নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা করবেন না, পিঠের চামড়া থাকবে না : সাখাওয়াত
Published: 4th, February 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান বলেছেন, গত ১৫ বছর পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের ইশারায় স্বৈরাচারী হাসিনা সরকার বাংলাদেশের মানুষের উপর যে অত্যাচারের স্টিম রোলার চালিয়েছে তা বর্ণনা করার ভাষা আমাদের জানা নেই।
তখন যারা বাংলাদেশকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে চেয়েছিলো তাদের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার গণ অভ্যুত্থানে স্বৈরাচারের পতন ঘটে এবং জনগণের রাজত্ব কায়েম হয়েছে। সেই জনগণের রাজত্বে স্বৈরাচারের কোনো স্থান নেই। সেই জনগণের রাজত্বে সাম্রাজ্যবাদী দোসরদের কোনো স্থান নেই।
ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের নৈরাজ্য প্রতিরোধে ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে মহানগর বিএনপি আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল পূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য প্রদানকালে তিনি এসব কথা বলেন।
মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহবায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান এবং সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপুর নেতৃত্বে শহরের বাস টার্মিনাল এলাকা থেকে এই বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে মন্ডলপাড়া ব্রিজে এসে শেষ হয়।
এডভোকেট সাখাওয়াত বলেন, পৃথিবীর ইতিহাসে অনেক স্বৈরশাসকের পতন হয়েছে কিন্তু আওয়ামী লীগের মতো এমন বিপর্যয় আর দুর্যোগ কোথাও দেখা যায় নাই। আওয়ামী লীগ এমন একটা স্বৈরাচারী দল যে দলের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিবারের সকলকে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে হয়েছে।
শেখ হাসিনার মন্ত্রী পরিষদের সদস্যদের পালিয়ে যেতে হয়েছে, তাদের ৩০০ বিনা ভোটের এমপি, রাজনৈতিক নেতা থেকে শুরু করে সকল শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দ পালিয়ে গেছে। মানুষ কখন পালিয়ে যায়, যখন তারা অপরাধে লিপ্ত হয়। এই অপরাধীদের স্থান বাংলাদেশের মাটিতে হবে না।
তিনি বলেন, খুনি স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের মন্ত্রী এমপিদের হাতে এখনো ছাত্র জনতা হত্যার রক্ত লেগে আছে। এই গণহত্যার বিচার না হওয়া পর্যন্ত বাংলার মাটিতে আওয়ামী লীগকে আর রাজনীতি করতে দেয়া হবে না।
তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগের যেসব নিরিহ নেতাকর্মী এখনো দেশে রয়ে গেছেন তাদেরকে সাবধান করে দিয়ে বলতে চাই, পালিয়ে যাওয়ার নেতাদের উস্কানিতে কোনো প্রকার নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা করবেন না। তাহলে কিন্তু পিঠের চামড়া থাকবে না।
আপনার নেতা কিন্তু আপনাকে বাঁচাতে আসবে না। সুতরাং নিজের বিপদ ডেকে আনবেন না। আওয়ামী লীগের সকল নৈরাজ্য প্রতিরোধে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি এবং অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা সব সময় মাঠে থাকবে।
বিক্ষোভ মিছিলে আরো উপস্থিত ছিলেন মহানগর বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য হাবিবুর রহমান মিঠু, গোগনগর ইউনিয়ন বিএনপি'র সভাপতি আক্তার হোসেন, আলীরটেক ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুর রহমান, সিনিয়র সহ সভাপতি জুলহাস সরদার, মহানগর শ্রমিক দলের সদস্য সচিব ফারুক হোসেনসহ নেতৃবৃন্দ।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ব এনপ ন র য়ণগঞ জ আওয় ম ল গ ব এনপ র আওয় ম সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
বিচার, সংস্কার ছাড়া নির্বাচন মানব না
শহীদ আবরার ফাহাদের দেখানো পথে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) রাজনীতি করছে বলে জানিয়েছেন দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, আমরা শহীদ আবরার ফাহাদের উত্তরসূরি। তাঁর দেখানো ভারতীয় আধিপত্যবাদ ও আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আমরা বাংলাদেশপন্থি রাজনীতি করছি।
‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’র অষ্টম দিন গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে কুষ্টিয়া শহরের পাঁচরাস্তার মোড়ে পথসভায় এসব কথা বলেন নাহিদ ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘আমরা শহীদ আবরার ফাহাদের মাটিতে দাঁড়িয়ে রয়েছি, আমরা শহীদ ইয়ামিনের মাটিতে দাঁড়িয়ে রয়েছি। আমরা স্পষ্ট বলেছি, শহীদ আবরার থেকে শহীদ আবু সাঈদ, শহীদ ইয়ামিন পর্যন্ত বাংলাদেশের মানুষের যে আশা-আকাঙ্ক্ষা, আধিপত্য-আগ্রাসনবিরোধী আশা-আকাঙ্ক্ষা, সেটি ধারণ করেই আমরা এগিয়ে যাব।’
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘বিচার ও সংস্কার ছাড়া আমরা নির্বাচন মেনে নেব না। আগামীর বাংলাদেশে আধিপত্যবাদী শক্তি ঠেকাতে লড়াই-সংগ্রাম চলবে। আমরা দিল্লির দাসত্ব থেকে মুক্তি পেয়েছি। শহীদ আবরার আমাদের এই সাহস জুগিয়েছেন।’
কুষ্টিয়ার একটি রিসোর্টে সকালে অভ্যুত্থানে শহীদদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন এনসিপির নেতারা। পরে তাদের গাড়িবহর কুষ্টিয়া শহর থেকে শহীদ আবরার ফাহাদের গ্রামের বাড়ি কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের রায়ডাঙ্গা গ্রামে পৌঁছে। সেখানে আবরারের কবর জিয়ারত শেষে তাঁর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন নেতারা।
কুমারখালী প্রতিনিধি জানান, আবরার ফাহাদের কবর জিয়ারত শেষে নাহিদ ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার ও নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের পর ২০১৯ সালে ছাত্রলীগের হাতে আবরার ফাহাদ হত্যা বাংলাদেশের রাজনীতির মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল। ভারতীয় আধিপত্যবাদবিরোধী লড়াই নতুন করে শুরু হয়। সে পথ ধরেই জুলাই গণঅভ্যুত্থান হয়েছিল।
এ সময় এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, যুগ্ম আহ্বায়ক নুসরাত তাবাসসুম, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা, খুলনা বিভাগের সংগঠক নয়ন আহম্মেদ, শহীদ আবরার ফাহাদের বাবা বরকত উল্লাহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এর পর পদযাত্রা কুষ্টিয়া শহরে এসে বৈরী আবহাওয়ার কারণে এন এস রোডে সংক্ষিপ্ত পথসভা করে। সেখান থেকে পদযাত্রা মেহেরপুরের
উদ্দেশে রওনা হয়।
মেহেরপুর প্রতিনিধি জানান, জেলার গাংনীতে সন্ধ্যায় এক পথসভায় এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, হাইব্রিড নেতারা অন্যের ছেলের ভবিষ্যৎ নষ্ট করে বিদেশে নিজের সন্তানের ভবিষ্যৎ গড়েন। অন্যের সন্তানকে চামচা; নিজের ছেলেকে নেতা বানান।
উপস্থিত জনতার উদ্দেশে হাসনাত বলেন, ‘আপনারা কোনো মার্কা ও ব্যক্তির কাছে বিবেক বন্ধক দিয়েন না। যারা বাংলাদেশকে ধারণ করে, তাদের নেতা নির্বাচিত করবেন। নির্বাচনের সময় আমাদের দেশে এক শ্রেণির নেতা উৎপাদন হয়। ঢাকা থেকে বস্তায় বস্তায় টাকা নিয়ে এলাকায় ঢুকে আগের রাতে ওসি, এসপি ও পোলিং এজেন্টদের কিনে নেন। তারা আপনাদের এক দিন টাকা দেন আর গোলামি করান পাঁচ বছর।’
তিনি বলেন, ‘জনগণের প্রতি আমাদের অনুরোধ– বাংলাদেশকে আর অযোগ্য নেতা ও গম চোরের হাতে তুলে দিয়েন না। রাস্তার টাকা মেরে যারা হজ করতে চান, তাদের হাতে তুলে দিয়েন না।’
হাসনাত আবদুল্লাহ আরও বলেন, ‘জনগণ পাশে থাকলে দিল্লি পালাতে হয় না; লন্ডন থাকতে হয় না। জনগণ সঙ্গে থাকলে বাংলাদেশেই স্থান হয়। আমরা কোনো পিন্ডি, দিল্লি, লন্ডন কিংবা আমেরিকার ওপর নির্ভর করতে চাই না। আমাদের রাজনীতি কোনো ব্যবসায়ীর কাছে বর্গা দিইনি। জনগণের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে তাদের জন্যই আমরা রাজনীতি করব।’ পরে মেহেরপুর শহীদ সামসুজ্জোহা পার্ক ও মুজিবনগরে পথসভা হয়।