চোখের চিকিৎসা পেলেন আন্দোলনে আহত ১৯৪ জন
Published: 1st, February 2025 GMT
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গুরুতর আহত ১৯৪ জনের চোখের চিকিৎসা দিয়েছে সিঙ্গাপুরের পাঁচজনের চক্ষু বিশেষজ্ঞ একটি চিকিৎসক দল। দুই দিনের কার্যক্রমের প্রথমদিন শনিবার তারা জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল (এনআইওএন্ডএইচ) এবং বাংলাদেশ আই হাসপাতাল ঘুরে এসব রোগী দেখেন।
আহতের চোখের পরীক্ষা-নিরীক্ষা পর্যালোচনা করে সার্জারি, সিলিকন অয়েল পরিবর্তনসহ নানা নির্দেশনা দেন। এ সময় ভবিষ্যতের চিকিৎসা এবং পুনর্বাসন প্রোটোকল সম্পর্কে পরামর্শ দেন।
দ্বিতীয় দিন রোববার তারা এই দুই হাসপাতালে আর ও রোগী দেখবেন এবং সোমবার রাতে বাংলাদেশ ত্যাগ করবেন।
এই দলের সদস্যরা হলেন- মাউন্ট এলিজাবেথ নোভেনা হাসপাতালের চক্ষু ও কর্নিয়া সার্জারির প্রধান ডোনাল্ড ট্যান, ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি হাসপাতালের অফথালমোলোজির ক্লিনিক্যাল ডিরেক্টর ব্লাঞ্চ লিম, সিঙ্গাপুর ন্যাশনাল আই সেন্টারের সহযোগী অধ্যাপক এবং রেটিনা সার্জন রোনাল্ড ইয়োহ, মাউন্ট এলিজাবেথ নোভেনা হাসপাতালের সিনিয়র কনসালট্যান্ট এবং রেটিনা বিশেষজ্ঞ নিকোল ট্যান এবং সিঙ্গাপুর ন্যাশনাল আই সেন্টারের কনসালট্যান্ট চক্ষু বিশেষজ্ঞ রুবেন ফু।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়, বুয়েট আমরা ৯২ ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ আই হাসপাতাল, জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল এবং অরবিস ইন্টারন্যাশনালের যৌথ উদ্যোগে সিঙ্গাপুরের চক্ষু বিশেষজ্ঞদের বাংলাদেশে আনা হয়েছে।
চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক খায়ের আহমেদ চৌধুরী বলেন, ঘণ্টায় ১৩৭ জন আহতদের চোখের অবস্থা নানাভাবে পর্যবেক্ষণ করেন। এ সময় রোগীদের পরবর্তীতে করণীয় বিষয়েও নির্দেশনা দেন।
তিনি বলেন, যদি তাদের (রোগীদের) আরও চিকিৎসার প্রয়োজন হয়, তাহলে চিকিৎসকদের আরেকটি দল আসবে। যদি কোনো রোগীর বিদেশে চিকিৎসার প্রয়োজন হয়, তাহলে তারা সে পরামর্শও দেবেন।
চিকিৎসক দল চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট থেকে বিকেলে বাংলাদেশ আই হাসপাতাল যান। সেখানেও ৫৭ আহতের চোখের চিকিৎসা দেন।
বাংলাদেশ আই হাসপাতালের চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডা.
জুলাই আন্দোলনে চোখে আঘাতপ্রাপ্তদের চিকিৎসার জন্য বিদেশ থেকে আসা এটি চতুর্থ চক্ষু বিশেষজ্ঞ দল। এর আগে একটি চীনা, একটি নেপালি এবং একটি ফরাসি দল তাদের চিকিৎসার জন্য বাংলাদেশে এসেছিল।
চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আন্দোলনের সময় চোখে আঘাতপ্রাপ্ত কয়েকশ’ রোগী এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। তাদের মধ্যে চারশ’ জনেরও বেশি এক চোখে এবং ৫৫ জন উভয় চোখে আঘাত পেয়েছেন। আহতদের মধ্যে নয়জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো হয়েছে।
আহতদের চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের দেওয়া চিকিৎসায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন ডা. রোনাল্ড ইয়োহ। তিনি বলেন, আন্দোলনের সময় শত শত মানুষের চোখের আঘাত বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর বিশাল চাপ সৃষ্টি করেছিল। কিন্তু তারা (চক্ষু হাসপাতালগুলো) অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে রোগীদের চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা করেছে এবং তাদের দেওয়া চিকিৎসা দেখে আমরা মুগ্ধ হয়েছি।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
সিদ্ধিরগঞ্জে জমি দখলকে কেন্দ্র করে হামলা, আহত ৪
সিদ্ধিরগঞ্জে নাসিক ৪ নং ওয়ার্ড সিদ্ধিরগঞ্জ হাউজিং এলাকায় জমি দখলকে কেন্দ্র করে হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলায় অন্তত চারজন আহত হয়েছে। আহতদের এলাকাবাসী উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ খানপুর হসপিটালে নিয়ে যায়। আহতরা হলেন, আব্দুল সোবহান (৬২), আব্দুল আজিজ (৪৫),রবিন (৩৮) ও মুক্তার হোসেন।
সোমবার সন্ধ্যায় সিদ্ধিরগঞ্জ হাউজিং এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। উক্ত মারামারির ঘটনায় মুক্তার হোসেন বাদী হয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগের ভিত্তিতে জানা যায়, সিদ্ধিরগঞ্জ আজিবপুর এলাকার বাসিন্দা বিবাদী আহমাদুল্লাহ (৫০), মোহাম্মাদ হোসেন (৪৫), সফর আলী (৪৫), জাফর হোসেন (৫০) সর্ব পিতা মৃত মমির আলী, সাইফুল ইসলাম (২৬), ফয়সাল হোসেন (২৪) উভয় পিতা মোহাম্মাদ উল্যাহ, রব কাজির ছেলে শরিফুল ইসলাম (২৮), কামাল হোসেন সহ অজ্ঞাত আরো ২০ থেকে ৩০ জন নুর বানু বেগম (৬৫) এর সিদ্ধিরগঞ্জ হাউজিং ছাপাখানা মোড়ে ক্রয়কৃত ৫ শতাংশ জমি দখল করতে যায়।
মানুষের মুখে দখলের কথা শুনে নুর বানু বেগমের ছেলে মুক্তার হোসেন উক্ত জমির সামনে গেলে উক্ত বিবাদীরা মুক্তার কে দেখে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে। মুক্তার হোসেন গালিগালাজ করতে নিষেধ করলে উক্ত বিবাদীরা দেশীয় অস্ত্র এসএসের পাইপ দিয়ে মুক্তারকে এলোপাথাড়ি মারধর শুরু করে।
মুক্তার কে মারধর করছে এমন খবর পেয়ে মুক্তারের চাচাতো ভাইরা ঘটনাস্থলে আসলে তাদেরকেও মারধর করে গুরুতর আহত করে উক্ত বিবাদী গং। তাদের ডাক চিৎকারে এলাকাবাসী এগিয়ে আসলে বিবাদীগণ পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় বাদীদেরকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে যান।
এলাকাবাসী আহতদের উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ খানপুর হসপিটালে নিয়ে যান। চিকিৎসা শেষে মুক্তার হোসেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় এসে বিবাদীদের নাম উল্লেখ করে একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
বাদী মুক্তার হোসেন জানান, আমার মা নুর বানু বেগম সিদ্ধিরগঞ্জ ছাপাখানা মোড়ে ৫ শতাংশ জমি ক্রয় করেন।আমার মায়ের নামে নামজারি খাজনা সহ যাবতীয় কাগজপত্র রয়েছে। উক্ত বিবাদী গং দীর্ঘদিন যাবত এই জায়গাটি দখল করার পায়তারা করছে।
বিবাদীরা সোমবারে বিকালে আমার মায়ের জমি দখল করতে আসলে আমরা বাধা প্রদান করি। এক পর্যায়ে বিবাদীরা দেশী অস্ত্র নিয়ে আমাদের উপরে হামলা চালিয়ে গুরুতর আহত করেছে।
এ ঘটনায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ করেছি। আমি উক্ত বিবাদীগণের কঠিন শাস্তি কামনা করছি প্রশাসনের কাছে।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার (উপ- পরিদর্শক) এসআই সালেকুজ্জামান বলেন, মারামারির ঘটনায় একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।