মাদারীপুরের আলোচিত মাদ্রাসাছাত্রী দীপ্তি হত্যা মামলার রায় আজ মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) ঘোষণা করা হবে। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল, মাদারীপুরের বিচারক এই রায় ঘোষণা করবেন। 

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অ্যাডভোকেট শরীফ সাইফুল কবীর। তিনি জানান, দীর্ঘ ছয় বছর বিচারিক কার্যক্রম শেষে আজ এই বহুল আলোচিত মামলার রায় ঘোষণা করা হবে।

২০১৯ সালের জুলাই মাসে মাদারীপুর শহরের পূর্ব খাগদী এলাকার এক মাদ্রাসাছাত্রী দীপ্তিকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়। এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডে জেলা জুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। ঘটনার পর দীপ্তির বাবা মাদারীপুর সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর মামলাটির তদন্তে নামে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)-৮।

র‌্যাবের তদন্তে উঠে আসে- ২০১৯ সালের ১৩ জুলাই পূর্ব খাগদী এলাকার একটি পরিত্যক্ত পুকুর থেকে অজ্ঞাত এক কিশোরীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। স্থানীয়দের সহায়তায় পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে মাদারীপুর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। পরদিন নিহতের বাবা মরদেহ শনাক্ত করে নিশ্চিত করেন যে, এটি তার মেয়ে দীপ্তির মরদেহ।

এরপর র‌্যাব তদন্ত শুরু করে। একই বছরের ১৮ জুলাই ঘটনাস্থল তল্লাশি চালিয়ে র‌্যাব সদস্যরা একটি ব্যাগ উদ্ধার করে, যেখানে দীপ্তির পোশাক পাওয়া যায়। এই সূত্র ধরে তদন্তকারীরা সন্দেহভাজনদের তালিকা তৈরি করেন। অবশেষে ইজিবাইক চালক মো.

সাজ্জাদ হোসেন খানকে সন্দেহ করে র‌্যাব।

তদন্তকালে র‌্যাব-৮ অনুসন্ধানে জানতে পারে সাজ্জাদ হোসেনের বিরুদ্ধে আগেও গুরুতর অপরাধের রেকর্ড ছিল। তিনি ১৯৯২ সালে শিশু হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন কারাভোগের পর ২০১১ সালে মুক্তি পান। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য র‌্যাব হেফাজতে নিলে তিনি দীপ্তিকে ধর্ষণ ও হত্যার কথা স্বীকার করেন।

স্বীকারোক্তিতে সাজ্জাদ জানান, ২০১৯ সালের ১১ জুলাই প্রচণ্ড বৃষ্টির দিনে দীপ্তি তার ইজিবাইকে ওঠেন চাচার বাসায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে। ওই সময় অন্য কোনো যাত্রী না থাকায় সাজ্জাদ জোরপূর্বক দীপ্তিকে নিজের বাড়িতে নিয়ে যায় এবং সেখানে ধর্ষণের পর তাকে হত্যা করে। পরে মরদেহ বিদ্যুতের তার দিয়ে বেঁধে কয়েকটি ইটসহ পরিত্যক্ত পুকুরে ফেলে দেয়। দুই দিন পর লাশটি ভেসে উঠলে হত্যার রহস্য উন্মোচিত হয়।

ঘটনাটি প্রকাশের পর স্থানীয় এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয় এবং দ্রুত বিচারের দাবি ওঠে। অবশেষে দীর্ঘ সাক্ষ্যগ্রহণ, তদন্ত এবং শুনানি শেষে আজ মঙ্গলবার মাদারীপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেছে।

নিহত দীপ্তির পরিবার জানিয়েছে, তারা ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করছেন এবং আদালতের রায়ে যেন দোষী ব্যক্তির সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত হয়- সেই আহ্বান জানিয়েছেন তারা।

নিহত দীপ্তি (১৫) মাদারীপুর সদর উপজেলার জনকনা গ্রামের মুজিবের ফকিরের মেয়ে ছিল। সে বলাইচর শামসুন্নাহার দাখিল বালিকা মাদ্রাসার দশম শ্রেণিতে পড়তো।

ঢাকা/বেলাল/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর মরদ হ তদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

কৃত্রিম হাত খুলে যাওয়া আতিকুলের বাসায় নাহিদ ইসলাম

রাজধানীর জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় আহত জুলাই যোদ্ধা আতিকুল ইসলামের (আতিকুল গাজী) সঙ্গে দেখা করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। এ সময় তিনি আতিকুলের স্বাস্থ্যের সার্বিক খোঁজখবর নেন।

শনিবার রাত নয়টার দিকে উত্তরার আজমপুরে আতিকুলের বাসায় যান নাহিদ ইসলাম। এনসিপির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

গত বছরের জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে পুলিশের গুলিতে গুরুতর আহত হওয়ার পর ডান হাত হারান আতিকুল ইসলাম। এরপর তিনি কৃত্রিম হাত লাগিয়েছিলেন। গতকাল শুক্রবার সংসদ ভবনের সামনে জুলাই যোদ্ধা ও পুলিশের সংঘর্ষের সময় আবারও আহত হন আতিকুল। এ সময় তাঁর কৃত্রিম হাত খুলে যায়।

এর আগে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে নিজেদের ‘জুলাই শহীদ পরিবার ও আহত যোদ্ধা’ হিসেবে পরিচয় দিয়ে সংসদ ভবনের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন শতাধিক ব্যক্তি। তাঁদের একজন আতিকুল ইসলাম। জুলাই আন্দোলনে অবদানের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি, আইনি সুরক্ষা, পুনর্বাসন বাস্তবায়নের দাবি ছিল তাদের। তাঁদের দাবি মেনে নেওয়া না হলেও ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’ স্বাক্ষর হতে দেবেন না বলেও ঘোষণা দিয়েছিলেন তাঁরা।

বিক্ষোভকারীরা শুক্রবার সকালে প্রাচীর টপকে জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের মঞ্চের সামনে অবস্থান নেন এবং সেখানেই বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। পুলিশ কর্মকর্তা ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্যরা অনুরোধ করলেও তাঁরা সরছিলেন না। পরে একপর্যায়ে দুপুরের দিকে পুলিশ জোর করে তাঁদের তুলে দেয়।

পরে বিক্ষোভকারীরা মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান; পুলিশের দিকে ঢিল ছোড়েন, ভাঙচুর করেন পুলিশের বাসসহ বেশ কয়েকটি গাড়ি। আগুন দেন সড়কে। এরপর পুলিশ আন্দোলনকারীদের লাঠিপেটা করে। এ ছাড়া পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।

এ ঘটনায় আতিকুল ইসলামসহ বেশ কয়েকজন আহত হন। তাঁর কৃত্রিম হাত খুলে যায়। আহত হওয়ার পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

আরও পড়ুন‘জুলাই যোদ্ধাদের’ সরিয়ে দিল পুলিশ, লাঠিপেটা, সংঘর্ষ, ভাঙচুর, আগুন ১৭ অক্টোবর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নিয়োগ ও পদোন্নতি দেওয়ার কাজে নিয়োজিত সরকারি কর্মচারীদের সম্মানী বাড়ল
  • ক্যাসিনো-কাণ্ডে আলোচিত সেলিম প্রধানের জামিন
  • শান মাসুদের ব্যাটে প্রথম দিন এগিয়ে পাকিস্তান
  • জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হত্যা: শোক ঘোষণা, পরীক্ষা স্থগিত
  • মান্ধানা সেঞ্চুরি পাননি, ভারতও জেতেনি, ৪ রানের জয়ে ইংল্যান্ড সেমিফাইনালে
  • সৈয়দ আব্দুল হাদীর জীবনের গান
  • ২২৩ দিন পর ভারতের জার্সিতে ফিরে ০ রানে আউট কোহলি
  • ওমান থেকে ফিরল ৭ প্রবাসীর মরদেহ, আজ জানাজা
  • কৃত্রিম হাত খুলে যাওয়া আতিকুলের বাসায় নাহিদ ইসলাম