জিয়াউর রহমানের ৮৯তম জন্মদিনে মহানগর জাসাস’র সভা
Published: 19th, January 2025 GMT
স্বাধীনতা যুদ্ধের ঘোষক ও শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৮৯তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা (জাসাস) নারায়ণগঞ্জ মহানগর শাখার উদ্যোগে আলোচনা সভা ও কেক কাটা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রবিবার (১৯ জানুয়ারি) সকালে নারায়ণগঞ্জের চাষাড়ায় অবস্থিত জিয়া হলে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাসাস কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক নারায়ণগঞ্জ বিএনপির অন্যতম নেতা আনিসুল ইসলাম সানি। সভাপতিত্ব করেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর জাসাস'র সভাপতি মোঃ স্বপন চৌধুরী।
সভায় আনিসুল ইসলাম সানি বলেন, দীর্ঘ ১৯ বছর পর আজ চাষাড়ায় শহীদ জিয়া হলের ভিতরে এই জিয়া হলটি যার নামে সেই স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৮৯ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য দিতে দাড়িয়েছি।
এমন সুন্দর একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করায় বিশেষ করে জিয়া হলে অনুষ্ঠানটির আয়োজন করায় আমি অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি আমার মাহনগর জাসাসের সভাপতিকে। তবে একটি বিষয় আমার মনে খুব কষ্ট লাগে, এই শহীদ জিয়া হলকে সংস্কারের বিষয়ে জাসাসের পক্ষ থেকে আমরা বেশ কয়েকবার নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মহোদয়কে অবগত করেছিলাম।
কিন্তু রহস্যজনক কারনে তিনি এই উদ্যোগটি অদ্যবদি গ্রহন করেননি। বর্তমানে নারায়ণগঞ্জে নতুন জেলা প্রশাসক এসেছেন। পদাধিকার বলে তিনিও এই শহীদ জিয়া হল সংস্কার কমিটির সভাপতি হবেন। তাই আজকে আমি এই অনুষ্ঠানে থেকে নবনিযুক্ত জেলা প্রশাসক মহোদয়ের নিকট অনুরোধ করছি, আপনি অবিলম্বে শহীদ জিয়া হলের একটি পরিচালনা কমিটি গঠন করে যত দ্রুত সম্ভব ওই কমিটির মাধ্যমে জিয়া হল সংস্কারের কাজ শুরু করেন।
আর যদি আপনি তা না করেন তাহলে যে কারনে আগের জেলা প্রশাসক বিদায় হয়েছে আপনার ভাগ্যেও হয়তো সেটা বরণ করতে হতে পারে। জিয়া হল সংস্কারের বিষয়ে যে ই বাধা হবে আমরা তাকে কোন ছাড় দিবো না।
মহানগর জাসাস এর সাধারন সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন স্বাধীনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন মহানগর জাসাসের সহ সভাপতি মিয়া মোঃ আব্দুল্লাহ মুজিব, এম এ সাত্তার ভুট্টো, শাহাদাৎ হোসেন, মিজানুর রহমান মিজান, হাজ্বী মোঃ শাহীন, নাসিরউদ্দিন নাসির, ডিএইচ বাবুল, যুগ্ম সম্পাদক মোঃ আব্দুল হাই, দেলোয়ার হোসেন দেলু, সাংগঠনিক সম্পাদক খোরশেদ আলম টুটুল, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ইকবাল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক রকিবুল ইসলাম রকি, মোঃ জানে আলম সহ জাসাস মহানগর শাখার বিভিন্ন ইউনিটের নেতৃবৃন্দ।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ ন র য়ণগঞ জ র রহম ন
এছাড়াও পড়ুন:
বিএনপি কি জামায়াতকে চাপে রাখার কৌশলে
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে বিএনপি নেতারা জামায়াতে ইসলামীকে ছাড় দিচ্ছেন না। গত চার মাসে দল দুটির নেতাকর্মীর মধ্যে অন্তত তিন জায়গায় মারামারি হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় জামায়াতে ইসলামীর কর্মকাণ্ডে বাধা দেওয়ার জেরে বিএনপির সঙ্গে তাদের দূরত্ব ক্রমেই বাড়ছে। স্থানীয় নেতারা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে পাল্টাপাল্টি ‘আওয়ামী লীগের দোসর’ আখ্যা দিয়ে বাগযুদ্ধে জড়িয়ে পড়ছেন। স্থানীয় লোকজন মনে করেন, আগামী নির্বাচন সামনে রেখে জামায়াতকে চাপে রাখতেই বিএনপি এমন কৌশল নিচ্ছে।
আড়াইহাজার উপজেলার দুটি পৌরসভা ও ১০টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত নারায়ণগঞ্জ-২ আসন। এখানে জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে গণসংযোগে ব্যস্ত সময় পার করছেন অধ্যাপক ইলিয়াস মোল্লা। শনিবার নেতাকর্মী নিয়ে তিনি মাহমুদপুর ইউনিয়নের গহরদী এলাকায় যান। সেখানে বাধা দেন স্থানীয় বিএনপি কর্মীরা। এ বিষয়ে তাঁর পক্ষে আড়াইহাজার থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন উপজেলা জামায়াতের (উত্তর) আমির মনিরুল ইসলাম।
জামায়াত নেতাদের অভিযোগ, শনিবার বিকেলে গহরদী বাদশা বাড়ি এলাকায় গণসংযোগ করছিলেন অধ্যাপক ইলিয়াস মোল্লা। এ সময় ৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি শাহজাহান শিকারির নেতৃত্বে ২০-২৫ জন বিএনপি নেতাকর্মী লাঠিসোটা নিয়ে পথসভায় বাধা দেন। দুই পক্ষের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে তর্কাতর্কি হলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। হামলায় আহত হন ৮ নম্বর ওয়ার্ডের জামায়াতের সভাপতি মাহবুবুর রহমান, দলের কর্মী আসাদুল্যাহ, কাউসার মিয়া, আলাউদ্দিন মিয়া, ওসমান গণি, নুরু মিয়া ও আলাউদ্দিন মিয়া। মাহবুবুর রহমান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন। অন্যরা প্রাথমিক চিকিৎসা নেন।
গত ১৭ মার্চ একই ইউনিয়নের কল্যান্দী মোল্লাপাড়া জামে মসজিদের সামনে জামায়াত আয়োজিত ইফতার মাহফিল বিএনপি কর্মীদের হামলায় পণ্ড হয়ে যায়। তখন জামায়াত নেতা মনিরুল ইসলাম অভিযোগ করেছিলেন, ইফতারের ৪০ মিনিট আগে মাহমুদপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল বাশারের নেতৃত্বে তাঁর ১০-১৫ জন অনুসারী ইফতার মাহফিলে বাধা দেন। তারা
প্যান্ডেল খুলে নিতে বললে আতঙ্কিত হয়ে জামায়াত কর্মীরা সরে যান।
এ দুই ঘটনার বিষয়ে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মাসুম শিকারি বলেন, ‘আড়াইহাজারে জামায়াতের এমন কোনো সাংগঠনিক কাঠামো গড়ে উঠেনি, তাদের নিয়ে আলোচনা করতে হবে। ইফতার মাহফিল বা গণসংযোগে বাধা দেওয়ার অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। নিজেরা আলোচনায় আসার জন্য তারা বিএনপিকে দোষারোপ করছে।’
তিনি অভিযোগ করেন, জামায়াতের কার্যক্রমে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা অংশ নিচ্ছেন। এরাই অতীতে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মী ও নিরীহ মানুষদের ওপর হামলা ও নির্যাতন করেছিল। চিহ্নিত এসব আওয়ামী দোসরদের জামায়াতের কর্মসূচিতে দেখে স্থানীয় লোকজনের তোপে পড়ে দলটি। এর সঙ্গে বিএনপির কোনো সম্পর্ক নেই বলেও মন্তব্য করেন।
জামায়াত নেতাদের অভিযোগ, ৭ ফেব্রুয়ারি দলীয় আমির ডা. শফিকুর রহমান নারায়ণগঞ্জ আসেন। এ বিষয়ে ৪ ফেব্রুয়ারি রাতে উপজেলার সাতগ্রাম ইউনিয়নের টেকপাড়ায় একটি প্রস্তুতি সভা হয়। সেখান থেকে ফেরার পথে ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক মোল্লার নেতৃত্বে তাদের অপদস্থ করা হয়। হামলায় অন্তত সাতজন কর্মী আহত হন। এক পর্যায়ে বিএনপির ওই নেতা এলাকায় সব কর্মসূচি পালনে জামায়াত কর্মীদের নিষেধ করেন।
সর্বশেষ হামলার পর জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে শনিবার রাতে এক বিবৃতি দেওয়া হয়। দলের নারায়ণগঞ্জ জেলা আমির মুহাম্মদ মমিনুল হক সরকার ও সেক্রেটারি মুহাম্মদ হাফিজুর
রহমানের বিবৃতিতে দলের গণসংযোগে হামলার নিন্দা জানানো হয়েছে।
এসব বিষয়ে জামায়াত নেতা অধ্যাপক ইলিয়াস মোল্লা বলেন, বিনা উস্কানিতে তাদের নেতাকর্মীর ওপর হামলা হচ্ছে। এ বিষয়ে বিএনপির শীর্ষ
নেতারা কী অবস্থান নিচ্ছেন, তা দেখছেন তারা। ঘটনাগুলোর ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের কাছে দাবি জানান।
উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জুয়েল আহম্মেদের ভাষ্য, ‘দলীয় কার্যক্রম পরিচালনা করতে গিয়ে জামায়াত নেতাকর্মীর ওপর বিএনপির নেতাকর্মীর হামলার অভিযোগ পুরোপুরি ঠিক নয়। আমি যতদূর জেনেছি, তাদের দলের নেতাকর্মীর সঙ্গে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের কর্মীরা অংশ নিচ্ছে। ফলে জামায়াতকে নিয়ে স্থানীয় লোকজনের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে। আবার অনেক ক্ষেত্রে জামায়াতের স্থানীয় নেতারা ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বের জেরে তর্কাতর্কিতে জড়িয়ে পড়ছেন।’ তিনি বলেন, এরপরও যদি দলের কোনো নেতাকর্মী জামায়াতের কর্মসূচিতে অপ্রীতিকর কিছু ঘটান, তাহলে খোঁজখবর নিয়ে দোষীদের বিরুদ্ধে দলীয়ভাবে ব্যবস্থা নেবেন।