কিউবায় জন্ম নেওয়া ব্যবসায়ী মারিও সালসেদো ২৫ বছর ধরে জাহাজে চড়ে বেড়াচ্ছেন। সমুদ্রে ভেসে বেড়ানো তাঁর এতই পছন্দ যে তিনি এখন আর মাটিতে থাকতে পছন্দ করেন না।
এই ২৫ বছরে মাত্র কয়েক মাস তিনি বাধ্য হয়ে মাটিতে ছিলেন। সমুদ্রে ভেসে বেড়াতে বেড়াতে তাঁর শরীরে অদ্ভুত এক স্বাস্থ্য–সমস্যা দেখা দিয়েছে। তিনি এখন আর মাটিতে ঠিকমতো হাঁটতে পারেন না।
সম্প্রতি প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে সালসেদো বলেছেন, ‘আমি মাটিতে হাঁটার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছি। মাটিতে অনেক বেশি দুলতে থাকি, সোজা লাইনে হাঁটতে পারি না।’
জাহাজে থাকতেই তাঁর ভালো লাগে জানিয়ে এই ব্যবসায়ী আরও বলেন, ‘মাটিতে থাকার চেয়ে জাহাজে থাকাই আমার কাছে বেশি আরামের।’
জাহাজে পরিচিত ব্যক্তিদের কাছে সালসেদো এখন ‘সুপার মারিও’ নামে পরিচিত। কয়েক দিন আগে তিনি প্রমোদজাহাজ রয়্যাল ক্যারিবিয়ানে করে নিজের এক হাজারতম ভ্রমণ সেরে এসেছেন। গত ৫ জানুয়ারি ৩ হাজার ২৮৬ যাত্রী নিয়ে মায়ামি থেকে ১১ রাতের জন্য প্রমোদভ্রমণে বের হয় রয়্যাল ক্যারিবিয়ান। সেটি পানামা এবং দক্ষিণ ক্যারিবীয় অঞ্চলে সমুদ্রে ঘুরে বেড়িয়েছে।
সালসেদো বলেছেন, জাহাজে প্রমোদভ্রমণের জন্য তিনি প্রতিবছর প্রায় ১ লাখ ১ হাজার মার্কিন ডলার ব্যয় করেন। তিনি দিনে মাত্র পাঁচ ঘণ্টা কাজ করেন, বাকি সময় জাহাজে বিশ্রাম করেন বা আনন্দে মাতেন।
‘দ্য ফ্যামিলি ক্রুজ কম্পানিয়ন’–এর প্রতিষ্ঠাতা এবং সিইও এলিন ওয়ারেন ডেইলি মেইলকে সালসেদোরের মাটিতে হাঁটতে না পারার কারণ ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি বলেন, ‘সালসেদো এমডিডিএস সিনড্রোমে আক্রান্ত। আপনি যখন জাহাজে ভ্রমণে বের হবেন, তখন আপনার শরীর ও মন সমুদ্রে বসবাসের জন্য প্রস্তুত হবে। সে সময় অনেক অপ্রত্যাশিত জিনিস ঘটবে, বিশেষ করে শরীরের ভেতর।’
সেলসেদো ১৯৯৭ সালে প্রথম প্রমোদভ্রমণে যান। তার পর থেকেই তিনি সমুদ্রজীবনের প্রেমে পড়ে গেছেন। কোনো কিছু তাঁকে ভ্রমণে যাওয়া থেকে আটকাতে পারেনি। কারণ, প্রমোদজাহাজে তিনি যে আতিথেয়তা পান, তাতে তাঁর নিজেকে রাজা মনে হয়।
২০২০ সালে করোনা মহামারির কারণে বিশ্ব যখন স্তব্ধ হয়ে পড়েছিল, সে সময় ১৫ মাস সমুদ্রে যাওয়া থেকে বিরত থাকতে বাধ্য হয়েছিলেন সালসেদো।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ছয় গোলের থ্রিলারে জমজমাট ড্র বার্সেলোনা-ইন্টারের
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনাল মানেই উত্তেজনার পারদ চড়া—আর বার্সেলোনা ও ইন্টার মিলান মিলে সেটিকে নিয়ে গেল অন্য উচ্চতায়। কাতালানদের ঘরের মাঠ অলিম্পিক স্টেডিয়ামে বুধবার রাতে দর্শকরা উপভোগ করলেন এক দুর্দান্ত গোলবন্যার ম্যাচ। ম্যাচ শেষে ফল—৩-৩ গোলে ড্র।
মৌসুমের রেকর্ড ৫০ হাজার ৩১৪ দর্শকের সামনে ইউরোপীয় ফুটবলের এই মহারণে উভয় দলই তুলে ধরেছে আক্রমণাত্মক ফুটবল। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ সেমিফাইনালের ইতিহাসে ১৯৯৯ সালের পর এটিই প্রথম ম্যাচ যেখানে ছয়টি গোল হয়েছে এবং শেষ হয়েছে ড্রয়ে।
ম্যাচ শুরু হতে না হতেই চমকে দেয় ইন্টার মিলান। ম্যাচের মাত্র প্রথম মিনিটেই ডেনজেল ডামফ্রিজের ব্যাকহিল গোল দলকে এগিয়ে দেন মার্কাস থুরাম। এরপর ২১ মিনিটে আবারও দিমারকোর কর্নার থেকে ফ্রান্সেসকো আকেরবির সহায়তায় শ্বাসরুদ্ধকর অ্যাক্রোব্যাটিকে ব্যবধান বাড়ান ডামফ্রিজ।
তবে ঘুরে দাঁড়াতে দেরি করেনি বার্সা। দুই মিনিট পরই ইয়ামাল ডান দিক থেকে একক নৈপুণ্যে দুর্দান্ত গোল করে ব্যবধান কমান। প্রথমার্ধ শেষের আগে পেদ্রির ফ্লিকে রাফিনিয়ার নিয়ন্ত্রণ এবং তাতে ফেরান তোরেসের শটে গোল করে ২-২ সমতায় ফেরে স্বাগতিকরা।
দ্বিতীয়ার্ধে লাউতারো মার্টিনেজের ইনজুরির পর মাঠে নামেন মেহেদি তারেমি। ৬০ মিনিটে কর্নার থেকে হেড করে নিজের দ্বিতীয় গোল করেন ডামফ্রিজ। কিন্তু দ্রুতই গোল শোধ করে বার্সা—ছোট কর্নার থেকে রাফিনিয়ার শট লাগে পোস্টে, সেখান থেকে গোলরক্ষক সোমারের পিঠে লেগে ঢুকে পড়ে জালে—ফলাফল ৩-৩। ৭৫ মিনিটে হেনরিখ মিখিতারিয়ান গোল করে ইন্টারকে আবারও এগিয়ে দিয়েছিলেন, কিন্তু ভিএআরের চোখে পড়ে সামান্য অফসাইড, বাতিল হয় সেই গোল।
এখন সবকিছু নির্ভর করছে দ্বিতীয় লেগের ম্যাচের ওপর, যা হবে ৬ মে, মঙ্গলবার, ইন্টারের ঘরের মাঠ জিউসেপ্পে মিয়াজ্জায়। ওই ম্যাচেই জানা যাবে ফাইনালে কারা প্যারিস সেইন্ট জার্মেই ও আর্সেনালের মধ্যকার বিজয়ীর মুখোমুখি হবে।