প্রশাসন ও বিভিন্ন বাহিনীতে আয়নাঘরের কুশীলবেরা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছেন। তাঁদের গ্রেপ্তার করে দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে হবে। পাশাপাশি সারা দেশে থাকা আয়নাঘরগুলো খুঁজে বের করে তা প্রদর্শন করতে হবে।

গতকাল বুধবার খেলাফত মজলিশের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলটির নির্বাহী পরিষদের বৈঠকে দলটির নেতারা এসব কথা বলেন। আজ বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে দলটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে বৈঠকের সারসংক্ষেপ জানায়।

নির্বাহী পরিষদের সভার বরাত দিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অভ্যুত্থানের ছয় মাস পার হলেও অবশেষে আয়নাঘরে নির্যাতনের কিছু বীভৎস-রোমহর্ষ চিত্র জাতি দেখতে পেয়েছে। এর জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে সাধুবাদ জানায় দলটি। পাশাপাশি পতিত খুনি শেখ হাসিনা ও তাঁর দোসরেরা মানুষকে গুম করে কীভাবে নির্মম নির্যাতন চালাত, তা পৃথিবীর মানুষকে জানাতে দেশের অবশিষ্ট আয়নাঘরগুলো খুঁজে গণমাধ্যমে প্রদর্শনের আহ্বান জানায় দলটি। এমন ফ্যাসিস্ট শাসক বাংলাদেশে যাতে আর কোনো দিন প্রতিষ্ঠিত হতে না পারে, সে জন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে বলেন নেতারা।

ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার উসকানি এখনো বন্ধ না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন খেলাফত মজলিসের নেতারা। তাঁরা বলেন, ভারতের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে থেকে ফ্যাসিবাদী গোষ্ঠী দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য একের পর এক ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। যত দিন জুলাই গণহত্যার বিচার কার্যক্রম সম্পন্ন না হবে, তত দিন আওয়ামী লীগের কোনো তৎপরতা জনগণ সহ্য করবে না।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, হাজার হাজার নিরপরাধ ছাত্র-জনতাকে হত্যা, শত শত মানুষকে অন্ধ ও পঙ্গু করেও দাম্ভিকতা প্রদর্শন করে যাচ্ছে খুনিরা। এই অপশক্তি দেশকে অস্থিতিশীল করার আর কোনো ষড়যন্ত্র করলে তা মেনে নেওয়া হবে না। ফ্যাসিবাদবিরোধী ও স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের পক্ষে জাতীয় ঐক্যে গড়ে তোলার কথাও বলেছেন দলটির নেতারা।

নির্বাহী পরিষদের বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন খেলাফত মজলিশের আমির মাওলানা আবদুল বাছিত আজাদ। দলের মহাসচিব আহমদ আবদুল কাদেরের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমির মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, অধ্যাপক আবদুল্লাহ ফরিদ, মাওলানা সৈয়দ ফেরদাউস বিন ইসহাক, যুগ্ম মহাসচিব জাহাঙ্গীর হোসাইন, মুহাম্মদ মুনতাসির আলী ও মোস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

জেলা কৃষকদলের নেতাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন 

নারায়ণগঞ্জ জেলা জাতীয়তাবাদী কৃষকদলের আহ্বায়ক কমিটির নেতাদের বিরুদ্ধে একটি পক্ষের ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা অপপ্রচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন জেলা কৃষকদলের আহ্বায়ক ডা. শাহীন মিয়া।

মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে জেলা কৃষকদলের আহ্বায়ক ডা. শাহীন মিয়া আহ্বায়ক কমিটির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে নিয়ে এই সংবাদ সম্মেলন করেন।

এসময়ে উপস্থিত ছিলেন, জেলা কৃষকদলের সদস্য সচিব আলম মিয়া, যুগ্ম আহ্বায়ক জুয়েল আরমান, ফজলু মেম্বার, মনির মল্লিক, শাহাদাত হোসেন, ওবায়দুর রহমান, শাহ আল বেপারী, সেলিম হোসেন দিপু।

সংবাদ সম্মেলনে শাহীন মিয়া বলেন, কোন চাঁদাবাজ, দখলবাজ ও স্বৈরাচারের দোসর এদের বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র যেকোনো অঙ্গ সংগঠনের পদে থাকতে পারে না। নারায়ণগঞ্জ জেলা জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের সভাপতি হিসেবে আমার সংগঠনে যারা চাঁদাবাজ, দখলবাজ স্বৈরাচারের দোসর আমি তাদেরকে বহিষ্কার করেছি। 

আওয়ামীলীগের সাথে শাহীনের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ আনাদের ব্যাপারে পাল্টা তিনি বলেন, রূপগঞ্জ থানার সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলামকে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের দোসর, দলীয় নেতাকর্মীদের নির্যাতন ও সাংগঠনিক দূর্বলতার কারণে তাকে ৩০ নভেম্বর ২০২৩ সালে সভাপতি পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়। 

এছাড়াও বিএনপির অসহযোগ আন্দোলনে নজরুলের কোন প্রকার সম্পৃক্ততা ছিল না। সে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার শাসনামলে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম হত্যা মামলার আসামি রূপগঞ্জ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সালাউদ্দিনের যোগসাজসে রূপগঞ্জ ইউনিয়নের একাধিক মৌজার আবাদী জমিতে বালি ভরাট করে সাধারণ কৃষকের দুর্ভিক্ষের সৃষ্টি করেছিল। 

এছাড়াও অসহায় ও সাধারন মানুষের বসতবাড়ি সহ জবরদখল করে নেয় তারা। নজরুল দোসরদের আস্থাভাজন হওয়ার জন্য দলীয় নেতা-কর্মীদের উপর বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় নির্যাতন করেছিল। এভাবে বিগত ১৭ বছরে স্বৈরাচার সরকারের আস্থাভাজন হয়ে কোটি কোটি টাকা কামিয়েছেন এই নজরুল। সে হলো মৌসুমী পাখি। 

তিনি বলেন, ১৭ টি বছর জুলুম নির্যাতন সহ্য করে এই নারায়ণগঞ্জে কৃষক দলকে হাতের মুঠোয় রেখেছি আজ সেই কৃষক দলের ভাবমূতি ক্ষুন্ন করতে এই নজরুল স্বৈরাচারের সাথে হাত মিলিয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সংগঠনের মানহানি করেছে।

আমি এরই মিথ্যা সংবাদ সম্মেলনের প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং তার বিরুদ্ধে কৃষক দলের কেন্দ্রীয় পর্যায়ে থেকে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি। বিষয়টি আমি আমার হাইকমান্ডকে অবগত করেছি।

তিনি আরও বলেন, রূপগঞ্জ ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি সার্জন মোমেনকে চাঁদাবাজি, দখলবাজি ও দলীয় শৃংখল বঙ্গের দায়ে ১০ই এপ্রিল সভাপতি পদ থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়। সে বিগত সতেরো বছর নেতাকর্মীদের নির্যাতন করে নিজের স্বার্থ হাসিল করেছে। ৫ ই আগস্টের পর ৪০ বিঘা জমির উপর মাছের প্রজেক্ট দখল করে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা হাতিয়ে নেন মোমেন। 

স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সময় সে বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করেছেন তার নিজের জন্য। এখনো সে এলাকায় সাধারণ মানুষকে মামলার ভয় দেখিয়ে চাঁদাবাজি করছে এর যথেষ্ট প্রমাণ আমার কাছে এসেছে এবং অনেক সাধারণ মানুষ তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছে। যে সমস্ত মানুষ কোন দল করে না দল বুঝেনা। এ সমস্ত অভিযোগের কারণে তাকে তার পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গতকাল নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে নজরুলসহ কৃষকদলের বেশ কয়েকজন নেতা সংবাদ সম্মেলন করেন। এসময় শাহীনের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের লোকজনকে টাকার বিনিময়ে পুনর্বাসনসহ বেশ কিছু অভিযোগ  আনেন তারা।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জেলা কৃষকদলের নেতাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন