাস ইসা তেল টার্মিনালে মার্কিন বিমান হামলায় অন্তত ৭৪ জন নিহত এবং ১৭১ জন আহত হয়েছেন।

অন্যদিকে, সেন্টকম জানায়, ওই হামলা রাস ইসার জ্বালানি গ্রহণের সক্ষমতা ধ্বংস করেছে, যা হুতিদের পরিচালনা এবং সন্ত্রাসমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য অর্থ সংগ্রহের ক্ষমতাকে হ্রাস করবে।

গত মাসে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প হুতি-নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোতে ব্যাপক হামলার নির্দেশ দেন এবং হুতিদের সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করার হুমকি দেন। তিনি ইরানকেও সতর্ক করেন, যাতে তারা হুতিদের অস্ত্র সরবরাহ না করে। যদিও ইরান বারবার এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রাঙামাটির বাঘাইছড়িতে যৌথবাহিনীর অভিযানে অস্ত্রসহ আটক ১
  • ইয়েমেনে মার্কিন হামলায় ৬৮ আফ্রিকান অভিবাসী নিহত: হুতি