যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তাঁর গাজা নিয়ন্ত্রণের পরিকল্পনার অধীনে ফিলিস্তিনিদের উপত্যকাটিতে ফেরার কোনো অধিকার দেওয়া হবে না। আজ সোমবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন তিনি।

গাজা উপত্যকাটি যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পরিকল্পনার কথা কয়েক দিন ধরেই বলছেন ট্রাম্প। ওই পরিকল্পনা নাকচ করে দিয়েছে আরব দেশগুলো। আজ সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, তিনি এই উপত্যকার মালিকানা নিয়ে নেবেন। আর গাজার বাইরে ফিলিস্তিনিদের বসবাসের জন্য আলাদা ছয়টি জায়গা থাকবে।

সাক্ষাৎকারে ট্রাম্পকে প্রশ্ন করা হয়, গাজায় ফিলিস্তিনিরা ফেরার অধিকার পাবেন কি না। জবাবে তিনি বলেন, ‘না, তাঁরা পাবেন না। কারণ, তাঁদের আরও ভালো থাকার জায়গা পেতে যাচ্ছেন। অন্য ভাষায় বলতে গেলে, আমি তাঁদের জন্য একটি স্থায়ী জায়গা গড়ে তোলার কথা বলছি। কারণ, এখন যদি তাদের ফিরতে হয়, তাহলে কয়েক বছর লেগে যাবে.

..এটা (গাজা) বসবাসযোগ্য নয়।’

গাজা পরিকল্পনার কথা ট্রাম্প প্রথম সামনে আনেন গত মঙ্গলবার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে একটি যৌথ সংবাদ সম্মেলনের সময়। তিনি গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের মিসর ও জর্ডানে সরিয়ে নেওয়ার কথা বলেন। তবে ট্রাম্পের ওই পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করেছে দেশ দুটি।

সাক্ষাৎকারে ট্রাম্পের ভাষ্যমতে, গাজার ২০ লাখের বেশি ফিলিস্তিনির জন্য তিনি সুন্দর এলাকা গড়ে তুলবেন। গাজা থেকে কিছুটা দূরে এই এলাকাগুলো নিরাপদ হবে। এলাকাগুলো গড়ে তোলার সময় গাজার নিয়ন্ত্রণ নেবেন তিনি। ট্রাম্প বলেন, ‘ভবিষ্যতের জন্য এটিকে (গাজা) একটি রিয়েল এস্টেটের অগ্রগতি হিসেবে ভাবুন। এটি একটি সুন্দর জায়গা হবে। বেশি অর্থও খরচ হবে না।’

সমালোচনার মুখেও গাজার নিয়ন্ত্রণ নিতে ‘অনড়’ ট্রাম্পগাজাকে ‘বড় আবাসন এলাকা’ মনে করেন ডোনাল্ড ট্রাম্পসৌদি আরবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা নিয়ে নেতানিয়াহুর মন্তব্যের কড়া জবাব দিল রিয়াদ

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ

সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়। 

গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’ 

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।

টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন। 

এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’ 

সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।

সম্পর্কিত নিবন্ধ